Ramakrishna 310: “সকলেই নারায়ণ। সব যোনিই মাতৃযোনি, তখন বেশ্যা ও সতীলক্ষ্মীতে কোন প্রভেদ দেখি না”

ramakrishna-kathamrita-by-mahendranath

দক্ষিণেশ্বর-মন্দিরে ভক্তসঙ্গে শ্রীরামকৃষ্ণ     

দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ

১৮৮৫, ১লা মার্চ
ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ ও তাঁহার নরেন্দ্রকে সন্ন্যাসের উপদেশ

“একটি বাটিতে যদি রসুন গোলা যায়, রসুনের গন্ধ কি যায়? বাবুই গাছে কি আম হয়? হতে পারে সিদ্ধাই তেমন থাকলে, বাবুই গাছেও আম হয়। সে সিদ্ধাই কি সকলের হয় (Ramakrishna)?

“সংসারী লোকের অবসর কই? একজন একটি ভাগবতের পণ্ডিত চেয়েছিল। তার বন্ধু বললে, একটি উত্তম ভাগবতের পণ্ডিত আছে, কিন্তু তার একটু গোল আছে। তার নিজের অনেক চাষবাস দেখতে হয়। চারখানা লাঙল, আটটা হেলে গরু। সর্বদা তদারক করতে হয়; অবসর নাই। যার পণ্ডিতের দরকার সে বললে, আমার এমন ভাগবতের পণ্ডিতের দরকার নাই, যার অবসর নাই। লাঙল-হেলেগরু-ওয়ালা ভাগবত পণ্ডিত আমি খুঁজছি না। আমি এমন ভাগবত পণ্ডিত চাই যে আমাকে ভাগবত শুনাতে পারে (Kathamrita)।

“এক রাজা রোজ ভাগবত শুনত। পণ্ডিত পড়া শেষ হলে রাজাকে বলত, রাজা বুঝেছ? রাজাও রোজ বলে—আগে তুমি বোঝ! পণ্ডিত বাড়ি গিয়ে রোজ ভাবে—রাজা এমন কথা বলে কেন যে তুমি আগে বোঝ। লোকটা সাধন-ভজন করত—ক্রমে চৈতন্য হল। তখন দেখলে যে হরিপাদপদ্ম্মই সার, আর সব মিথ্যা। সংসারে বিরক্ত হয়ে বেরিয়ে এল। কেবল একজনকে পাঠালে রাজাকে বলতে যে—রাজা (Ramakrishna), এইবার বুঝেছি।

“তবে কি এদের ঘৃণা করি? না, ব্রহ্মজ্ঞান তখন আনি। তিনি সব হয়েছেন,—সকলেই নারায়ণ। সব যোনিই মাতৃযোনি, তখন বেশ্যা ও সতীলক্ষ্মীতে কোন প্রভেদ দেখি না।”

সব কলাইয়ের ডালের খদ্দের—রূপ ও ঐশ্বর্যের বশ

“কি বলব সব দেখছি কলাইয়ের ডালের খদ্দের। কামিনী-কাঞ্চন ছাড়তে চায় না। লোকে মেয়েমানুষের রূপে ভুলে যায়, টাকা ঐশ্বর্য দেখলে ভুলে যায়, কিন্তু ঈশ্বরের রূপদর্শন করলে ব্রহ্মপদ তুচ্ছ হয়।

“রাবণকে একজন বলেছিল (Kathamrita), তুমি সব রূপ ধরে সীতার কাছে যাও, রামরূপ ধর না কেন? রাবণ বললে, রামরূপ হৃদয়ে একবার দেখলে রম্ভা তিলোত্তমা এদের চিতার ভস্ম বলে বোধ হয়। ব্রহ্মপদ তুচ্ছ হয়, পরস্ত্রীর কথা তো দূরে থাক।

“সব কলাইয়ের ডালের খদ্দের। শুদ্ধ আধার না হলে ঈশ্বরে শুদ্ধাভক্তি হয় না–একলক্ষ্য হয় না, নানাদিকে মন থাকে।”

নেপালী মেয়ে, ঈশ্বরের দাসী—সংসারীর দাসত্ব 

(মনোমোহনের প্রতি)—“তুমি রাগই কর আর যাই কর—রাখালকে বললাম ঈশ্বরের জন্য গঙ্গায় ঝাঁপ দিয়ে মরেছিস এ-কথা বরং শুনব; তবু কারুর দাসত্ব করিস, এ-কথা যেন না শুনি।

“নেপালের একটি মেয়ে এসেছিল। বেশ এসরাজ বাজিয়ে গান করলে। হরিনাম গান। কেউ জিজ্ঞাসা করলে—‘তোমার বিবাহ হয়েছে?’ তা বললে (Kathamrita), ‘আবার কার দাসী হব? এক ভগবানের দাসী আমি।’

“কামিনী-কাঞ্চনের (Ramakrishna) ভিতের থেকে কি করে হবে? অনাসক্ত হওয়া বড় কঠিন। একদিকে মেগের দাস, একদিকে টাকার দাস, আর-একদিকে মনিবের দাস, তাদের চাকরি করতে হয়।

আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির

আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”

আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share