Bangladesh: হামলার প্রতিবাদে লাখ লাখ হিন্দু রাস্তায়! সংখ্যালঘু গর্জনে কাঁপল বাংলাদেশ

Untitled_design(773)

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশের (Bangladesh) রাজনৈতিক পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠার পরেই সেদেশের হিংসা সাম্প্রদায়িক হামলায় পরিবর্তিত হয়। জামাত ও বিএনপির নেতৃত্বে মৌলবাদীরা আক্রমণ চালাতে থাকে একের পর এক হিন্দু মন্দির ও বাড়িতে (Hindu Protest)। রঙপুরে খুন করা হয় হিন্দু নেতা কাজল রায়কে, রেহাই পাননি সাংবাদিকরাও, রায়গঞ্জের প্রেস ক্লাবের ভিতরে ঢুকে মৌলবাদীরা হত্যা করে হিন্দু সাংবাদিক প্রদীপকুমার ভৌমিককে। এমন হামলাগুলিতে ছায়া দেখা যেতে থাকে ঠিক ১৯৪৭-এর দেশ ভাগ অথবা ১৯৭১-এর বাংলাদেশের (Bangladesh) মুক্তিযুদ্ধের সময়কার। প্রচুর সংখ্যায় হিন্দুরা জড়ো হতে থাকেন ভারত সীমান্তে, আশ্রয় পাবার আশায়। এরই মাঝে হিন্দু ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও বাড়িগুলিতে হামলার প্রতিবাদে নিরাপত্তার দাবিতে লাখ লাখ হিন্দু বাংলাদেশের রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানালেন। বাংলাদেশের ঢাকার শাহবাগ স্কোয়ার, শরিয়তপুর, চট্টগ্রাম, বরিশাল, দিনাজপুর, ময়মনসিংহ সব জায়গাতে একই ছবি দেখা গিয়েছে। সমস্ত ক্ষেত্রে হিন্দুরা নিরাপত্তার দাবি তুলেছেন ইসলামিক মৌলবাদীদের আক্রমণের হাত থেকে বাঁচার জন্য।

ঢাকায় ব্যাপক বিক্ষোভ হিন্দুদের (Bangladesh)

ঢাকার শাহবাগ স্কোয়ারে আন্দোলন শুরু হয় শুক্রবার, শনিবার তা ব্যাপক আকার ধারণ করে। লাখো লাখো হিন্দু রাস্তায় (Hindu Protest) নেমে নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে নীতি প্রণয়নের দাবি তোলেন, যাতে হিন্দুদের জীবন ও জীবিকার নিরাপত্তা রক্ষিত হয়। এর পাশাপাশি ঢাকার হিন্দুরা দাবি তুলেছেন, নতুন অন্তর্বর্তী সরকারে একটি সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রক রাখার জন্য। এছাড়াও কড়া আইন প্রণয়নের দাবিও তুলেছেন হিন্দুরা, যাতে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের ওপর যে কোনও ধরনের হামলা প্রতিরোধ করা যায়। হিন্দুদের দাবি জোরালোভাবে যাতে পার্লামেন্টে পৌঁছে দেওয়া যায় সে কারণে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে ১০ শতাংশ সংখ্যালঘু সংরক্ষণও চেয়েছেন তাঁরা। বাংলাদেশের এই আন্দোলনের অন্যতম নেতা তথা বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদের মুখপাত্র সজ্জন কুমার সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘আমাদের দেশ সকলের দেশ। হিন্দুরা এখানে নিরাপত্তা চায়।’’ হিন্দুদের আন্দোলনে জয় শ্রীরাম, হরে কৃষ্ণ ধ্বনিও শোনা গিয়েছে শনিবার।

চট্টগ্রামের পথে ৭ লাখ হিন্দু!

