মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: তিন বছর আগে তার কথাতেই বাড়িতে দুর্গাপুজো শুরু হয়েছিল। আর এখন সে নেই। পুজোর সুর এবার বড়ই বিষাদের আরজি কর কাণ্ডে নির্যাতিতার (RG Kar Incident) মায়ের কাছে। পুজোর ঠিক দুই মাস আগে তাঁর গৌরী চলে গিয়েছে। এখনও বিচারের আশায় দিন গুনছেন তাঁরা। মহালয়ার দিন সকালে তাই অশ্রুসজল চোখেই বিচারের অপেক্ষায় তিলোত্তমার মা। বললেন, "দেবীপক্ষের শুরু, বিচারের লড়াইও শুরু। অসুর নিধন হবেই।"
মহালয়ার ভোরটা হাসপাতালেই কাটত
দেবীপক্ষের শুরুতে মেয়ের সঙ্গে পুজোর স্মৃতি ভাগ করে নিলেন নির্যাতিতার (RG Kar Incident) মা। বললেন,"কোনও কোনও বার মহালয়ার ভোরটা ওর হাসপাতালেই কাটত। কোনও কোনও বার ভোরে মহালয়া শুনেই বেরিয়ে যেত। তিন বছর আগে মেয়ে হঠাৎ বলল, মা চলো না, বাড়িতে দুর্গাপুজো করি! ধমক দিয়ে বলেছিলাম, পাগল হয়েছিস? দুর্গাপুজোয় প্রচুর খাটনি মা! মেয়ে বলেছিল, তুমি চিন্তা কোরো না। দু’জনে মিলে করলে ঠিক হয়ে যাবে। তুমি ভোগ রান্না করবে আর আমি পুজোর দিকটা সব সামলে নেব। সেই শুরু। পর পর দু’বার কী ভালোভাবে যে আমাদের বাড়ির পুজোটা হয়ে গেল, বলে বোঝাতে পারব না। গ্যারাজেই প্রতিমা পাতা হল। বাড়ির সামনে প্যান্ডেল। প্রতিদিন লোকজন খেত। আত্মীয়েরা সব চলে আসত মেয়ের ডাকে। ওর মতো মিশুকে মেয়ে হয় না। ওর মধ্যে এমনই মায়া যে কেউ ওর কথা ফেলতে পারত না।"
আরও পড়ুন: বন্যার জন্য মমতা দায়ী করেছিলেন কেন্দ্রকে, বৈরিতা ভুলে মোদিই রাজ্যকে দিলেন ৪৬৮ কোটি টাকা!
অঞ্জলি দিয়েই রোগীর বাড়ি
মানুষকে ভালোবাসার চেয়ে বড় পুজো হয় না, এই বিশ্বাসই আশ্রয় ছিল তিলোত্তমার (RG Kar Incident)। অঞ্জলি দিতে বসেও রোগীর ডাক এলে উঠে যেত মেয়ে, বলছেন নির্যাতিতার মা। তাঁর কথায়, "প্রতিমা বিসর্জন না হওয়া পর্যন্ত মেয়ের পুজো বলতে ছিল বাড়ি। সকলকে নিয়ে আনন্দ। বিসর্জনের পরে একটু মন খারাপ থাকত ওর। আবার ব্যস্ত হয়ে যেত নিজের কাজে। বলত, মা অনেকে এই পুজোর সময়ে খুব কষ্ট পান। ডাক্তারেরা থাকেন না অনেকেই এই সময়ে। তাই পুজোতেও রোগীর ডাক এলে উঠে যেত।" এখন কেউ ফোন করে মেয়ের নাম ধরে কথা বলতে চাইলে বুকটা কেঁপে ওঠে মায়ের। তাঁর কথায়, "যে নামের আগে ডিগ্রি পাওয়ার জন্য এত লড়াই করল মেয়েটা, সেই নামটাই এখন মুছে গিয়েছে। লোকে ওকে অভয়া, তিলোত্তমা বলে ডাকছে। আমার মেয়ের নামটাই মুছে গিয়েছে। এখন শুধুই অপেক্ষা। অসুর নিধনের।"
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours