শ্রী রামকৃষ্ণ- সমাধির পরে অবতারাদির আমি আবার ফিরে আসে। বিদ্যার আমি, ভক্তের আমি, এই বিদ্যার আমি দিয়ে লোকশিক্ষা হয়। শংকরাচার্য বিদ্যার আমি রেখেছিল।
চৈতন্যদেব এই আমি দিয়ে ভক্তি আস্বাদন করতেন। ভক্তি ভক্ত নিয়ে থাকতেন। ঈশ্বরীয় কথা কইতেন। নাম সংকীর্তন করতেন।
আমি তো সহজে যায় না। তাই ভক্ত জাগ্রত স্বপ্ন- প্রভৃতি অবস্থা উড়িয়ে দেয় না। ভক্ত সব অবস্থায় লয়। সত্ত্ব রজ তমো- তিন গুণও লয়। ভক্ত দেখে তিনি চতুরবিংশতি তত্ত্ব হয়ে রয়েছেন। জীবজগৎ হয়ে রয়েছেন। আবার দেখে সাক্ষাৎ চিন্ময় রূপে তিনি দর্শন নেন।
ভক্ত বিদ্যা, মায়া আশ্রয় করে থাকে। সাধু সংঘ, তীর্থ, জ্ঞান, ভক্তি, বৈরাগ্য এইসব আশ্রয় করে থাকে। সে বলে যদি ‘আমি’ সহজে চলে না যায় তবে থাক শালা দাস হয়ে ভক্ত হয়ে।
ভক্তেরও একাকার জ্ঞান হয়। সেটা কি ঈশ্বর ছাড়া আর কিছুই নাই। স্বপ্নবৎ বলে না। তবে বলে তিনি এইসব হয়েছেন। মোমের বাগানে সবই মোম তবে নানা রূপ।
তবে পাকা ভক্তি হলে এরূপ বোধ হয়। অনেক পিত্ত জমলে নেবা লাগে। তখন দেখে যে সবই হলদে। শ্রীমতি শ্যামকে ভেবে ভেবে সমস্ত শ্যামময় দেখলে। আর নিজেকে শ্যামবোধ হল। পারার মধ্যে সীসা অনেকদিন থাকলে সেটাও পারা হয়ে যায়। কুকুরে পোকা ভেবে ভেবে আরশোলা নিশ্চল হয়ে যায়। নড়ে না শেষে কুকুরে পোকাই হয়ে যায়। ভক্ত তাকে ভেবে ভেবে অহমশূন্য হয়ে যায়। আবার দেখে তিনিই আমি। আমিই তিনি। আরশোলা যখন কুকুরে পোকা হয়ে যায়, তখন সব হয়ে গেল। তখনই মুক্তি।
Leave a Reply