তারপর শুরু হলো ঘোর তর্ক। “ইনফিনিটি”-এর কী অংশ হয়? হ্যামিল্টন কী বলেন, হার্বার্ট স্পেনসার কী বলেন, টিন্ডেল, হাক্সলে, বাকিরা কী বলেছেন—এই সব নিয়ে আলোচনা চলতে লাগল।
শ্রীরামকৃষ্ণ (মাস্টারের প্রতি): দেখো, এগুলো আমার ভালো লাগছে না। আমি সব কিছু দেখছি, বিচার করছি—আর করব কী? দেখছি, তিনিই সব। তিনিই সব হয়েছেন।
“তাও বটে… আবার তাও বটে।” এক অবস্থায় মন, বুদ্ধি—সব লীন হয়ে যায়, অখণ্ডে বিলীন হয়। নরেন্দ্রকে দেখে আমার মনও সেই অখণ্ডে লীন হয়ে যায়।
শ্রীরামকৃষ্ণ (গিরিশের প্রতি) তাঁর কী করলে বল দেখি।
গিরিশ ( হাসিতে হাসিতে) ওইটা ছাড়া প্রায় সব বুঝেছে কিনা, সকলের হাস্য।
রামানুজ ও বিশিষ্ট দ্বৈতবাদ
শ্রীরামকৃষ্ণ- আবার “দুই থাক না নামলে কথা কইতে পারি না”।
বেদান্ত, শংকর যা বুঝিয়েছেন তাও আছে, আবার রামানুজের বিশিষ্ট দ্বৈতবাদও আছে।
নরেন্দ্র—বিশিষ্ট দ্বৈতবাদ! কী, শ্রীরামকৃষ্ণ নরেন্দ্রর প্রতি বিশিষ্ট দ্বৈতবাদ দেখিয়েছেন? রামানুজের মতো?
জীবজগৎ বিশিষ্ট ব্রহ্ম।
সব জড়িয়ে একটি বেল—খোলা আলাদা, বিচি আলাদা আর শাঁস আলাদা।
একজন করেছিল। বেলটি কতজনের জানবার দরকার হয়েছিল?
এখন শুধু শাঁস ওজন করলে কি বেলের ওজন পাওয়া যায়?
খোলা, বিচি সব একসঙ্গে ওজন করতে হবে।
প্রথমে খোলা নয়, বিচি নয়—সার পদার্থ বলে বোধ হয়।
তারপর বিচার করে দেখা যায় সেই বস্তুর।
সেই বস্তুর খোলা, বিচি করে যেতে হয়।
জীবনীতি, জগৎনীতি—এরও বিচার করতে হয়।
বস্তু আর সব অবস্তু। তারপর অনুভব হয়,
যার শাঁস তারই খোলা, বিচি।
যা থেকে ব্রহ্ম বলছো, তাই থেকে জীবজগৎ।
যারই নিত্য, তারই লীলা।
তাই রামানুজ বলতেন—
জীবজগৎ বিশিষ্ট ব্রহ্ম।
এরই নাম বিশিষ্ট দ্বৈতবাদ।
Leave a Reply