Swami Vivekananda: চারদিকে দুশ্চিন্তা, অবসাদ! স্বামীজির বাণী আজ বড়ই প্রাসঙ্গিক

আজকের অসহায় অবস্থা থেকে পরিত্রাণের উপায় কী? লিখেছেন রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের মহারাজ স্বামী অলোকেশানন্দ
Swami_Vivekananda
Swami_Vivekananda

স্বামী অলোকেশানন্দ

আজ মানুষ বড়ই অসহায়। খুব বেশিদিন হয়নি, করোনা ভাইরাস পৃথিবীর সমস্ত মানুষকে চরম সঙ্কটে ফেলে দিয়েছিল। নিরাময় সম্পূর্ণ হতে না হতেই অনুরূপ ভাইরাস নতুন নতুন ভাবে এসে উপস্থিত হচ্ছে। কিন্তু এর মধ্যেই অনেক প্রাণ অসময়ে শেষ হয়ে গেছে। ঘরে ঘরে মানুষের দুঃখ-কষ্ট লেগেই আছে। অসহায় বেকার যুবক-যুবতীরা হয় দুশ্চিন্তাগ্রস্ত, না হয় অবসাদগ্রস্ত। মানুষ মানুষের প্রতি বিশ্বাস রাখতে পারছে না। অধিকাংশ মানুষ নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। অন্যের জন্য চিন্তাভাবনা করার তাদের সময় নেই। নিজেকে নিয়ে খুবই ব্যস্ত তারা। 

শিক্ষিত মানুষের মধ্যে অসহায়তা ও অবসাদ চোখে পড়ার মতো

অন্যদিকে, একদল মানুষ মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে নিজেদের স্বার্থ প্রতিফলিত করার চেষ্টা করছে। আরেক দল সৎ পথে থেকে পরিশ্রম করে, মাথার ঘাম পায়ে ফেলে সংসারের ক্ষুধা মেটাতেই ব্যস্ত। এছাড়া প্রকৃতি সময় মতো বৃষ্টি না দেওয়াতে চাষের ক্ষতি হচ্ছে। কলকারখানায় লোক অবসর নিলে নতুন নিয়োগ না থাকার ফলে বেকারত্বর বিকাশ ঘটছে। কেউ কেউ নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্য খুব গরিবদের সামান্য অর্থ বা সামান্য খাদ্যদ্রব্য দিয়ে তাদের অলস করে দিচ্ছে। শিক্ষিত মানুষদের মধ্যে অসহায়তা ও অবসাদ চোখে পড়ার মতো। এক কথায় সাধারণ মানুষ কাঁদছেন। এর থেকে পরিত্রাণের উপায় কী? কেউ কী বলেছেন? 

পরিত্রাণের কথা বলে গেছেন (Swami Vivekananda), শুনছে কে?

হ্যাঁ বলেছেন, পরিত্রাণের কথাও বলেছেন। কিন্তু শুনছে কে? বহুদিন আগেই বলে গেছেন স্বামী বিবেকানন্দ (Swami Vivekananda)। কিন্তু শুনবে কে? প্রায় অধিকাংশ মানুষই নিজের ও পরিবারের জন্য রাত-দিন পরিশ্রম করছেন। কীভাবে আয় বাড়ানো যায়, তার চিন্তা। সমাজে প্রায় সকলেই জগতের ভোগ্য বস্তু, দেহসুখ নিয়েই ব্যস্ত। কিন্তু একবারও ভাবে না, যাদের জন্য আমি পরিশ্রম করছি, যা ভবিষ্যতের জন্য মজুত করছি, এই সব জিনিস কিছুই আমি ভোগ করে যেতে পারব না। আমার দেহ শেষ হবার সাথে সাথে ওই বস্তুগুলির আমার আর প্রয়োজন থাকবে না। যা সত্যিকারের প্রয়োজন তা হল, অপূর্ণতাকে পূর্ণ করা। পার্থিব সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য থেকে পরমকে পাওয়া। যা স্বামীজি (Swami Vivekananda) তাঁর বাণী ও বক্তৃতায় বার বার মানুষকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন।

কী বলেছেন স্বামীজি?

স্বামীজি (Swami Vivekananda) বলেছেন, "সমগ্র মানব জাতির আধ্যাত্মিক রূপান্তর-ইহাই ভারতীয় সাধনার মূল মন্ত্র, ভারতের চিরন্তন সঙ্গীতের মূল সুর, ভারতীয় সত্তার মেরুদণ্ড-স্বরূপ, ভারতীয়তার ভিত্তি, ভারতবর্ষের সর্বপ্রধান প্রেরণা ও বাণী। তাতার, তুর্কী, মোগল, ইংরেজ-কাহারও শাসন কালেই ভারতের জীবন সাধনা এই আদর্শ হইতে কখনও বিচ্যুত হয় নাই। বারংবার এই ভারতভূমি মূর্ছাপন্না হইয়াছিলেন। এবং বারংবার ভারতের ভগবান আত্মাভিব্যক্তির দ্বারা ইহাকে পুনরুজ্জীবিত করিয়াছেন" তিনি (Swami Vivekananda) বলছেন, "হে ভাতৃবৃন্দ, সত্যই মহিমময় ভবিষ্যৎ। প্রাচীন উপনিষদের যুগ হইতে আমরা পৃথিবীর সমক্ষে স্পর্ধাপূর্বক এই আদর্শ প্রচার করিয়াছি: 'ন প্রজায়া ন ধনেন ত্যাগেনৈকে অমৃতত্বমানশুঃ'-সন্তান বা ধনের দ্বারা নয়, ত্যাগের দ্বারাই অমৃতত্ব লাভ হইতে পারে। জাতির পর জাতি এই প্রতিদ্বন্দ্বিতার সম্মুখীন হইয়াছে।"

কিন্তু আমি বা আমরা এই বিষয়ে কি যত্নবান হয়েছি। নিজের মনে প্রশ্ন করলে উত্তর আসবে, না। তাই আজ মানুষ কাঁদছে। জগত সংসারে অনেক কিছুই পাওয়ার নয়, ভবিষ্যতের জন্য থাকার নয়। পরকালে নিয়ে যাবার মতো এই জগতে কিছু নেই। যা আছে ত হল পরম তত্ত্ব। যাকে পেলে আমি বা আমরা পূর্ণতা লাভ করব। তাকে লাভ করাই জীবনের উদ্দ্যেশ্য।

 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles