২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদি সরকারের স্লোগান ছিল 'আচ্ছে দিন আসছে'। বিগত ৯ বছরে ৪ কোটি মানুষ মাথার উপর ছাদ পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায়, ১১ কোটি মানুষ পেয়েছেন শৌচালয়। উজ্জ্বলা যোজনা আসার পর কাউকে আর উনুনে রাঁধতে হচ্ছে না। চলছে স্কিল ইন্ডিয়া, মেক-ইন-ইন্ডিয়ার মতো অজস্র প্রকল্প। সন্ত্রাসী হামলার প্রত্যুত্তর হিসেবে এদেশ সাক্ষী থেকেছে বালাকোট এয়ার স্ট্রাইকের। নিরাপত্তা হোক বা কৃষি, কর্মসংস্থান হোক বা দারিদ্রতা দূরীকরণ-বিগত ৯ বছরে কীভাবে এল সেই 'আচ্ছে দিন'? তা নিয়েই আমাদের ধারাবাহিক প্রতিবেদন ।
'সাফল্যের ৯ বছর'-৪
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Modi) প্রায়ই বলেন, ‘‘আমাদের দুটি অপরিসীম শক্তি আছে। একটি হল জনসংখ্যা এবং অপরটি গণতন্ত্র। পৃথিবীর মধ্যে সব থেকে বেশি যুবক এখন রয়েছেন ভারতে। সরকার সম্পূর্ণভাবে এই শক্তিকে কাজে লাগাতে চায়।’’ জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০ রূপায়ণের ফলে দেশের প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থার খোলনলচে বদলে গেছে। জাতীয় শিক্ষানীতিকে তৈরি করা হয়েছে ভারতীয় সভ্যতার ভিত্তির ওপর এবং বেশি জোর দেওয়া হয়েছে ছাত্রদের দক্ষতা বাড়ানোর ওপর। পরিসংখ্যান বলছে, গত ৯ বছরে রেকর্ড সংখ্যায় আইআইটি, আইআইএম, মেডিক্যাল কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় সারা দেশ জুড়ে স্থাপিত হয়েছে। অন্যদিকে এখনও অবধি ১ কোটি ৩৭ লক্ষ যুবক স্কিল ইন্ডিয়ার বিভিন্ন ট্রেনিং নিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী (PM Modi) কৌশল বিকাশ যোজনার মাধ্যমে। কেন্দ্রীয় সরকার ইতিমধ্যে দেশের প্রায় প্রতিটি রাজ্যেই রোজগার মেলার আয়োজন করেছে। ১০ লক্ষেরও বেশি প্রার্থীকে বিভিন্ন দফতরের নিয়োগপত্র তুলে দেওয়া হয়েছে। দেশের যুবসমাজকে সশস্ত্র বাহিনীতে যোগদানে উৎসাহ দিতে আনা হয়েছে অগ্নিপথ প্রকল্প। কেন্দ্রীয় সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি খুব স্পষ্ট। কর্মসংস্থান তৈরির বদলে ছোট বড় উদ্যোগপতি নির্মাণ করতে চায় কেন্দ্র। যাতে বর্তমান যুবসমাজ চাকরিমুখী হওয়ার থেকে চাকরিদাতা হতে পারে। এই উদ্দেশ্যে স্টার্ট আপ প্রজেক্ট কেন্দ্রীয় সরকার শুরু করে ২০১৬ সাল থেকে।
একনজরে দেখে নেওয়া যাক, যুব সমাজের জন্য মোদি সরকারের (PM Modi) প্রয়াস
১) দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে যুব অ্যাথলেটিকদের তুলে আনা হচ্ছে খেলো ইন্ডিয়া প্রকল্পের মাধ্যমে। কেন্দ্রীয় সরকারের এই প্রচেষ্টার ফল ভারত দেখেছে টোকিও অলিম্পিকে, ২০২১ সালে। এর ফলে অলিম্পিকে ৭টি মেডেল পায় ভারত।
২) প্রায় ৪০ বছর পরে জাতীয় শিক্ষানীতিকে নতুনভাবে উপস্থাপন করা হল। শিক্ষাকে সময়োপযোগী এবং কর্মমুখী করে তোলার এক অনবদ্য প্রয়াস মোদি সরকারের।
৩) যুব উদ্যোগপতি বানাতে স্টার্ট আপ প্রজেক্ট চালু করা হয়েছে ২০১৬ সাল থেকেই।
৪) ১ কোটি ৩৭ লক্ষ যুবককে প্রধানমন্ত্রী কৌশল বিকাশ যোজনার অধীনে ট্রেনিং দেওয়া হয়েছে।
৫) গত ৯ বছরে নতুন সাতটি আইআইএম চালু করা হয়েছে।
৬) প্রধানমন্ত্রী শ্রী যোজনার আওতায় ১৪,৫০০ স্কুলকে নতুনভাবে ঢেলে সাজানো হয়েছে।
৭) ২০১৭ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে ২৩ লক্ষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ চাকরি তৈরি করা গেছে, স্টার্ট আপ প্রজেক্টের মাধ্যমে।
৮) অধিক সংখ্যায় AIIMS তৈরি হয়েছে। বর্তমানে দেশে যার সংখ্যা ২৩টি।
৯) ৭ টি নতুন আইআইটি তৈরি হয়েছে। সারা দেশে আইআইটির সংখ্যা এখন ২৩। প্রসঙ্গত, ১৯৪৭ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে দেশে স্থাপিত হয়েছিল ১৬ টি আইআইটি। অন্যদিকে ২০১৪ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে দেশে স্থাপিত হয়েছে ৭ টি আইআইটি।
১০) পরিসংখ্যান বলছে, ১৯৪৭ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে মেডিক্যালে আসন সংখ্যা ছিল ৮২ হাজার ৪৬৬। অন্যদিকে বিগত ৯ বছরে মেডিক্যালে আসন সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে ৬৯ হাজার ৬২৩। বর্তমানে মোট আসন সংখ্যা ১ লক্ষ ৫২ হাজার ১৩৯।
১১) পরিসংখ্যান বলছে, সারা দেশে ১৯৪৭ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ৬৪১ টি মেডিক্যাল কলেজ ছিল। ৯ বছরের মোদি সরকারের জমানায় কলেজের বাড়ানো হয়েছে ৭০০টি। বর্তমানে দেশে মেডিক্যাল কলেজের সংখ্যা ১,৩৪১।
১২) সারা দেশে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ৭২৩ টি বিশ্ববিদ্যালয় ছিল। মোদি জমানায় গত ৯ বছরে আরও ৩৯০ টি বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ১,১১৩।
১৩) ক্রীড়া ক্ষেত্রে পরিকাঠামোগত উন্নয়নের ফলে দেশের কমনওয়েলথ গেমসে (২০২২) ৬১টি মেডেল এনেছেন আমাদের যুব ক্রীড়াবিদরা।
আরও পড়ুন: বন্ধ হয়েছে তিন তালাক, মোদি সরকারের আমলে মহিলাদের জন্য অজস্র প্রকল্প
আরও পড়ুন: দুধ উৎপাদনে শীর্ষে ভারত, প্রধানমন্ত্রী কিষাণ যোজনার আওতায় ১১ কোটি মানুষ!
আরও পড়ুন: ৮০ কোটি মানুষকে বিনামূল্যে খাদ্য, ১১ কোটি বাড়িতে জলের লাইন! অভাবনীয় সাফল্য মোদি সরকারের
চলবে....
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours