Passport Scam: ছেলে পুলিশ, জাল পাসপোর্ট চক্রে জড়িত মুহুরি বাবা

Passport_Scam_(1)

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পাসপোর্ট জালিয়াতি (Passport Scam) কাণ্ডে এবার গ্রেফতার এক মুহুরি। সমীর দাস নামে বারাসত আদালতের এক মুহুরিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃত বারাসতের নবপল্লির বাসিন্দা। পাসপোর্ট জালিয়াতি কাণ্ডের তদন্তে নেমে কারা বাংলাদেশিদের জন্য বিভিন্ন দরকারি ভারতীয় নথি বানাত তার খোঁজ শুরু করেন তদন্তকারীরা। তাতেই উঠে আসে তাঁর নাম। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এই সমীর দাসের এক ছেলে পুলিশ। আর এক ছেলে দাঁতের ডাক্তার।

ভুয়ো কার্ড বানাতে কত রেট ছিল?(Passport Scam)

অভিযোগ, সমীর বারাসতের নবপল্লি (Passport Scam) থেকেই বাংলাদেশিদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন। সেখানকার মানুষের নকল ভোটার কার্ড-আধার কার্ড করে দিতেন। বিষয়টি জানতে পারে বারাসত থানার পুলিশ। এরপর মঙ্গলবার মধ্যরাতে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, নকল এই সার্টিফিকেটগুলি বাংলাদেশিদের পাসপোর্ট ইস্যু করার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হত। তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, বিভিন্ন নথির জন্য আলাদা আলাদা রেট বাঁধা ছিল সমীরের। গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, রীতিমতো রেট চার্ট তৈরি করে বাংলাদেশিদের জাল নথি বানিয়ে দিতেন এই ব্যক্তি। জাল নথি বানানোর গোটা একটা চক্র চালাতেন তিনি। আধার কার্ড করতে ১৫ হাজার টাকা, বার্থ সার্টিফিকেটের জন্য ১২ হাজার, প্যান কার্ড করতে ৩ হাজার টাকা নিতেন তিনি। আদালতে কাজ করায় বিভিন্ন লোকের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল তাঁর। সেই সুযোগেই রীতিমতো বাংলাদেশিদের ভারতীয় নথি তৈরি করে দেওয়ার চক্র চালাতেন তিনি। ধৃতের ফোন থেকে একাধিক বাংলাদেশির ফোন নম্বর পাওয়া গিয়েছে। যাতে মনে করা হচ্ছে বাংলাদেশে থাকা দালালচক্রের সদস্যদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল তাঁর। এই ব্যক্তি কতজনকে ও কাকে কাকে জাল নথি তৈরি করে দিয়েছেন, তা তদন্ত করে দেখছেন গোয়েন্দারা। ওদিকে অভিযুক্তের দাবি, তিনি কারও নথি তৈরি করে দেননি। নথি তৈরির প্রক্রিয়া জানিয়েছেন মাত্র।

প্রতিবেশীদের কী বক্তব্য?

প্রতিবেশী (Passport Scam) আরতি ভদ্র বলেন, “এমনই একটা লোক এসেছিল। দরজা খুলল। বেল মারল। তারপর জানি না। আমরা এইটুকুই জানি। এরা জানতাম সাদাসিধা মানুষ।” অভিযুক্তের পরিবারের এক সদস্য বলেন, “ওঁর কাছে আধার কার্ড পাওয়া গেছে। সেই কারণে গ্রেফতার করেছে। এর বেশি কিছু বলতে পারব না।” আরও এক প্রতিবেশী বলেন, “প্রায় পঁচিশ বছর ধরে থাকে। কারও সঙ্গে সেইভাবে মিশতেন না। ভিতরে ভিতরে এই কাজ করবে কে জানত।”

পাসপোর্ট জালিয়াতির পিছনে কারা?

এর আগে পাসপোর্টের কারবারের (Passport Scam) সূত্র ধরে ৯জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জানা গিয়েছে,পাসপোর্ট কাণ্ডের অন্যতম চক্রী সমরেশ বিশ্বাসের সঙ্গে পরিচয় হয় প্রাক্তন পুলিশ কর্মী আবদুল হাইয়ের। কিছুদিন পর আবদুলকে টাকার টোপ দেন সমরেশ। সেই টোপ গিলেও নেন আবদুল। তার পরেই শুরু হয় জালিয়াতির কারবার। পাসপোর্ট কাণ্ডের অন্যতম চক্রী সমরেশ বিশ্বাসের অ্যাকাউন্ট থেকে আবদুল হাইয়ের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে গত কয়েক বছরে গিয়েছে প্রায় ১৩ লক্ষ টাকা। পাসপোর্ট পিছু ২৫ হাজার টাকা করে নিতেন এই আবদুল হাই। এই আবহে ধৃতকে জেরা করে আর কোন কোন আধিকারিক এই দুর্নীতিতে যুক্ত তা জানার চেষ্টা করছেন গোয়েন্দারা। গোয়েন্দারা জানাচ্ছেন, গত কয়েক বছরে ১৫০ জনেরও বেশি অনুপ্রবেশকারীকে ভারতীয় পাসপোর্ট করিয়ে বিদেশে পাঠিয়েছে সমরেশ। তার মধ্যে ৫০টির বেশি পাসপোর্ট তৈরি হয়েছে আবদুল হাইয়ের হাত ধরে। এদিকে পাসপোর্ট জালিয়াতির তদন্তে এই নিয়ে মোট ৮ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে এই চক্রের জাল আরও দূর পর্যন্ত ছড়ানো বলে মনে করা হচ্ছে। এদিকে পাসপোর্টকাণ্ডে ধৃত মূল চার অভিযুক্তের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ৫টি মোবাইল ফোন। সেই ফোনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মুছে ফেলা হয়েছে বলে অনুমান পুলিশের। সেই তথ্য ফিরে পেতে ফোনগুলির ফরেন্সিক পরীক্ষা করাতে চান তাঁরা। গোয়েন্দাদের অনুমান, ওই ফোনগুলির তথ্য পাওয়া গেলে ধৃতদের সঙ্গে আর কার কার যোগাযোগ ছিল তা জানা যাবে। পাশাপাশি এবার সমীর দাসকে জিজ্ঞাসা করে গোটা চক্রের আরও তথ্য পাওয়া যেতে পারে বলে তদন্তকারীরা মনে করছেন।

 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share