চট্টগ্রামের (Bangladesh) ক্ষেত্রে ছবিটা ছিল একই। সেখানে লাখো লাখো হিন্দু জড়ো হয়েছিলেন। সমাজমাধ্যমে এ নিয়ে বিভিন্ন ছবি ও ভিডিও ভাইরাল হয়েছে এবং সেখানে দাবি করা হয়েছে ৭ লাখেরও বেশি হিন্দু চট্টগ্রামের চিরাগি পাহাড় এলাকায় জড়ো হয়েছিলেন। প্রসঙ্গত চিরাগি পাহাড় এলাকাকে চট্টগ্রামের সাংস্কৃতিক কেন্দ্র বলে ধরা হয়। লাখ লাখ হিন্দু রাস্তা অবরোধ করেন শনিবার এবং তাঁরা দাবি তুলতে থাকেন, হিন্দুদের ওপর আক্রমণ বন্ধ হোক। এদিন চট্টগ্রামের হিন্দুরা মুখে কালো কাপড় বেঁধে ছিলেন প্রতিবাদ জানাতে। তাঁরা দাবি তোলেন, ইসলামিক মৌলবাদীদের হাত থেকে হিন্দুদের রক্ষা করা হোক ও বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ফিরিয়ে আনা হোক। আন্দোলনকারীদের হাতে ছিল পোস্টারগুলিতে লেখা ছিল, আমরা এখনও কেন স্বাধীন হতে পারলাম না! কেন আমাদের মন্দিরের ওপর হামলা চলছে! কেন বাংলাদেশের থাকার জন্য আমাদেরকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে! দেশের এর উত্তর চায়!

শরিয়তপুরে হিন্দুদের মানববন্ধন

বাংলাদেশের শরিয়তপুরে হিন্দুরা মানববন্ধন করেন মৌলবাদীদের অত্যাচার, মূর্তি ভাঙা, লুট, জমি দখলের বিরুদ্ধে। সে দেশে শরিয়তপুরে হিন্দুদের এই বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেয় বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট নামের সংগঠন। পরবর্তীকালে লাখো লাখো হিন্দুর ওই মিছিল স্থানীয় সেন্ট্রাল শহিদ মিনারে শেষ হয়। জাতীয় হিন্দু মহাজোটের নেতা হেমন্ত দাস সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘হিন্দুরা আতঙ্কিত। আমরা হতবাক হয়ে গিয়েছি যেভাবে হিন্দুদের ওপর আক্রমণ চলছে। মন্দির ভাঙচুর চলছে। আমরা আর বিলাপ করতে চাই না। সরকারের কাছে আমরা দাবি জানাচ্ছি, আমাদের নিরাপত্তা দেওয়া হোক। আমরাও এদেশের নাগরিক আমাদেরও বেঁচে থাকার অধিকার রয়েছে।’’

খোলা চিঠি ইউনূসকে

বরিশালের চিত্রটাও ছিল একই রকম। সোমবার ৫ অগাস্ট শেখ হাসিনার পদত্যাগের পরেই এখানে হিন্দুদের ওপর হামলা নেমে আসে। তাই আন্দোলনকারীরা এদিন নিজেদের নিরাপত্তার দাবির সঙ্গে সঙ্গে বলতে থাকেন যখন হামলা হচ্ছিল তখন কেউ আসেনি তা থামাতে। প্রসঙ্গত, শুক্রবার বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ খোলা চিঠি লেখে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মহম্মদ ইউনূসকে এবং সেখানে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও অত্যাচার বন্ধ (Bangladesh) করার দাবি জানানো হয়।

হিন্দুদের দাবি

এদিন হিন্দুদের দাবিগুলি ছিল,

১) সংখ্যালঘু মন্ত্রক তৈরি 
২) সংখ্যালঘু অধিকার রক্ষা কমিশন তৈরি 
৩) সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার জন্য কঠোর আইন প্রণয়ন 
৪) সংসদে ১০ শতাংশ সংখ্যালঘু আসন সংরক্ষণ 
৫) সংখ্যালঘুদের ওপর যে হামলাগুলি হয়েছে সেগুলির স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ তদন্ত 
৬) যেসব সংখ্যালঘুর বাড়িতে হামলা চলেছে, লুট চলেছে তাঁদেরকে যথাযুক্ত ক্ষতিপূরণ
৭) হিন্দু কল্যাণ ট্রাস্টকে স্বশাসিত সংস্থার মর্যাদা দেওয়া

 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share