শ্রীরামকৃষ্ণ দক্ষিণেশ্বরে ও ভক্তগৃহে
ত্রয়োদশ পরিচ্ছেদ
১৮৮৪, ১৯শে সেপ্টেম্বর
ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ ও শ্রীযুক্ত রাধিকা গোস্বামী
পূর্বকথা—কেশব সেনের বাটীতে নিরাকারের ভাব—বিজয় গোস্বামীর সঙ্গে এঁড়েদর গদাধরের
পাঠবাড়িদর্শন—বিজয়ের চরিত্র
“আবার কেশব সেনের বাড়ি গিয়ে আর এক ভাব হল। ওরা নিরাকার নিরাকার করে;—তাই ভাবে বললুম, ‘মা এখানে আনিসনি, এরা তোর রূপ-টুপ মানে না’।”
সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে এই সকল কথা শুনিয়া গোস্বামী (Ramakrishna) চুপ করিয়া আছেন।
শ্রীরামকৃষ্ণ (সহাস্যে)—বিজয় এখন বেশ হয়েছে।
“হরি হরি বলতে বলতে মাটিতে পড়ে যায়!
“চারটে রাত পর্যন্ত কীর্তন, ধ্যান এই সব নিয়ে থাকে। এখন গেরুয়া পরে আছে। ঠাকুর-বিগ্রহ দেখলে একেবারে সাষ্টাঙ্গ!
“চৈতন্যদেবের পটের সম্মুখে আবার সাষ্টাঙ্গ!”
গোস্বামী (Kathamrita)—রাধাকৃষ্ণ মূর্তির সম্মুখে?
শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—সাষ্টাঙ্গ! আর আচারী খুব।
গোস্বামী—এখন সমাজে নিতে পারা যায়।
শ্রীরামকৃষ্ণ—সে লোকে কি বলবে, তা অত চায় না।
গোস্বামী—না, সমাজ তাহলে কৃতার্থ হয়—অমন লোককে পেলে।
শ্রীরামকৃষ্ণ—আমায় খুব মানে।
“তাকে পাওয়াই ভার। আজ ঢাকায় ডাক, কাল আর এক জায়গায় ডাক। সর্বদাই ব্যস্ত।
“তাদের সমাজে (সাধারণ ব্রাহ্মসমাজে) বড় গোল উঠেছে।”
গোস্বামী—আজ্ঞা, কেন?
শ্রীরামকৃষ্ণ—তাকে বলছে, ‘তুমি সাকারবাদীদের সঙ্গে মেশো!—তুমি পৌত্তলিক।’
“আর অতি উদার সরল। সরল না কলে ঈশ্বরের কৃপা হয় না।”
মুখুজ্জেদিগকে শিক্ষা—গৃহস্থ, “এগিয়ে পড়”—অভ্যাসযোগ
এইবার ঠাকুর (Kathamrita) মুখুজ্জেদের সঙ্গে কথা কহিতেছেন। জ্যেষ্ঠ মহেন্দ্র ব্যবসা করেন কাহারও চাকরি করেন না। কনিষ্ঠ প্রিয়নাথ ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। এখন কিছু সংস্থান করিয়াছেন। আর চাকরি করেন না। জ্যেষ্ঠের বয়স ৩৫/৩৬ হইবে। তাঁহাদের বাড়ি কেদেটি গ্রামে। কলিকাতা বাগবাজারের তাঁহাদের বসতবাটী আছে।
শ্রীরামকৃষ্ণ (সহাস্যে)—একটু উদ্দীপন হচ্চে বলে চুপ করে থেকো না। এগিয়ে পড়। চন্দন কাঠের পর আরও আছে—রূপার খনি, সোনার খনি!
প্রিয় (সহাস্যে)—আজ্ঞা, পায়ে বন্ধন—এগুতে দেয় না।
শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—পায়ে বন্ধন থাকলে কি হবে?—মন নিয়ে কথা।
আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির
আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”
আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”
Leave a Reply