রামের বাটীতে ভক্তসঙ্গে শ্রীরামকৃষ্ণ
দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ
১৮৮৪, ২৮শে সেপ্টেম্বর
ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ ভক্তসঙ্গে
কীর্তনান্তে ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna), বিজয় নরেন্দ্র ও অন্যান্য ভক্তেরা আসন গ্রহণ করিলেন। সকলের দৃষ্টি ঠাকুরের দিকে। সন্ধ্যার কিছু বিলম্ব আছে। ঠাকুর ভক্তদের সহিত কথা কহিতেচেন। তাঁহাদের কুশল প্রশ্ন করিতেছেন। কেদার অতি বিনীতভাবে হাতজোড় করিয়া অতি মৃদু ও মিষ্ট কথায় ঠাকুরের কাছে কি নিবেদন করিতেছেন। কাছে নরেন্দ্র, চুনি, সুরেন্দ্র, রাম, মাস্টার ও হরিশ।
কেদার (শ্রীরামকৃষ্ণের প্রতি, বিনীতভাবে)—মাথাঘোরাটা কিসে সেরে যাবে?
শ্রীরামকৃষ্ণ (সস্ন্নেহে)—ও হয়; আমার হয়েছিল! একটু একটু বাদামের তেল দিবেন। শুনেছি, দিলে সারে।
কেদার—যে আজ্ঞা (Kathamrita)।
শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) (চুনির প্রতি)—কিগো, তোমরা সব কেমন আছ?
চুনি—আজ্ঞা, এখন সব মঙ্গল। বৃন্দাবনে বলরামবাবু, রাখাল এঁরা সব ভাল আছেন।
শ্রীরামকৃষ্ণ—তুমি অত সন্দেশ কেন পাঠিয়েছ?
চুনি—আজ্ঞা, বৃন্দাবন থেকে এসেছি —
চুনিলাল বলরামের সঙ্গে শ্রীবৃন্দাবনে গিয়াছিলেন ও কয়মাস ছিলেন। ছুটি শেষ হইয়াছে, তাই কলিকাতায় সম্প্রতি ফিরিয়াছেন।
শ্রীরামকৃষ্ণ (হরিশের প্রতি)—তুই দুই-একদিন পরে যাস। অসুখ করেছে, আবার সেখানে পড়বি।
(নারাণের প্রতি, সস্নেহে)—‘বোস্ কাছে এসে বোস্! কাল যাস—গিয়ে সেখানে খাবি। (মাস্টারকে দেখাইয়া) এর সঙ্গে যাবি? (মাস্টারের প্রতি) কিগো?
মাস্টারের সেই দিনই ঠাকুরের সঙ্গে যাইবার ইচ্ছা। তাই চিন্তা করিতেছেন। সুরেন্দ্র অনেকক্ষণ ছিলেন, মাঝে একবার বাড়ি গিয়াছিলেন। বাড়ি হইতে আসিয়া ঠাকুরের কাছে দাঁড়াইলেন।
সুরেন্দ্র কারণ পান করেন। আগে বড় বাড়াবাড়ি ছিল। ঠাকুর সুরেন্দ্রের অবস্থা দেখিয়া চিন্তিত হইয়াছিলেন। একেবারে পানত্যাগ করিতে বলিলেন না। বলিলেন, সুরেন্দ্র! দেখ, যা খাবে, ঠাকুরকে নিবেদন করে দিবে। আর যেন মাথা টলে না ও পা টলে না। তাঁকে চিন্তা করতে করতে তোমার আর পান করতে ভাল লাগবে না। তিনি কারণানন্দদায়িনী। তাঁকে লাভ করলে সহজানন্দ (Kathamrita) হয়।
সুরেন্দ্র কাছে দাঁড়াইয়া আছেন। ঠাকুর (Ramakrishna) তাঁর দিকে দৃষ্টিপাত করিয়া বলিয়া উঠিলেন, তুমি কারণ খেয়েছ? বলিয়াই ভাবে আবিষ্ট।
আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”
আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির
আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”
আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”
Leave a Reply