Ramakrishna 453: কামিনী-কাঞ্চনের ত্যাগ ও ব্রহ্মানন্দ

https://www.madhyom.com/ramkrishna-kathamrita-by-mahendra-gupta-393th-copy

ঠাকুর একটি তরুণ ভক্তের দিকে চেয়ে আছেন এবং আনন্দে ভাসছেন। সেই ভক্তকে লক্ষ্য করে ভক্তদের উদ্দেশ্যে বলছেন — “তিনটে জিনিস একেবারেই নেই ওর — জমি, টাকা আর স্ত্রী। এই তিনটে জিনিসের উপর মন রাখলে ঈশ্বর-ভক্তি হয় না।

আমি একবার ওকে দেখেছিলাম।”

তারপর সেই ভক্তটির দিকে ফিরে ঠাকুর বললেন — “তোরে কি দেখেছিলাম, বল?”

কামিনী-কাঞ্চনের ত্যাগ ও ব্রহ্মানন্দ

ভক্ত সহস্রের মধ্যে কতককে দেখেছি—কেউ কাম-ক্রোধ, লোভ-মোহ প্রভৃতির ভারে জর্জরিত; কেউ আবার সেই ভারের উপর বসে আছে, কেউ কেউ কিছুটা দূরে সরে দাঁড়িয়ে রয়েছে।

শ্রীরামকৃষ্ণ সংসারী লোকদের অবস্থা দেখেছেন—যারা ঈশ্বরকে ভুলে গেছেন, তাদের সেই করুণ দশা তিনি অনুভব করেছেন। তাই তাঁর মন থেকে নিজেই সব ত্যাগ হয়ে গিয়েছে।

“ও কী আশ্চর্য!” — আমি তো কত জপ-ধ্যান করেছি, তারপর গিয়ে তবে কিছুটা ফল পেয়েছিলাম। কিন্তু উনি (ঠাকুর) তো একেবারে এমন শীঘ্র কেমন করে সব ত্যাগ করলেন? কাম (কামনা) মন থেকে চলে যাওয়া কি এত সহজ ব্যাপার?

আমার নিজের মনে পড়ে, প্রায় ছয় মাস পরে যখন বুক ভারী হয়ে এলো, আমি গাছতলায় পড়ে গিয়ে কাঁদতে লাগলাম। বললাম—
“মা! যদি সত্যিই ত্যাগ হয় না, তাহলে গলায় ছুরি দেব।”

“যদি কামিনী-কাঞ্চনের মোহ মন থেকে চলে যায়, তবে আর বাকি কী থাকে? তখনই কেবল ‘ব্রহ্মানন্দ’।”

শশী তখন সবে ঠাকুরের কাছে যাওয়া-আসা শুরু করেছেন। তিনি তখন বিদ্যাসাগরের কলেজে বিএ-র প্রথম বর্ষে পড়েন। ঠাকুর তখনই তাঁর কথা বলছেন।

শ্রী রামকৃষ্ণ ভক্তদের উদ্দেশে বলছেন—
“সেই যে ছেলেটি মাঝে মাঝে আসে, কিছুদিন তার মনে টাকাকড়ির ভাব ওঠে — আমি দেখেছি। কিন্তু কতজনকে দেখেছি, যাদের মনে আদৌ সে ভাব ওঠে না। কয়েকটি ছোকরা তো বিয়েই করবে না।”

ভক্তরা নিঃশব্দে বসে শুনছেন।

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share