Ramakrishna 83: “তোমরা খুব সেয়ানা, কেউ দশে আছো; কেউ ছয়ে আছো, কেউ পাঁচে আছো”

Ramakrishna_

শ্রীযুক্ত কেশবচন্দ্র সেনের সহিত ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের নৌকাবিহার, আনন্দ  কথোপকথন

পঞ্চম পরিচ্ছেদ

ত্রিভির্গুণয়ৈর্ভাবৈরেভিঃ সর্বমিদং জগৎ।

মোহিততং নাভিজানাতি মামেভ্যঃ পরমব্যয়ম্‌।।

(গীতা—৭১৩।)

তিনি (Ramakrishna) লীলাময়ী! এ-সংসার তাঁর লীলা। তিনি ইচ্ছাময়ী, আনন্দময়ী। লক্ষের মধ্যে একজনকে মুক্তি দেন।

ব্রাহ্মভক্ত—মহাশয়, তিনি তো মনে (Kathamrita) করলে সকলকে মুক্ত করতে পারেন। কেন তবে আমাদের সংসারে বদ্ধ করে রেখেছেন?

শ্রীরামকৃষ্ণ—তাঁর ইচ্ছা। তাঁর ইচ্ছা যে, তিনি এইসব নিয়ে খেলা করেন। বুড়ীকে আগে থাকতে ছুঁলে দৌড়াদৌড়ি করতে হয় না। সকলেই যদি ছুঁয়ে ফেলে, খেলা কেমন করে হয়? সকলেই ছুঁয়ে ফেললে বুড়ি অসন্তুষ্ট হয়। খেলা চললে বুড়ীর আহ্লাদ। তাই লক্ষের দুটো-একটা কাটে, হেসে দাও মা হাত-চাপড়ি। (সকলের আনন্দ)

তিনি মনকে আঁখি ঠেরে ইশারা করে বলে দিয়েছেন, যা এখন সংসার করগে যা। মনের কি দোষ? তিনি যদি আবার দয়া করে মনকে ফিরিয়ে দেন, তাহলে বিষয়বুদ্ধির হাত থেকে মুক্তি হয়। তখন আবার তাঁর পাদপদ্মে মন হয়।

ঠাকুর (Ramakrishna) সংসারীর ভাবে মার কাছে অভিমান করে গাইতেছেন (Kathamrita);

আমি ওই খেদ খেদ করি।

তুমি মাতা থাকতে আমার জাগা ঘরে চুরি।।

মনে করি তোমার নাম করি, কিন্তু সময়ে পাসরি।

আমি বুঝেছি জেনেছি, আশয় পেয়েছি এ-সব তোমারি চাতুরি।।

কিছু দিলে না, পেলে না, নিলে না, খেলে না, সে দোষ কি আমারি।

যদি দিতে পেতে, নিতে খেতে, দিতাম খাওয়াতাম তোমারি।।

যশ, অপজশ, সুরস, কুরস সকল রস তোমারি।

ওগো রসে থেকে রসভঙ্গ, কেন কর রসেশ্বরী।।

প্রসাদ বলে, মন দিয়েছ, মনেরি আঁখি ঠারি।

(ওমা) তোমার সৃষ্টি দৃষ্টি-পোড়া, মিষ্টি বলে ঘুরি।।

তাঁরই মায়াতে ভুলে মানুষ সংসারী হয়েছে। প্রসাদ বলে মন দিয়েছে, মনেরি আঁখি ঠারি।

কর্মযোগ সম্বন্ধে শিক্ষা—সংসার ও নিষ্কামকর্ম

ব্রাহ্মভক্ত—মহাশয়, সব ত্যাগ না করলে ঈশ্বরকে (Ramakrishna) পাওয়া যাবে না?

শ্রীরামকৃষ্ণ (সহাস্যে)—নাগো! তোমাদের সব ত্যাগ করতে হবে কেন? তোমার রসে-বসে বেশ আছ। সা-রে-মা-তে! (সকলের হাস্য) তোমরা বেশ আছ। নক্স খেলা জানো? আমি বেশি কাটিয়ে জ্বলে গেছি। তোমরা খুব সেয়ানা। কেউ দশে আছো; কেউ ছয়ে আছো, কেউ পাঁচে আছো। বেশি কাটাও নাই, তাই আমার মতো জ্বলে যাও নাই। খেলা চলছে—এ তো বেশ। (সকলের হাস্য)

আরও পড়ুনঃ “মাকড়সা ভিতর থেকে জাল বার করে, আবার নিজে সেই জালের উপর থাকে”

আরও পড়ুনঃ “বিবেক, বৈরাগ্যরূপ হলুদ মাখলে তারা আর তোমাকে ছোঁবে না”

আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?”

আরও পড়ুনঃ “পশ্চিমে বিবাহের সময় বরের হাতে ছুরি থাকে, বাংলাদেশে জাঁতি থাকে”

 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share