Ramakrishna 413: কামিনী-কাঞ্চনে আসক্তি গেলেই মন ও বুদ্ধি শুদ্ধ হয়

ramkrishna kathamrita by mahendra gupta 439th copy

শ্রীরামকৃষ্ণ (গিরিশের প্রতি): “ঈশ্বরের সব ধারণা কে করতে পারে? তাঁর বড় ভাবটাও পারে না, আবার ছোট ভাবটাও পারে না। আর সব ধারণা করা কি দরকার? তাঁকে প্রত্যক্ষ করতে পারলেই হলো। তাঁর অবতারকে দেখলেই তাঁকে দেখা হলো। যদি কেউ গঙ্গার কাছে গিয়ে গঙ্গাজল স্পর্শ করে, সে বলে—’গঙ্গা দর্শন, স্পর্শ করে এলুম।’ সব গঙ্গাটা হরিদ্বার থেকে গঙ্গাসাগর পর্যন্ত হাত দিয়ে ছুঁতে হয় না। তোমার পা-টা যদি ছুঁই, তোমায় ছোঁয়া হলো। যদি সাগরের কাছে গিয়ে একটু জল স্পর্শ করো, তাহলে সাগর স্পর্শ করাই হল। অগ্নিতত্ত্ব সব জায়গায় আছে, তবে কাঠে বেশি।”

গিরিশ (হাসিতে হাসিতে): “যেখানে আগুন পাব, সেইখানেই আমার দরকার।”

শ্রীরামকৃষ্ণ (হাসিতে হাসিতে): “অগ্নিতত্ত্ব কাঠে বেশি, ঈশ্বরতত্ত্ব খোঁজো—মানুষে খুঁজবে, মানুষের মধ্যেই তিনি বেশি প্রকাশ হন। যে মানুষকে দেখলে ভক্তি উথলে পড়ে ঈশ্বরের জন্য, তিনি অবতীর্ণ হয়েছেন।”

প্রেমে ভক্তি উথলে পড়ছে ঈশ্বরের জন্য; তার প্রেমে মাতোয়ারা হলে, সেই মানুষে যেন নিশ্চিতভাবে ঈশ্বর অবতীর্ণ হয়েছেন।
“মাস্টার” (শ্রী রামকৃষ্ণ) তো আছেনই, তবে তাঁর শক্তির প্রকাশ কোথাও কম, কোথাও বেশি। অবতারে তাঁর শক্তি বেশি প্রকাশ পায়। কখনো কখনো সেই শক্তি পূর্ণভাবে প্রকাশিত হয়—তখন তা শক্তিরই অবতার।

শ্রী রামকৃষ্ণ- এই মনের গোচর নন বটে, কিন্তু শুদ্ধ মনের গোচর।
এটা বুদ্ধির দ্বারা ধরা যায় না, কিন্তু শুদ্ধ বুদ্ধির দ্বারা ধরা যায়। কামিনী-কাঞ্চনে আসক্তি গেলেই মন ও বুদ্ধি শুদ্ধ হয়।
তখন শুদ্ধ মন ও শুদ্ধ বুদ্ধি একত্রে—সেই শুদ্ধ মনের গোচরে তিনি ধরা দেন।”

ঋষি-মুনিরা কি তাঁকে দেখেননি?
তাঁর চৈতন্যের দ্বারা তাঁকে চৈতন্যরূপেই সাক্ষাৎ করেছেন।

গিরিশ (সহাস্যে) “নরেন্দ্র তর্কে আমার কাছে হেরেছে!”

শ্রী রামকৃষ্ণ- না আমায় বলেছে, গিরিশ ঘোষ মানুষের অবতার, এটা তুমি বিশ্বাস করো।”
এখন আমি আর কী বলব! আমার বিশ্বাসের উপর কিছু বলার নেই।

গিরিশ (সহাস্যে), “সে মহাশয়! আমরা সব হল-ঘরে কথা বলছি, কিন্তু মাস্টার ঠোঁট চেপে বসে আছেন। কেমন বলেন, মহাশয়?”

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share