শ্রীরামকৃষ্ণ: “না, এদিক-ওদিক—দুই দিক রাখতে হবে। জনক রাজা এদিক-ওদিক দু’দিন দেখে খেয়েছিল দুধের বাটি। সকলের হাস্য।”
গিরিশ: “থিয়েটারগুলো ছেলেদেরই ছেড়ে দিই, মনে করছি।”
শ্রীরামকৃষ্ণ: “নানা, ও বেশ আছে। অনেকের উপকার হচ্ছে।”
নরেন্দ্র (মৃদুস্বরে): “এই তো ঈশ্বর বলছে, অবতার বলছে, আবার থিয়েটার টানে!”
সমাধি মন্দিরে – গড়গড় মাতোয়ারা শ্রীরামকৃষ্ণ।
শ্রীরামকৃষ্ণ নরেন্দ্রকে কাছে বসাইয়া একদৃষ্টে দেখিতেছেন। হঠাৎ তাহার সন্নিকটে আরো শরিয়া গিয়া বসিলেন।
নরেন্দ্র অবতার মানেন না, তা কী এসে যায়? ঠাকুরের ভালবাসা যেন আরও উথলিয়া পড়িল।
“আছে আছে”— গায়ে হাত দিয়া, নরেন্দ্রের প্রতি কহিতেছেন—
“আমরাও তোর মানে আছি।”
শ্রীরামকৃষ্ণ: “বিচারলাভ পর্যন্ত নরেন্দ্রর প্রতি যতক্ষণ বিচার, ততক্ষণ তাকে পাই নাই।
তোমরা বিচার করছিলে, আমার ভালো লাগে নাই।”
শ্রীরামকৃষ্ণ: “নিমন্ত্রণবাড়ির শব্দ কতক্ষণ শোনা যায়? যতক্ষণ লোকে খেতে না বসে যায়।
লুচি-তরকারি পড়লে, ওমনি বারোয়ানা শব্দ কমে যায়, সকলের হাস্য।
অন্য খাবার পড়লে আরও কমতে থাকে।
দই পাতে পাতে পড়লে কেবল চুপচাপ।
ক্রমে খাওয়া হয়ে গেলেই নিদ্রা।
ঈশ্বরকে যতক্ষণ লাভ হবে, ততই বিচার কমবে।
তাকে লাভ হলে আর শব্দ, বিচার থাকে না। তখন নিদ্রা, সমাধি।”
এই বলিয়া নরেন্দ্রর গায়ে হাত বুলাইয়া, মুখে হাত দিয়া আদর করিতেছেন ও বলিতেছেন—
“হরি ওম, হরি ওম, হরি হরি ওম…”
কেন এই রূপ করিতেছেন, না বলিতেছেন শ্রীরামকৃষ্ণ।
কি নরেন্দ্রর মধ্যে সাক্ষাৎ নারায়ণ দর্শন করিতেছেন?
এরই নাম কি মানুষের ঈশ্বরদর্শন?
কি আশ্চর্য!
দেখিতে দেখিতে ঠাকুরের সংজ্ঞা যাইতেছে।
ওই দেখো, বহির্জগতের ইয়া যাইতেছে…
Leave a Reply