মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বন্যা বৃষ্টিতে বিধ্বংস্ত সিকিমে (Sikkim) সাত দিনের বেশি সময় আটকে থাকার পর অবশেষে বাড়ির পথে রওনা হলেন সব পর্যটকেরা। বুধবার সকাল থেকে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার মধ্যেই পরিস্থিতি সামাল দিয়ে বিকেলের মধ্যে শেষ ১৫৮ জন পর্যটককে গ্যাংটকে আনা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে অসুস্থ তিন জনকে স্ট্রেচারে করে উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার হওয়া পর্যটকদের সেনা হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষাও করানো হয়।
সব পর্যটকদের সুস্থভাবে উদ্ধার
উত্তর সিকিমের (Sikkim) মংগনের জেলা শাসক হেমকুমার ছেত্রীর কথায়, 'পর্যটকদের সুরক্ষিত ভাবে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। একাধিক দফতর, স্থানীয় মানুষজন, সেনা ও প্রশাসনের মিলিত প্রচেষ্টায় নির্বিঘ্নে উদ্ধারকাজ সম্পন্ন হয়েছে।' লাচুং ও চুংথাং এলাকাতেই মূলত বেশির ভাগ পর্যটক আটকে ছিলেন। অনেকে আবার আশ্রয় নিয়েছিলেন গুরুদ্বারে। এ নিয়ে গত তিন দিনে মোট ১,৪৪৭ জন পর্যটককে উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার কাজের প্রথম দিন ৬৪ জন, দ্বিতীয় দিন ১,২২৫ জনকে উদ্ধার করা হয়েছিল। এদিন প্রশাসনের তরফে জানানো হয়, সিকিমের কোনও প্রান্তে নতুন করে পর্যটকদের আটকে থাকার খবর আপাতত নেই। তেমন কোনও খবর মিললে প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
Indian Army has rescued the last group of 150 tourists from rain-hit north Sikkim. Trishakti Corps has been working to assist the civil administration and locals in the evacuation of the 1200 tourists that got stranded in North Sikkim since 12-13 June. pic.twitter.com/HCkHy9FQYc
— ANI (@ANI) June 19, 2024
স্থানীয় বাসিন্দারাও নিরাপদ স্থানে
লাগাতার বৃষ্টির জেরে বিপর্যস্ত হয় সিকিম। কোথাও রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়, কোথাও সেতু ভেঙে পড়ে, কোথায় আবার ধস (Sikkim Landslides) নেমে সংযোগ ব্যবস্থা পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়। একটানা বৃষ্টির জেরে মংগন ও সিংতাম সহ উত্তর সিকিমের একাধিক এলাকার সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছিল না। বন্ধ হয়ে গিয়েছে মংগন থেকে গ্যাংটক, চুংথাং, লাচেন, ডিকচুর সহ একাধিক এলাকার রাস্তা। টানা বৃষ্টি হওয়ার পরিস্থিতির ক্রমশ অবনতি হয়। চুংথাংয়ের স্থানীয় বাসিন্দাদেরও সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে নিরাপদ স্থানে।
#sikkimfloods
— Trishakticorps_IA (@trishakticorps) June 19, 2024
"𝗟𝗮𝘀𝘁 𝗚𝗿𝗼𝘂𝗽 𝗼𝗳 𝗦𝘁𝗿𝗮𝗻𝗱𝗲𝗱 𝗧𝗼𝘂𝗿𝗶𝘀𝘁𝘀 𝗟𝗲𝗮𝘃𝗲 𝗡𝗼𝗿𝘁𝗵 𝗦𝗶𝗸𝗸𝗶𝗺"
Last group of 150 tourists were evacuated safely from North #Sikkim by administration. #TrishaktiCorps worked in coordination with civil administration relentlessly,… pic.twitter.com/D8lqPXDTDf
বেড়েছে তিস্তার জলস্তর, বিপর্যস্ত কালিম্পঙ
সিকিম (Sikkim) লাগোয়া কালিম্পং জেলায়ও একটানা বৃষ্টি চলছে। ১০ নম্বর জাতীয় সড়কে ভালুখোলা ও লিকুভিরের পরিস্থিতিও তথৈবচ। দুই এলাকাতেই পাহাড় থেকে পাথর গড়িয়ে পড়তে থাকে। টানা বৃষ্টিতে বেড়েছে তিস্তার জলস্তর। প্লাবিত হয়েছে তিস্তাবাজার এলাকার দার্জিলিংগামী রাস্তা। বুধবার বিকেল থেকে ১০ নম্বর জাতীয় সড়কে নিয়ন্ত্রিত ভাবে গাড়ি চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। বড় ও ভারী গাড়ি চলবে সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। অন্যদিকে ছোট গাড়ি সকাল ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলবে।
আরও পড়ুন: ডাক্তারিতে সুযোগ, পরে আইএএস! চাকরি ছেড়ে ২৬ হাজার কোটির কোম্পানি রোমান সাইনির
উত্তরে কেন এত বৃষ্টি
আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, উত্তরপ্রদেশ থেকে সিকিম পর্যন্ত উত্তর-দক্ষিণে বিস্তৃত একটি নতুন নিম্নচাপ অক্ষরেখা সক্রিয় রয়েছে। বুধবার থেকেই বাংলাদেশ এবং সংলগ্ন উত্তরবঙ্গের উপরে তৈরি হয়েছে আরও একটি ঘূর্ণাবর্ত। এর প্রভাবে আগামী চার-পাঁচ দিন পাহাড় এবং সংলগ্ন পাদদেশের পাঁচ জেলায় অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের সিকিমের (Sikkim Landslides) ভারপ্রাপ্ত অধিকারিক গোপীনাথ রাহা বলেন, ‘‘ঘূর্ণাবর্ত এবং নিম্নচাপ বঙ্গোপসাগর থেকে উত্তরবঙ্গে প্রচুর জলীয় বাষ্প টেনে আনছে বলেই পাহাড় ও তার পাদদেশে এত বৃষ্টি হচ্ছে।’’
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours