“অমুক মল্লিকের মা, খুব বড় মানুষের ঘরের মেয়ে! কেশবদের কথায় জিজ্ঞাসা করলো, ওদের কি কোন মতেও উদ্ধাৰ হবে না? নিজে আগে আগে অনেকরকম করছে কি না! তাই জিজ্ঞাসা করলো। আমি বললুম, হ্যাঁ, হবে — যদি আন্তরিক ব্যাকুল হয়ে কাঁদে, আর বলে আর করব না। শুধু হরিনাম করলে কি হবে, আন্তরিক কাঁদতে হবে।”
ত্রয়োদশ পরিচ্ছেদ ১৮৮৫, ৬ই এপ্রিল
দেবেন্দ্র-ভবনে ঠাকুরের কীর্ত্তনানন্দ ও সমাধিধন্দিতে এইবার খোল-করতাল লইয়া সংগীতন উঠিতেছে। কীর্ত্তনিয়া গাহিতেছেন: কি দেখিলাম রে, কেশব ভারতীর কুটিরে, অপরূপ জ্যোতিষি; শ্রীগৌরাঙ্গ মূর্তি, দুনু চক্ষে প্রেম বয়ে শতধারে। গৌর মন্মথতন্ত্র প্রায়, প্রেমাবেশে নাচে গায়, কড়ু ধরাতে লুয়া, নয়নজলে ভাসে রে, কাঁদে আর বলে হরি, স্বর্ণ-মর্ত্ত্য ভেদ করি, সিংহদ্বারে রে, আবাব ফুল লয়ে কুন্তাঞ্জলি হয়, দাস মুক্তি যাত্রে দ্বারে দ্বারে।। কিবা মূরছায়ে চটক বেস, ধরেছেন যোগীর বেস, দেখে ভক্তি প্রেমাবেশ, প্রাণ কেঁদে উঠে রে। জীবের দুঃখে কাতর হয়ে, এলেন সর্ব্ব ত্যাগিয়ে, প্রেম বিলাতে রে,
ঠাকুর গান শুনিতে শুনিতে ভাবাবিষ্ট হইয়াছেন। কীর্তনীয়া শ্রীরামকৃষ্ণের রজোগোপীর অবস্থা বর্ণনা করিতেছেন।
রজোগোপী মাধবীকৃষ্ণে মাঝে মাঝে অজ্ঞান করিতেছেন—
বে মাধবী! আমার মাধব দে!
(দে দে দে, মাধব দে!)
আমার মাধব আমায় দে, দিয়ে বিনামূল্যে কিনে নে।
মীনর জীবন, জীবন যেমন, আমার জীবন মাধব তেমন।
(তুই লুকাইছিস বেখয়াল, ও মাধবী!)
(অবলা সরলা পেয়ে!) (আমি বাঁচি না, বাঁচি না)
(মাধবী, ও মাধবী, মাধব দে না) (মাধব অপহরণ)।
ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ মাঝে মাঝে মাধব আখর দিতেছেন,
(সে ময়ূর কন্দর! যেখানে আমার প্রাণনন্দন!)
ঠাকুর সমাধিস্থ! স্পন্দহীন দেহ! অনেকক্ষণ স্থির রহিয়াছেন।
ঠাকুর যদিও প্রকৃতিস্থ; কিন্তু এখনও ভাবাবিষ্ট। এই অবস্থায় ভাব বলিতেছেন। মাঝে মাঝে মার সঙ্গে কথা বলিতেছেন।
Leave a Reply