Bangladesh: কট্টরপন্থী হাদির মৃত্যুর পর অগ্নিগর্ভ বাংলাদেশ, হামলা ভারতীয় উপদূতাবাসেও! আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে চুপ ইউনূস

bangladesh-on-fire-after-hadis-death-indian-embassy-attacked-too-yunus-silent-on-law-and-order

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: শান্তিতে নোবেল পাওয়া মহম্মদ ইউনূসের বাংলাদেশ (Bangladesh) এখন ফের অশান্ত। দেশের ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি (Osman Hadis Death) প্রায়াত। এই কট্টরপন্থী নেতা ভারত-বিরোধী হিসেবে বেশ কুখ্যত ছিলেন। ১২ ডিসেম্বর অজ্ঞাত পরিচয় আততায়ীর গুলিতে গুরুতর জখম হয়েছিলেন। ১৮ ডিসেম্বর সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। হাদির মৃত্যুর পর পরই উত্তাল হয়ে উঠেছে গোটা বাংলাদেশ। রাজধানী ঢাকার শাহবাগ সহ জায়গায় জায়গায় অশান্তি এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনায় উত্তাল হয়ে উঠেছে। দেশের একাধিক ভারতীয় উপদূতাবাসে হামলা করার অভিযোগও উঠেছে। ইতিমধ্যে রাজপথে নামানো হয়েছে পুলিশ এবং সেনাবাহিনী। পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। ভারত বিরোধী জনতার রোষ সামাল দিতে আসরে নেমেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মহম্মদ ইউনূস। ওই দেশে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিয়ে ইউনূস বলেন, “দেশের জনগণকে আমি ধৈর্য ধরতে বলব। হাদির মৃত্যুতে রাষ্ট্রীয় শোক পালন করা হবে।”

শৃঙ্খলা নিয়ে মুখ খোলেননি ইউনূস (Bangladesh)

হাদির মৃত্যর খবর জানাজানি হতেই গোটা বাংলাদেশে (Bangladesh) দাবানলের মতো আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। তবে আক্রশের মূল টার্গেট ভারত। তাই ঢাকা সহ একাধিক শহরে বিক্ষোভের আগুন জ্বলে ওঠে। উন্মত্ত জনতা আগুন লাগিয়ে দেয় প্রথম সারির সংবাদ মাধ্যম ‘প্রথম আলো’, ‘দ্য ডেইলি স্টার’-এর অফিসে। রোষ আবারও আছড়ে পড়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের ৩২ নম্বর ধানমন্ডির বাড়িতে। সেখানেও আগুন লাগানোর চেষ্টা করা হয়। দেশের আইন শৃঙ্খলা সম্পূর্ণ ভাবে ভেঙে পড়েছে। এই অবস্থায় নিরুপায় হয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মহম্মদ ইউনূস রাত ১১টা ১৫ মিনিটে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন। তিনি বলেন, “শনিবার দেশের সব সরকারি, সরকারের স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সরকারি এবং বেসরকারি ভবন, বিদেশে বাংলাদেশ হাইকমিশনের অফিসে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে। একই ভাবে শুক্রবার দেশের প্রত্যেক মসজিদ থেকে ওসমানের জন্য শোক প্রকাশ করা হবে। শনিবার দিনভর রাষ্ট্রীয় শোক পালন করা হবে। ওসমানের স্ত্রী এবং সন্তানদের দায়িত্ব সরকার গ্রহণ করবে।” তবে আইন শৃঙ্খলা নিয়ে মুখ খোলেননি ইউনূস। ভারত বিরোধী আন্দলন নিয়ে মুখ খোলেননি। শুক্রবার সন্ধ্যে বেলায় হাদির দেহ সিঙ্গাপুর থেকে বাংলাদেশে ফেরানো হবে। তবে দেহ ফেরার পর পরিস্থিতি আরও উত্তাল হওয়ার ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে।

