সেই পুরুষ বাক্য-মন-এর অতীত নন — তিনি শুদ্ধ মনের, শুদ্ধ বুদ্ধির, শুদ্ধ আত্মার গোচর।”
তবে কি তিনি সেই পুরুষের সাক্ষাৎ পাচ্ছেন? এই কি সেই দর্শন?
এমন সময় নরেন আসছেন — ঠাকুর বলতে লাগলেন,
“নরেন্দ্র, নরেন্দ্র…”
পাগলের মতো আচরণ।
নরেন আসতেই ঠাকুর কথা বললেন না।
লোকে বলছে — এটাই ‘ভাব’। এই রূপ শ্রীগৌরাঙ্গের ক্ষেত্রেও হয়েছে।
এ ভাব কে বুঝবে?
গিরিশের বাড়ির গলির সামনে ঠাকুর এসে উপস্থিত হলেন।
সঙ্গে ভক্তগণ। এবার ঠাকুর নরেনকে সম্ভাষণ করলেন।
নরেন্দ্র বললেন,
“ভালো আছেন?”
তাঁর কণ্ঠে করুণাভরা প্রতিটি শব্দ।
তখনও মনে হচ্ছে যেন ‘তারও দেশে’ তিনি পৌঁছাননি।
হঠাৎ দাঁড়িয়ে পড়লেন — নরেনের দিকে চেয়ে বললেন:
জীব, জগৎ, ঈশ্বর — এসব কি তিনি দেখছিলেন? কে জানে!
দু-একটি কথা উচ্চারিত হলো — যেন বেদবাক্য, যেন দৈববাণী।
অথবা যেন অনন্ত সমুদ্রতীরে দাঁড়িয়ে আছি — আর অনন্ত তরঙ্গের শব্দ শুনছি।
অনাহত ধ্বনির এক-দুটি সুর যেন কর্ণকুহরে প্রবেশ করল।
১১ মার্চ ১৮৮৫ — গিরিশ ঠাকুরের বাড়িতে শ্রী রামকৃষ্ণ
সন্ধ্যার পর গিরিশ ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণকে গৃহে নিয়ে এলেন।
ঠাকুর ভক্তদের সঙ্গে গিরিশের বাড়ির নিকট পৌঁছাতেই,
গিরিশ দণ্ডবৎ হয়ে পড়লেন — ঠাকুরের পদস্পর্শ করলেন।
তাঁকে নিয়ে উঠলেন দ্বিতীয় তলার বৈঠকখানায়।
ভক্তরা দ্রুত আসন গ্রহণ করলেন — সবার ইচ্ছা ঠাকুরের কাছে বসে তাঁর মধুর বচন শ্রবণ করা।
ঠাকুর আসনে বসতে যাচ্ছিলেন, হঠাৎ দেখলেন একখানা খবরের কাগজ পড়ে আছে।
খবরের কাগজে বিশ্বজিতের কথা, বিষয়-আলোচনা, পরনিন্দা — অপবিত্র সবকিছু।
ঠাকুর ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দিলেন — যেন তা সরিয়ে ফেলা হয়।
Leave a Reply