দক্ষিণেশ্বরে ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ ও ‘দেবী চৌধুরাণী’ পাঠ
চর্তুথ পরিচ্ছেদ
১৮৮৪, ২৭শে ডিসেম্বর
পঞ্চবটীমূলে শ্রীরামকৃষ্ণ—অবতারের ‘অপরাধ’ নাই
নিত্যগোপাল সামনে উপবিষ্ট। সর্বদা ভাবস্থ, মুখে কথা নাই।
শ্রীরামকৃষ্ণ (সহাস্যে)—গোপাল! তুই কেবল চুপ করে থাকিস!
নিত্য (বালকের ন্যায়)—আমি—জানি—না।
শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—বুঝেছি কিছু বলিস না কেন। অপরাধ?
“বটে বটে। জয় বিজয় নারায়ণের দ্বারী, সনক সনাতনাদি ঋষিদের, ভিতরে যেতে বারণ করেছিল। সেই অপরাধে তিনবার এই সংসারে জন্মাতে হয়েছিল।
“শ্রীদাম গোলোকে বিরজার দ্বারী ছিলেন। শ্রীমতী কৃষ্ণকে (Ramakrishna) বিরজার মন্দিরে ধরবার জন্য তাঁর দ্বারে গিছলেন, আর ভিতরে ঢুকতে চেয়েছিলেন—শ্রীদাম (Kathamrita) ঢুকতে দেয় নাই। তাই শ্রীমতী শাপ দিলেন, তুই মর্ত্যে অসুর হয়ে জন্মাগে যা। শ্রীদামও শাপ দিছলো! (সকলের ঈষৎ হাস্য)
“কিন্তু একটি কথা আছে, ছেলে যদি বাপের হাত ধরে, তাহলে খানায় পড়লেও পড়তে পারে, কিন্তু বাপ যার হাত ধরে থাকে, তার ভয় কি!
“শ্রীদামের কথা ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণে আছে।”
কেদার (চাটুজ্যে) এখন ঢাকায় থাকেন, তিনি সরকারি কর্ম করেন। আগে কর্মস্থল কলিকাতায় ছিল, এখন ঢাকায়। তিনি ঠাকুরের পরমভক্ত। ঢাকায় অনেকগুলি ভক্তের সঙ্গ হইয়াছে। সেই সকল ভক্তেরা তাঁর কাছে সর্বদা আসেন ও উপদেশ গ্রহণ করেন। শুধু হাতে ভক্তদর্শনে আসতে নাই। অনেকে মিষ্টান্নাদি আনেন ও কেদারকে নিবেদন করেন।
সবরকম লোকের জন্য শ্রীরামকৃষ্ণের নানারকম “ভাব ও অবস্থা”
কেদার (অতি বিনীতভাবে)—তাদের জিনিস কি খাব?
শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—যদি ঈশ্বরে ভক্তি করে দেয়, তাহলে দোষ নাই। কামনা করে দিলে সে জিনিস ভাল নয়।
কেদার—আমি তাদের বলেছি, আমি নিশ্চিন্ত। আমি বলেছি (Kathamrita), যিনি আমায় কৃপা করেছেন, তিনি সব জানেন।
শ্রীরামকৃষ্ণ (সহাস্যে)—তা তো সত্য। এখানে সবরকম লোক আসে, তাই সবরকম ভাব দেখতে পায়।
কেদার—আমার নানা বিষয় জানা দরকার নাই।
Leave a Reply