নিত্য বললেন, “লোক ভালো লাগে না। অনেক কথা বলে — ভয় লাগে। আবার কখনো সাহস হয়।”
ঠাকুর বললেন, “তা হবে বৈকি। তোদের সঙ্গে কে থাকে?”
নিত্য বললেন, “তারক — সে সব সময় সঙ্গে থাকে। তবে সেও ভালো সময় কাটাতে পারছে না।”
সপ্তম পরিচ্ছেদ
১৮৮৫ সালের ১১ই মার্চ – পার্ষদদের সঙ্গে অবতার সম্বন্ধে বিচার
শ্রীরামকৃষ্ণ – “নেংটা বলত—তাদের মধ্যে একজন সিদ্ধপুরুষ ছিলেন, তিনি আকাশের দিকে তাকিয়ে হেঁটে চলে যেতেন। গণেশজির সঙ্গে যেতেন। বড় দুঃখ—তিনি অধৈর্য হয়ে গিয়েছিলেন।”
বলতে বলতে শ্রীরামকৃষ্ণের ভাবান্তর হল। তিনি কিছুক্ষণ অবাক হয়ে রইলেন, পরে বললেন, “তুই এসেছিস, আমিও এসেছি।”
এ কথা কে বুঝবে?—এ যেন দেবভাষা!
ভক্তেরা অনেকে উপস্থিত—শ্রীরামকৃষ্ণের কাছে বসে আছেন নরেন্দ্র, গিরিশ, রাম, হরিপদ, চুনি, বলরাম, মাস্টার এবং আরও অনেকে। আলোচনা হচ্ছে—মানুষদেহ নিয়ে ঈশ্বর অবতার হন কি না। এদিকে গিরিশের দৃঢ় বিশ্বাস—তিনি যুগে যুগে অবতার হন এবং মানবদেহ ধারণ করে মর্ত্যে আসেন। ঠাকুরের ইচ্ছা—এই বিষয়ে দু’জনের মধ্যে বিচার হোক।
শ্রীরামকৃষ্ণ (গিরিশের প্রতি), “একটু ইংরেজিতে দু’জনে বিচার করো, আমি দেখব।”
বিচার আরম্ভ হল। ইংরেজিতে তেমন হল না, বাংলা ভাষাতেই আলোচনা চলল—মাঝে মাঝে দু’একটা ইংরেজি শব্দ।
নরেন্দ্র বললেন, “ঈশ্বর অনন্ত। তাঁকে সম্পূর্ণরূপে ধারণ করা আমাদের সাধ্য নয়। তিনি সকলের মধ্যেই আছেন, কেবল একজনের মধ্যে নন।”
শ্রীরামকৃষ্ণ সস্নেহে বললেন,
“ওর যা মত—আমারও তাই মত। তিনি সর্বত্রই আছেন। তবে একটা কথা আছে—শক্তির বিশেষ প্রকাশ। কোথাও অবিদ্যা-শক্তির প্রকাশ, কোথাও বিদ্যা-শক্তির। কোনও আঁধারে শক্তি বেশি, কোনও আঁধারে শক্তি কম। তাই সব মানুষ সমান নয়।”
Leave a Reply