ত্রয়োদশ পরিচ্ছেদ
১৮৮৪, ৯ই নভেম্বর
ভক্তসঙ্গে সংকীর্তনানন্দে
ভক্ত সঙ্গে–ভক্তকথাপ্রসঙ্গে
মণি এবং গোপালের আর যাওয়া হইল না, তাঁহারা আজ রাত্রে থাকিবেন। তাঁহারা ও আরও ২/১ জন ভক্ত মেঝেতে বসিয়া আছেন। কিয়ৎক্ষণ পরে ঠাকুর শ্রীযুক্ত রাম (Ramakrishna) চক্রবর্তীকে বলিতেছেন, “রাম, এখানে যে আর-একখানি পাপোশ ছিল। কোথায় গেল?”
ঠাকুর (Ramakrishna) সমস্ত দিন অবসর পান নাই—একটু বিশ্রাম করিতে পান নাই। ভক্তদের ফেলিয়া কোথায় যাইবেন! এইবার একবার বর্হিদেশে যাইতেছেন। ঘরে ফিরিয়া আসিয়া দেখিলেন যে, মণি রামলালের নিকট গান লিখিয়া লইতেছেন (Kathamrita) —
“তার তারিণি!
এবার ত্বরিত করিয়ে তপন-তনয়-ত্রাসিত”—ইত্যাদি।
ঠাকুর মণিকে জিজ্ঞাসা করিতেছেন, “কি লিখছো?” গানের কথা শুনিয়া বলিলেন, “এ যে বড় গান।”
রাত্রে ঠাকুর একটু সুজির পায়েস ও একখানি কি দুখানি লুচি খান। ঠাকুর রামলালকে বলিতেছেন (Kathamrita), “সুজি কি আছে?”
গান এক লাইন দু’লাইন লিখিয়া মণি লেখা বন্ধ করিলেন।
ঠাকুর মেঝেতে আসনে বসিয়া সুজি খাইতেছেন।
ঠাকুর (Ramakrishna) আবার ছোট খাটটিতে বসিলেন। মাস্টার খাটের পার্শ্বস্থিত পাপোশের উপর বসিয়া ঠাকুরের সহিত কথা কহিতেছেন। ঠাকুর নারায়ণের কথা বলিতে বলিতে ভাবযুক্ত হইতেছেন।
শ্রীরামকৃষ্ণ—আজ নারায়ণকে দেখলুম।
মাস্টার—আজ্ঞা হাঁ, চোখ ভেজা। মুখ দেখে কান্না পেল।
শ্রীরামকৃষ্ণ—ওকে দেখলে যেন বাৎসল্য হয়। এখানে আসে বলে ওকে বাড়িতে মারে। ওর হয়ে বলে এমন কেউ নাই। ‘কুব্জা তোমায় কু বোঝায়। রাইপক্ষে বুঝায় এমন কেউ নাই।’
মাস্টার (সহাস্যে) — হরিপদর বাড়িতে বই রেখে পলায়ন।
শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna) —ওটা ভাল করে নাই।
ঠাকুর চুপ করিয়াছেন। কিয়ৎক্ষণ পরে কথা কহিতেছেন (Kathamrita)।
শ্রীরামকৃষ্ণ—দেখ, ওর খুব সত্তা। তা না হলে কীর্তন শুনতে শুনতে আমায় টানে! ঘরের ভিতর আমার আসতে হল। কীর্তন ফেলে আসা—এ কখনও হয় নাই।
Leave a Reply