Ramakrishna 312: “বলিতে বলিতে ভাবপূর্ণ হইয়া উঠিলেন, করুণামাখা সস্নেহ দৃষ্টি, ভাবোন্মোত্ত হইয়া গান ধরিলেন”

https://madhyom.com/ramakrishna-kathamrita-by-mahendranath-gupta-310th-copy

দক্ষিণেশ্বর-মন্দিরে ভক্তসঙ্গে শ্রীরামকৃষ্ণ     

দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ

১৮৮৫, ১লা মার্চ
ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ ও তাঁহার নরেন্দ্রকে সন্ন্যাসের উপদেশ

ভক্তেরা একদৃষ্টে দেখিতেছেন। ঠাকুর (Ramakrishna) নিচেই মাদুরের উপর বসিয়া আছেন। কাছে মাস্টার, সম্মুখে নরেন্দ্র, চতুর্দিকে ভক্তগণ।

ঠাকুর একটু চুপ করিয়া নরেন্দ্রকে সস্নেহে দেখিতেছেন।

কিয়ৎক্ষণ পরে নরেন্দ্রকে বলিলেন, বাবা, কামিনী-কাঞ্চনত্যাগ না হলে হবে না। বলিতে বলিতে ভাবপূর্ণ হইয়া উঠিলেন। সেই করুণামাখা সস্নেহ দৃষ্টি, তাহার সঙ্গে ভাবোন্মোত্ত হইয়া গান ধরিলেন (Kathamrita):

কথা বলতে ডরাই, না বললেও ডরাই।
মনে সন্দ হয় পাছে তোমাধনে হারাই হারাই ॥
আমরা জানি যে মন-তোর, দিলাম তোকে সেই মন্তোর,
এখন মন তোর; আমরা যে মন্ত্রে বিপদেতে তরি তরাই ॥

শ্রীরামকৃষ্ণের (Ramakrishna) যেন ভয়, বুঝি নরেন্দ্র আর কাহারও হইল, আমার বুঝি হল না! নরেন্দ্র অশ্রুপূর্ণলোচনে চাহিয়া আছেন।

বাহিরের একটি ভক্ত ঠাকুরকে দর্শন করিতে আসিয়াছিলেন। তিনিও কাছে বসিয়া সমস্ত দেখিতেছিলেন ও শুনিতেছিলেন।

ভক্ত—মহাশয়, কামিনী-কাঞ্চন যদি ত্যাগ করতে হবে, তবে গৃহস্থ কি করবে?

শ্রীরামকৃষ্ণ—তা তুমি কর না! আমাদের অমনি একটা কথা হয়ে গেল (Kathamrita)।

গৃহস্থ ভক্তের প্রতি অভয়দান ও উত্তেজনা 

মহিমাচরণ চুপ করিয়া বসিয়া আছেন, মুখে কথাটি নাই।

শ্রীরামকৃষ্ণ (মহিমার প্রতি)—এগিয়ে পড়! আরও আগে যাও, চন্দনকাঠ পাবে, আরও আগে যাও, রূপার খনি পাবে; আরও এগিয়ে যাও সোনার খনি পাবে, আরও এগিয়ে যাও হীরে মাণিক পাবে। এগিয়ে পড়!

মহিমা—আজ্ঞে, টেনে রাখে যে—এগুতে দেয় না!

শ্রীরামকৃষ্ণ (সহাস্যে)—কেন, লাগাম কাট, তাঁর নাম গুণে কাট। ৺কালী নামেতে কালপাশ কাটে।

নরেন্দ্র পিতৃবিয়োগের পর সংসারে বড় কষ্ট পাইতেছেন। তাঁহার উপর অনেক তাল যাইতেছে। ঠাকুর মাঝে মাঝে নরেন্দ্রকে দেখিতেছেন। ঠাকুর বলিতেছেন, তুই কি চিকিৎসক হয়েছিস?

‘শতমারী ভবেদ্বৈদ্যঃ। সহস্রমারী চিকিৎসকঃ।’ (সকলের হাস্য)

ঠাকুর (Ramakrishna) কি বলিতেছেন (Kathamrita), নরেন্দ্রের এই বয়সে অনেক দেখাশুনা হইল—সুখ-দুঃখের সঙ্গে অনেক পরিচয় হইল।

নরেন্দ্র ঈষৎ হাসিয়া চুপ করিয়া রহিলেন।

 

আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

আরও পড়ুনঃ “আবার সেই সমাধি! আবার নিস্পন্দন দেহ, স্তিমিতি লোচন, দেহ স্থির

আরও পড়ুনঃ দেখিয়াই ঠাকুর উচ্চহাস্য করিয়া ছোকরাদের বলিয়া উঠিলেন, “ওই রে আবার এসেছে”

আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share