রাজশাহীতে মজিবুর রহমানের বাড়ি ভাঙচুর

বিবিসির একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী জানা গিয়েছে, হাদির মৃত্যুর পরেই উন্মত্ত জনতা ঢাকার (Bangladesh) সংবাদ মাধ্যমকে টার্গেট করে। প্রথম আলো, দ্য ডেলি স্টার –এর মতো সংবাদ মাধ্যমের অফিসে জোর করে আগুন লাগিয়ে দেয়। সেই সঙ্গে চালানো হয় বিরাট ভাঙচুর। অফিসের ভিতরে আটকে থাকা সাংবাদিকদের উদ্ধার করা হয়। অবশ্য আটকে থাকা সাংবাদিকরা জানান, স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন সব জেনে শুনেই চুপ ছিলেন। পুলিশ কোনও রকম ভাবেই সহযোগিতা করেনি। আইন শৃঙ্খলা এখন চরম অবনিতে পরিণত হয়েছে। অপর দিকে খুলনায় এক সাংবাদিককে গুলি করে হত্যা করেছে উত্তেজিত জনতা। আবার ময়মনসিংহ জেলার এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। একই ভাবে রাজশাহীতে বঙ্গবন্ধু মজিবুর রহমানের একটি বাড়ি এবং আওয়ামি লিগের দফতরে ব্যাপক ভাঙচুর করা হয়। বিক্ষোভকারীদের আগ্রাসন থেকে রেহাই পায়নি দেশের প্রখ্যাত সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানট। রাতভর ছায়ানট ভবনে তাণ্ডব ও লুটপাট চলেছে। আগুনও লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। আছড়ে ভাঙা হয়েছে হারমোনিয়াম।

বেশির ভাগ বিক্ষোভ দেখানো হয় প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের বিরুদ্ধে। ভারতের বিরোধিতা করে দেওয়া হয় ভারত-বিরোধী নানা হিংসাত্মক স্লোগান। কট্টরপন্থীরা বৃহস্পতিবার রাতে চট্টগ্রামে ভারতীয় ভারতীয় সহকারী-হাইকমিশনারের বাসভবন  লক্ষ্য করে ছোড়া হয় ইট, পাটকেল। রাতেই দূতাবাসের সামনে উন্মত্ত ছাত্র-যুবরা অবস্থান করে। দিকে দিকে ফের ভারতের বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়াচ্ছে একদল। উল্লেখ্য গত ১৬ ডিসেম্বর ছিল বিজয় দিবস। যদিও অন্তর্বর্তী সরকার এই বিজয় দিবসকে বিজয় দিবস হিসেবে মানতে নারাজ। এনসিপির এক নেতা প্রকাশ্যে উত্তর-পূর্ব ভারতের ৭ রাজ্যকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন। ভারতও এই নিয়ে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। ভোটের আগে ভারত-বিরোধী আবহ তৈরি করতে কট্টরপন্থীরা ব্যাপক প্রচেষ্টা করছেন। বাংলাদেশে এই অশান্তির দিকে নজর রাখছে ভারত।

নির্বাচনকে ঘিরে হিংসা-হানাহানি

২০২৪ সালের ৫ অগাস্ট বাংলাদেশ (Bangladesh) থেকে হাসিনাকে চক্রান্ত করে কোটা বিরোধী আন্দোলনের নামে বিতারিত করা হয়। এরপর থেকেই ক্ষমতা চলে যায় কট্টর মৌলবাদী এবং জেহাদি সংগঠনের হাতে। অন্তর্বর্তী সরকারের মাথায় বসেন মহম্মদ ইউনূস। পাকিস্তানের আইএসআই এবং সেনাবাহিনীর উচ্চপদ কর্তাদের শুরু হয় অবাদ যাতায়েত। ১৯৭১ সালের পর থেকে যে রাস্তায় বাংলাদেশ হাটেনি সেই রাস্তায় শুরু হয় নতুন যাত্রা। ঢাকা-ইসলামাবাদ, করাচি- চট্টগ্রামের মধ্যে শুরু হয় আকাশপথ এবং জলপথের মাধ্যমে যাতায়েত। পাল্লা দিয়ে বাড়তে শুরু করে বাংলাদেশে রাজনৈতিক হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট। সবচেয়ে বেশি আক্রমণের শিকার হয় ওইদেশের সংখ্যা লঘু হিন্দুরা। দেশের আইন শৃঙ্খলা এখন চরম অবনতিতে পরিণত হয়েছে। গত দেড় বছরের বেশি সময়ে মৌলবাদী কট্টর সংগঠনগুলি আরও শক্তিশালী রূপ ধারণ করেছে। আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন। তাই নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে ভোট এবং প্রচারকে ঘিরে বাংলাদেশে রাজনৈতিক পারদ তত বেশি চড়ছে।

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share