মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দরজায় কড়া নাড়ছে রঙের উৎসব (Holi 2025)। দেশের আপামর জনসাধারণ মেতে উঠবে হোলিতে। এই আবহে ফের একবার চিনা দ্রব্য বয়কটের ব্যাপক প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে দেশজুড়ে। গত বছরের হোলিতেও ঠিক এমনটাই দেখা গিয়েছে। প্রসঙ্গত, দীপাবলিতে একইভাবে চিনা দ্রব্য বয়কটের নজির দেখা গিয়েছে বিগত কয়েক বছরে। এবার হোলিতেও (Holi 2025) শুরু হয়েছে তা। কনফেডারেশন অফ অল ইন্ডিয়া ট্রেডার্সের (Confederation of All India Traders) সাধারণ সম্পাদক হলেন প্রবীণ খান্ডেনওয়াল। এর পাশাপাশি তিনি বিজেপি থেকে নির্বাচিত চাঁদনি চকের সাংসদও বটে। সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানিয়েছেন, দোল উপলক্ষে গত বছরের মতো এবারেও বিক্রেতা এবং ক্রেতাদের মধ্যে চিনা দ্রব্য বয়কটের প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এর পাশাপাশি দেশীয় রঙের কদরও অনেকটাই বেড়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
দেশীয় দ্রব্যের ব্যবহার ও উৎপাদন দুটোই বেড়েছে (Holi 2025)
দেশে তৈরি বিভিন্ন রঙ, আবির, পিচকারী, বেলুন, পুজো সামগ্রী- এই সমস্ত কিছুই ব্যাপকভাবে বিক্রি হচ্ছে। হোলির দিনে রঙ খেলার পাশাপাশি চলে মিষ্টিমুখও। চলে উপহার দেওয়ার পালা। শুকনো ফল, বিভিন্ন উপহার সামগ্রী, মিষ্টি, নতুন পোশাক- এই সমস্ত কিছুতেও দেখা যাচ্ছে যে দেশে তৈরি জিনিসপত্র কিনতে মানুষ বেশি আগ্রহী। কনফেডারেশন অফ অল ইন্ডিয়া ট্রেডার্স এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে জানিয়েছে যে বিভিন্ন ব্যবসা ক্ষেত্রে দেশে তৈরি জিনিসপত্রের উৎপাদন ও বিক্রি আগের থেকে অনেক গুণ বেড়েছে। তবে কোন কোন জিনিসের চাহিদা (Holi 2025) সবচেয়ে বেশি? এই আবহে জানা গিয়েছে, সাদা রঙের টি শার্ট, সাদা কুর্তা-পাজামা, মেয়েদের জন্য সালোয়ার এগুলি খুবই বিক্রি হচ্ছে রঙের উৎসবের জন্য। একইসঙ্গে ওই টি-শার্টগুলিতে লেখা থাকছে হ্যাপি হোলি।
কী বললেন প্রবীণ খান্ডেনওয়াল
প্রবীণ খান্ডেনওয়াল আরও বলেন, ‘‘ভারত হল উৎসবের ভূমি। সারা বছর ধরে এখানে উৎসব পালিত হয়। বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান থেকে শুরু করে অন্যান্য উৎসবের মরসুমগুলিতে ব্যবসাও বাড়ে। বিক্রেতাদের রোজগারও ভালো হয়। সেই রকম একটি উৎসব হল হোলি (Holi 2025)। যা সারা দেশে পালিত হয়। এই আবহে অর্থনীতিও চাঙ্গা হয় দেশের। এর সুফল লাভ করেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। বিশেষত যাঁরা ছোট ব্যবসায়ী তাঁরা। চলতি বছরের হোলিও হতে যাচ্ছে সেরকমই একটি উৎসব যেখানে দেশের বিক্রেতারা অর্থনৈতিকভাবে ভালোই লাভবান হবেন।’’
৬০ হাজার কোটির ব্যবসা
কনফেডারেশন অল ইন্ডিয়া ট্রেডার্সের (Confederation of All India Traders) দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি বছরে হোলিকে কেন্দ্র করে ব্যবসা হতে চলেছে ৬০,০০০ কোটি টাকার। জানা গিয়েছে, কুড়ি শতাংশ ব্যবসা বাড়তে চলেছে গত বছরের নিরিখে। পরিসংখ্যান বলছে, গত বছরের হোলিতে দেশজুড়ে ব্যবসা হয়েছিল ৫০,০০০ কোটি টাকার। রাজধানী দিল্লিতে এই ব্যবসা হয়েছিল ৮ হাজার কোটি টাকার। কুড়ি শতাংশ বেড়ে এবার তা দাঁড়াতে চলেছে ৬০,০০০ কোটিতে। প্রবীণ খান্ডেনওয়াল আরও জানিয়েছেন, দিল্লি সমেত সারা দেশেই জনগণ মেতে উঠবে হোলির রঙে। এর পাশাপাশি বেশ কিছু ধর্মীয় স্থানগুলোতেও ভিড় জমবে। যেখানে হোটেল, রেস্তোরাঁ মালিকরাও লাভবান হবেন।
দিল্লিতে ৩ হাজার স্থানে হোলি মিলন (Holi 2025)
এখনও পর্যন্ত যে পরিসংখ্যান সামনে এসেছে, সেখানে দেখা যাচ্ছে দিল্লিতে ৩০০০-এরও বেশি স্থানে হোলি মিলন উদযাপন করা হবে। এই তিন হাজার হোলি মিলন উৎসবের মাধ্যমে মানুষজন মেতে উঠবেন আনন্দে এবং উৎসবে। জানা যাচ্ছে, বিভিন্ন ব্যবসায়িক সংগঠন, সামাজিক সংগঠন, সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলি মিলে আয়োজন করছে এই হোলি মিলন উৎসবের। প্রসঙ্গত হোলি (Holi 2025) শুধুমাত্র একটি রঙের উৎসব নয়। এটি একটি খাবারের খাদ্য উৎসবও বটে। এই প্রসঙ্গে মিষ্টির দোকানগুলিতে ব্যাপক বিক্রি বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। বিশেষত, গুজিয়া এবং অন্যান্য খাবারের বিক্রি ব্যাপক বেড়েছে। ১৩ মার্চ দিল্লিতে অনুষ্ঠিত হবে হোলিকা দহন উৎসব। ১৪ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে হোলি। এই আবহে সেজে উঠছে গোটা দেশ। নানা রঙের আবির, পিচকারি, গুজিয়া-এই সমস্ত কিছু নিয়ে মেতে উঠবে দেশবাসী।
ভেষজ আবিরের চাহিদা বেড়েছে
বিগত কয়েক বছর ধরে মানুষজনের মধ্যে ঝোঁক বেড়ে ভেষজ আবির এবং প্রাকৃতিক রঙের ব্যবহারে। রাসায়নিক রঙ আর মানুষজন ব্যবহার করতে চাইছেন না। কারণ এই রঙ ত্বকের পক্ষে ক্ষতিকারক। বিগত কয়েক বছর ধরে ব্যাপক বিক্রি বেড়েছে দেশজ রঙ। নানা রঙের আবিরের থালা সাজিয়ে রঙ খেলতে দেখা যায় মানুষজনকে। চাহিদা রয়েছে পিচকারিরও। জানা যাচ্ছে, বাজারে পিচকারিগুলির দাম রয়েছে ১০০ থেকে ৩৫০ টাকার মধ্যে। অন্যদিকে ট্যাঙ্ক স্টাইলের ওয়াটার গান গুলির দাম ১০০ থেকে ৪০০-এর মধ্যে। বাচ্চাদের মধ্যে এগুলি খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। স্পাইডারম্যান এবং ছোটা ভিম- এই সমস্ত ছবি দিয়ে আঁকা, পিচকারিগুলি ব্যাপক জনপ্রিয় হয়েছে শিশুদের মধ্যে।
Leave a Reply