তখন ঠাকুর আহার করার জন্য বৈঠকখানায় একটু বিশ্রাম নিচ্ছেন। মাঝে মাঝে থলি থেকে কিছু মসলা, কাবাব বা চিনি ইত্যাদি খাচ্ছেন। অল্পবয়স্ক ভক্তরা চারদিকে ঘিরে বসে আছেন।
শ্রীরামকৃষ্ণ (হাসতে হাসতে): “হে, তুমি যে এখন এলে! স্কুল নেই?”
মাস্টার: “স্কুল থেকে আসছি, এখন বিশেষ কাজ নেই।”
ভক্ত (হাসতে হাসতে): “মহাশয় স্কুল পালিয়ে এসেছেন!”
(সকলের হাস্য)
মাস্টার (হাসি): “হায়! কে যেন টেনে আনলে!”
ঠাকুর যেন কিছুটা চিন্তিত হয়ে উঠলেন। তারপর মাস্টারকে পাশে বসিয়ে কত কথা বললেন। তারপর বললেন,
“আমার গামছাটা একটু নিংড়ে দাও তো গো, আর জামাটা শুকোতে দাও। পাটা একটু কামড়াচ্ছে, একটু হাত বুলিয়ে দিতে পারো?”
মাস্টার সেবা করিতে জানেন না, তাই ঠাকুর নিজেই তাঁকে সেবা শেখাচ্ছেন। মাস্টার ব্যস্ত হয়ে একে একে সমস্ত কাজ করতে লাগলেন—তিনি ঠাকুরের পায়ে হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন, গামছা নিংড়াচ্ছেন, জামা শুকোতে দিচ্ছেন। এর মধ্যেই শ্রীরামকৃষ্ণ নানা কথা বলছেন, উপদেশ দিচ্ছেন।
ঠাকুর- “এই যে মাস্টার, আমার হ্যাঁগা অস্বস্তিকর যন্ত্রণা কদিন ধরে হচ্ছে। বল তো, কেন হচ্ছে? এখন আর কোনও ধাতব জিনিসে হাত দিতে পারি না। একবার একটা ধাতব বাটিতে হাত দিয়েছিলাম, সঙ্গে সঙ্গে মনে হল চিংড়ি মাছের কাঁটা ফুটল যেন—কনকন করতে লাগল। তখন ভাবলাম গামছা দিয়ে ঢাকা দিয়ে তুলতে পারি কিনা। কিন্তু যাই হাতে দিই, অমনি হাতটা ঝনঝন করতে থাকে, খুব বেদনাও হয়।”
“শেষে মাকে প্রার্থনা করলাম, ‘মা, আর এমন কর্ম করব না। মা, এবার মাফ করো।”
Leave a Reply