মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বালুরঘাট-হিলি রেললাইন সম্প্রসারণের জন্য জমি সার্ভে করার কাজ শেষ। এবার প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণের জন্য চূড়ান্ত গেজেট নোটিফিকেশন প্রকাশ করল রেলমন্ত্রক। ফলে প্রকল্পে আর কোনও জটিলতাই রইল না। শীঘ্রই শুরু হচ্ছে জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া। এদিকে দক্ষিণ দিনাজপুর (Balurghat) জেলা প্রশাসনের তরফে জানা গিয়েছে, বালুরঘাট থেকে হিলি পর্যন্ত ২৯.৭ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণে ৩৮৬ একর জমি চিহ্নিত করা হয়েছে। সার্ভেও শেষ হয়েছে। এখন রেল প্রকল্পের অর্থ পেলে জমি অধিগ্রহণ শুরু হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন হিলি রেল প্রকল্প ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু জমি জটে থমকে ছিল গোটা প্রক্রিয়া। প্রকল্প বাস্তবায়ন করার দাবি জানিয়েছেন জেলার বাসিন্দারা। রেলমন্ত্রকের তরফে জানা গিয়েছে, প্রথম বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয় ২০২২ সালের নভেম্বরে। ওই বিজ্ঞপ্তিতে রেলপথের জন্য জমি উল্লেখ করা হয়। মৌজার নাম দিয়ে সেই বিজ্ঞপ্তি বের হয়। এরপর সেই মতো জেলা প্রশাসন সার্ভে করে জমির ভ্যালুয়েশনের জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠিয়েছে। এবার ফাইনাল গেজেট নোটিফিকেশন প্রকাশ করল রেল। ওই বিজ্ঞপ্তিতে কাদের কাদের জমি অধিগ্রহণ করা হবে, তা উল্লেখ করা হয়েছে। সেই কাজ দ্রুত শুরু হবে বলেও রেলের তরফে জানা গিয়েছে।
মামলাও হয়েছে হাইকোর্টে
এবিষয়ে মামলাও হয় কলকাতা হাইকোর্টে। সেখানে সওয়াল করেন আইনজীবী কল্যাণ চক্রবর্তী। তিনি বলেন, হিলি রেল প্রকল্প নিয়ে হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা করেছিলাম। সেই মামলায় রায়ে বলা হয়েছিল, তিন মাসের মধ্যে জমি (Balurghat) অধিগ্রহণের নোটিস জারি করতে হবে। যদিও সেই সময়সীমা পেরিয়ে গিয়েছে। এখন দেরি হলেও রেলমন্ত্রক চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করেছে। আমরা হাইকোর্টে আবেদন জানিয়েছি, যাতে হাইকোর্টের নজরদারিতে সেই কাজের অগ্রগতি হয়। আদালত সেই আর্জি মেনে নিয়েছে।
কী বললেন সুকান্ত মজুমদার (Balurghat)?
এবিষয়ে দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলাশাসক বিজিন কৃষ্ণা বলেন, বালুরঘাট-হিলি রেল প্রকল্পের জন্য জমির সার্ভে সহ নানা প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ যেভাবে পাব সেভাবেই কাজ চলবে। বালুরঘাটের এমপি সুকান্ত মজুমদার জানিয়েছেন, রেলের তরফে চূড়ান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। আমরা দীর্ঘদিন ধরে লড়াই করেছি। অবশেষে চেষ্টা সফল হল। এবার হিলি পর্যন্ত ট্রেন পৌঁছাবেই। কোনও বাধা আটকাতে পারবে না। জমি অধিগ্রহণের কাজ দ্রুত শেষ করতে জেলাশাসকের সঙ্গে কথা বলব। কাটিহারের ডিআরএম শুভেন্দুকুমার চৌধুরী জানিয়েছেন, হ্যাঁ, এই বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে।
আশাবাদী জেলার বাসিন্দারা (Balurghat)
প্রসঙ্গত, বালুরঘাট (Balurghat) থেকে হিলি পর্যন্ত রেলপথে দূরত্ব ২৯.৭ কিলোমিটার এবং ওই পথের জন্য ৩৮৬ একর জমি চিহ্নিত করা হয়েছে। ২০১০ সালে রেলমন্ত্রক বালুরঘাট থেকে হিলি পর্যন্ত রেলপথ সম্প্রসারণের কথা ঘোষণার পরই জমি চিহ্নিত করা হয়। পরে আত্রেয়ী নদী ও বেশ কয়েকটি ছোট খালের মাঝে রেলব্রিজের পিলারও তৈরি করা হয়। তবে কাজ শুরুর বছর খানেকের মধ্যেই তা থমকে যায়। এরপর দীর্ঘদিনের টানাপোড়েনের জেরে প্রায় ১২ বছর কাজ থমকে থাকে। নানা জটিলতা কাটিয়ে অবশেষে এই রেলপথ সম্প্রসারণের চূড়ান্ত প্রক্রিয়া শেষ হল। দীর্ঘদিন ধরেই হিলির বাসিন্দারা রেল বঞ্চনা নিয়ে সরব হয়েছেন। অনেকেরই আক্ষেপ, হিলির পাশে বাংলাদেশ দিয়ে রেল যায়। যা এপার থেকে দেখা যায়। কিন্তু স্বাধীনতার ৭৫ বছর পরেও হিলিতে রেলের চাকা গড়াল না। সেই আক্ষেপ এবার দূর হয়ে যাবে বলে আশাবাদী জেলার বাসিন্দারা।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours