মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ডানকুনি থানার চাকুন্দির আমার বাংলা ইন্ডাস্ট্রিয়াল কমপ্লেক্সের একটি গোডাউনে চলতো আন্তর্জাতিক প্রতারণা (Fraud) চক্র। শুক্রবার অভিযান চালিয়ে আটজনকে গ্রেফতার করে চন্দননগর পুলিশের গোয়েন্দারা। অভিযুক্তরা "ম্যাক্সটেকনো" নামে একটি কোম্পানির কল সেন্টার থেকে বিদেশে ও ভারতে প্রতারণার গোপন ব্যবসা চালাচ্ছিল। মাস দুয়েক ধরে গোডাউন ভাড়া নিয়ে এই চক্র চলছিল। ধৃতদের নাম সিরিপুরম কামেশ্বর রাও (৩৫), রাহুল কুমার শা, সিরিপুরম লক্ষ্মী নারায়ণ আচারি, বাপি দাস, সামির হোসেন, এমডি জাভেদ আলম, এমডি ফয়জান আলম ওরফে জন্টি ও এমডি মোস্তফা। তাদের বাড়ি কলকাতা, উত্তর ২৪ পরগনা এবং হাওড়া এলাকায়।
কীভাবে প্রতারণা করত?
বিদেশি প্রবীণ নাগরিকরাই মূলত টার্গেট ছিল এই চক্রের। পুলিশ ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পারে আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, কানাডার মতো দেশের নাগরিকদের টার্গেট করা হতো। লোভনীয় প্রতিশ্রুতি দেওয়ার জন্য আমাজনের মত নামী কোম্পানির প্রতিনিধি হিসাবে পরিচয় দিয়ে ফোন করতো। বুকিং বাতিল হয়েছে। ফের বুকিং করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাতো। সেই লিঙ্কে ক্লিক করলেই বিদেশি নাগরিকের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা উধাও হয়ে যেতো। জামতাড়া গ্যাংয়ের মতো তারা প্রতারণা চক্র খুলে বসেছিল। ডানকুনি থেকে দিল্লি সহ বিভিন্ন জায়গায় প্রতারকদের এজেন্ট রয়েছে। কয়েক ঘণ্টার জিজ্ঞাসাবাদে যা জানা গেছে, কয়েকশো কোটি টাকার প্রতারণা (Fraud) করেছে এই চক্র। আমাজনের মত অনলাইন বিপণীর ফেক ইমেল থেকে লোভনীয় অফার দেওয়া হতো। সেই ফাঁদে পা দিয়ে মেলে দেওয়া লিঙ্কে ক্লিক করলেই বিদেশিদের মোবাইল ও ব্যাঙ্ক একাউন্ট হ্যাক করে ডলার হাতিয়ে নিতো প্রতারকরা। এরজন্য এনি ডেস্কের বা টিম ভিউয়ার অ্যাপ ব্যবহার করতো প্রতারকরা। গোডাউনে তল্লাশির সময় একাধিক কম্পিউটার, মোবাইল, হিয়ারিং ইকুইপমেন্টস, পেন ড্রাইভ, অসংখ্য ডেবিট, ক্রেডিট ও প্যান কার্ড পুলিশ বাজেয়াপ্ত করে।
কী বললেন পুলিশ কমিশনারেটের এক আধিকারিক?
চন্দননগর কমিশনারেটের তদন্তকারী এক অফিসার বলেন, ডানকুনি থেকে বিদেশে অনলাইনে প্রতারণা (Fraud) চালাতো অভিযুক্তরা। ভারতে রাত আর পশ্চিিমী দেশগুলোতে তখন দিন। সেই সময়টাকে বেছে নিয়ে কাজ করতো প্রতারকরা। ডানকুনির ভাড়া নেওয়া গোডাউনে রাত আটটা নাগাদ ঢুকতো গাড়ি নিয়ে। ভোর চারটে পর্যন্ত কাজ করে বেরিয়ে যেতো।
কীভাবে ধরা পরল?
সূত্র মারফত পুলিশ জানতে পারে চাকুন্দির ওই ইন্ডাস্ট্রিয়াল হাবে একটি গোডাউন ভাড়া নিয়েছে কয়েকজন যুবক। তারা দিনে আসে না, মূলত রাতে গাড়ি নিয়ে ঢোকে। দিনের আলো ফোটার আগে বেরিয়ে যায়। পুলিশ খোঁজ নিয়ে জানতে পারে তারা কম্পিউটার রিপিয়ারিং এর কাজ করে বলে ভাড়া নিয়েছিল। কিন্তু, রাতে কেন সেই কাজ সন্দেহ হয় পুলিশের। গোপনে খোঁজ খবর নেওয়া শুরু হয়। যুবকদের গতিবিধির উপর নজর রাখা শুরু হয়। এরপরই চাকুন্দির গোডাউনে হানা দেয় পুলিশ। প্রতারকদের কান্ডকারখানায় হতবাক দুঁদে পুলিশ কর্তারাও।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours