Category: বিদেশ

Get updates on World News Headlines International News from the Madhyom news portal madhyom.com, West Bengal leading news portal Madhyom.com

  • Pakistan: এবার পাক সেনার কনভয়ে হামলা, নেপথ্যে কী সেই বালুচ বিদ্রোহীরা?

    Pakistan: এবার পাক সেনার কনভয়ে হামলা, নেপথ্যে কী সেই বালুচ বিদ্রোহীরা?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মাত্র চারদিন আগেই হাইজ্যাক করা হয়েছিল আস্ত একটা এক্সপ্রেস ট্রেন। পাকিস্তানের (Pakistan) বালুচিস্তানের ওই ঘটনার সেই রেশ মিলিয়ে যাওয়ার আগেই ফের খবরের শিরোনামে সেই বালুচিস্তানই (IED Blast)। এবার পাক সেনার কনভয়ে হল হামলা।

    আইইডি বিস্ফোরণ (Pakistan)

    শনিবার তুরবত শহরে সেনার কনভয়ে হল আইইডি বিস্ফোরণ। স্থানীয় সূত্রে খবর, কনভয়ে থাকা বেশ কয়েকজন সেনা জখম হয়েছেন। বিস্ফোরণের অভিঘাতে জখম সেনাদের উদ্ধার করে ভর্তি করা হয়েছে হাসপাতালে। যদিও এদিন সন্ধে পর্যন্ত হামলার দায় স্বীকার করেনি কেউই। ১১ মার্চ জাফর এক্সপ্রেস অপহরণের ঘটনায় হাত ছিল বালুচিস্তান লিবারেশন আর্মির। এদিনের ঘটনায়ও তাদের হাত রয়েছে বলেই অনুমান পাকিস্তান পুলিশের।

    বালুচ বিদ্রোহীদের হুঁশিয়ারি

    গত মঙ্গলবারই বালুচিস্তানের বোলানে মাশকাফ সুড়ঙ্গে জাফর এক্সপ্রেস হাইজ্যাক করে বালুচ বিদ্রোহীরা। পণবন্দি করা হয় শ’খানেক যাত্রীকে (IED Blast)। যাত্রীদের উদ্ধার করতে বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে অভিযান চলে প্রায় ৩০ ঘণ্টা ধরে। পাক সেনার দাবি, এই অভিযানে মৃত্যু হয়েছে সব বিদ্রোহীর। বিদ্রোহীদের পাল্টা দাবি, এই অভিযান চলার সময় সংঘর্ষে মৃত্যু হয়েছে ৩০ জন সেনার। এই ঘটনার পরেই বালুচ বিদ্রোহীরা হুঁশিয়ারি দেয়, পাক সেনা যদি তাঁদের ওপর হামলার চেষ্টা করে, তাহলে তাঁদের পরবর্তী নিশানা হবে ইসলামাবাদ। সেই হুঁশিয়ারির কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই হল বালুচিস্তানে সেনার কনভয়ে হামলা।

    শুক্রবার খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের (Pakistan) দক্ষিণে ওয়াজজিরিস্তানের একটি মসজিদে আত্মঘাতী হামলা হয়। ওই দিন দুপুরে আজম ওয়ারশাক বাইপাস রোডের মৌলানা আবদুল আজিজ মসজিদে প্রার্থনার সময় আইইডি বিস্ফোরণ ঘটে। সেই ঘটনায়ও সন্দেহের তির ছিল বালুচ বিদ্রোহীদের দিকেই।

    প্রসঙ্গত, অতীতেও এই রেলপথে বালুচ বিদ্রোহীরা হামলা চালিয়েছে রকেট কিংবা রিমোট পরিচালিত বোমা দিয়ে। এলাকায় যত হামলার ঘটনা ঘটেছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তার দায় স্বীকার করে নিয়েছে বালুচ বিদ্রোহীরা। গত বছরের অক্টোবর মাসে পাকিস্তান রেলওয়েজ কোয়েটা থেকে পেশওয়াল পর্যন্ত রেল পরিষেবা সংস্কারের কথা ঘোষণা (IED Blast) করেছিল। তার আগে দেড় মাসেরও বেশি সময় এই পথে রেল চলাচল বন্ধ ছিল (Pakistan)।

  • Pakistan Army: ভুল তথ্য দিচ্ছে পাক-সেনা, ২১৪ পণবন্দি হত, দাবি বালোচ বিদ্রোহীদের

    Pakistan Army: ভুল তথ্য দিচ্ছে পাক-সেনা, ২১৪ পণবন্দি হত, দাবি বালোচ বিদ্রোহীদের

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: গত মঙ্গলবারই ৪০০ জনেরও বেশি যাত্রীবাহি একটি ট্রেন হাইজ্যাক করে বালোচ বিদ্রোহীরা (Balochistan Liberation Army)। এরপরেই পাকিস্তান সরকারের তরফ থেকে দাবি করা হয় যে ৩৩ জন বালোচ বিদ্রোহীকে তারা হত্যা করতে পেরেছে। যদিও পাকিস্তানের (Pakistan Army) এই দাবিকে সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করেছে বালোচিস্তান লিবারেশন আর্মি। তারা জানিয়েছে, এমন বিবৃতি সম্পূর্ণভাবে মিথ্যা। গত বৃহস্পতিবার অর্থাৎ ১৩ মার্চ এই মর্মে বালোচিস্তান লিবারেশন আর্মি এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দিয়েছে। তারা জানিয়েছে, পাকিস্তানি সেনার সঙ্গে তাদের তীব্র লড়াই অব্যাহত রয়েছে। পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির মুখেও পড়তে হয়েছে বলে দাবি বিদ্রোহীদের। তাদের এও দাবি যে ২১৪ জন পণবন্দি পাক সেনাকে হত্যা করেছে তারা। এই পণবন্দিদের হত্যার দায় তারা চাপিয়েছে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর ওপরে।

    আলোচনায় না বসে পণবন্দিদের মৃত্যুকে নিশ্চিত করেছে পাক সেনা, তোপ বালোচ বিদ্রোহীদের

    এক্ষেত্রে বালোচিস্তান লিবারেশন আর্মি বলছে যে পাকিস্তান (Pakistan Army) সেনাবাহিনী তাদের সঙ্গে কখনও আলোচনায় বসতে চায়নি, যদি তারা আলোচনায় বসত, তাহলে এমনটা হত না। অর্থাৎ পণবন্দিদের মৃত্যুর দায় একেবারে পাকিস্তানের সেনার ওপরেই চাপাচ্ছে বালোচ বিদ্রোহীরা। প্রসঙ্গত, বালোচিস্তান লিবারেশন আর্মির মুখপাত্র হলেন জিয়ান বালোচ। তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে এক বিবৃতিতে বলেন, ‘‘পাকিস্তানের সেনাবাহিনীকে আমরা যে ৪৮ ঘণ্টা সময়সীমা দিয়েছিলাম। তারা সেটাকে উপেক্ষা করেছে। এই কারণেই এর ফল ভুগতে হয়েছে ওই রেল যাত্রীদের অর্থাৎ পণবন্দিদের। পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর এমন উপেক্ষার কারণেই মৃত্যু হয়েছে ওই পণবন্দিদের।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘৪৮ ঘণ্টার সময় সীমার মধ্যে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী তাদের দেশের নাগরিকদেরকে বাঁচাতে পারত। কিন্তু তারা সেটা করেনি।’’ একইসঙ্গে পাকিস্তান (Pakistan Army) সরকারকে তীব্র আক্রমণ করে বিএলএ মুখপাত্র জিয়ান বালোচ আরও বলেন, ‘‘পাকিস্তান প্রথম থেকেই একগুঁয়ে মনোভাব ঔদ্ধত্য ও স্পর্ধা দেখিয়ে গিয়েছে। যেমনটা তারা চিরকাল করে এসেছে। তারা এড়িয়ে গিয়েছে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনাগুলি। তাদের এই ধরনের কার্যকলাপের কারণেই তারা বাস্তবতাকে বুঝতে পারেনি। আর এটা না বোঝার কারণে ২১৪ জন পনবন্দিকে তারা মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে।’’

    শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে শহিদ হওয়া বালোচ বিদ্রোহীদের উদ্দেশে

    একই সঙ্গে বালোচিস্তান লিবারেশন আর্মি পাকিস্তানি (Pakistan Army) সেনার সঙ্গে যুদ্ধে তাদের যে সমস্ত সদস্যরা নিহত হয়েছেন, তাঁদের প্রতিও শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। বিএলএ-এর মুখপাত্র এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে জানিয়েছেন যে তাঁদের বারো জন মুক্তিযোদ্ধার প্রতি তাঁরা শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর (Pakistan Army) সঙ্গে যুদ্ধে শহিদ হওয়া ১২ জন মুক্তিযোদ্ধার প্রতি আমরা শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। যাঁরা শত্রুর বিরুদ্ধে এক অসাধারণ যুদ্ধ করতে সক্ষম হয়েছে। এই অবিস্মরণীয় যুদ্ধের কারণেই তাঁদের প্রতি আমরা শ্রদ্ধা জানাই। বুধবার রাতে তিনজন মুক্তিযোদ্ধা শহিদ হন। বৃহস্পতিবার রাতে আরও চারজন যোদ্ধা প্রাণ হারিয়েছেন। এছাড়াও মাজিদ ব্রিগেডের পাঁচ জন আত্মঘাতী বাহিনীর সদস্য প্রাণ উৎসর্গ করেছেন। তাঁরা শত্রুপক্ষকে উচিত জবাবও দিতে পেরেছেন। যার কারণে ইতিহাস তাঁদের সর্বদা মনে রাখবে।’’ বালোচিস্তান লিবারেশন আর্মির তরফ থেকে আরও দাবি করা হয়েছে যে তারা আন্তর্জাতিক আইন সীমার মধ্যেই কাজ করছেন।

    ভুল তথ্য দিচ্ছে পাক সেনা!

    গত মঙ্গলবার, গুদালার এবং পিরু কুনরির কাছে মাশকাফ টানেলের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল পেশোয়ারগামী জাফর এক্সপ্রেস। এই ট্রেন অপহরণ করে বিএলএ। জানা গিয়েছে, ট্রেনটি বালোচিস্তানের রাজধানী কোয়েটা থেকে আসছিল। গত বুধবার অর্থাৎ ১২ মার্চ পাকিস্তানি সেনাবাহিনী হাইজ্যাক করা জাফর এক্সপ্রেস থেকে সমস্ত পণবন্দিদের উদ্ধার অভিযান শেষ হয়েছে বলে ঘোষণা করে। বিবৃতিতে বলা হয় অভিযানের সময় ৩৩ জন বিদ্রোহী নিহত হয়েছেন এবং ২১ জন যাত্রী এবং ৪ জন পাকিস্তানি সেনা সদস্য প্রাণ হারিয়েছেন। ট্রেনটিতে মোট ৪৪০ জন ছিলেন বলে জানায় পাক সেনা। কিন্তু পাক সেনার দাবি কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই উড়িয়ে দেয় বিএলএ। তাদের বক্তব্য ছিল, জাফর এক্সপ্রেস অভিযানে পাক সেনা চূড়ান্ত ব্যর্থ হয়েছে। নিজেদের সম্মান রক্ষার্থে তাই তারা বাস্তবকে অস্বীকার করছে এবং ভুল তথ্য ছড়াচ্ছে পাক সেনা। জানা গিয়েছে, বালোচ বিদ্রোহীরা সাধারণ যাত্রীদের মানবঢাল হিসাবে ব্যবহার করেছিলেন। বিস্ফোরক ভর্তি জ্যাকেট পরে যাত্রীদের মধ্যে মিশে গিয়েছিলেন বেশ কিছু বালোচ বিদ্রোহী। তার ফলে পাক বাহিনীকে যথেষ্ট বেগ পেতে হয় ওই অভিযানে। উদ্ধারকাজ নিয়ে তৈরি হয় জটিলতা। তবে পাক নিরাপত্তা বাহিনী (Pakistan Army) পরে জানায়, স্নাইপার বাহিনীকে কাজে লাগিয়ে বিদ্রোহীদের কৌশলকে ব্যর্থ করে দেওয়া হয়েছে। পরে অবশ্য জাফর এক্সপ্রেস অপহরণের নেপথ্যে আফগানিস্তানের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ করেছিল পাকিস্তান। কিন্তু সেখানকার তালিবান সরকার সাফ জানিয়ে দেয়, এই ঘটনায় তাদের আদৌ কোনও যোগ নেই।

  • Pakistan Train Hijack: বালোচ আন্দোলনের জন্য দায়ী জিন্নার বিশ্বাসঘাতকতা!

    Pakistan Train Hijack: বালোচ আন্দোলনের জন্য দায়ী জিন্নার বিশ্বাসঘাতকতা!

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দিন তিনেক আগে পাকিস্তানের বালোচিস্তানে হাইজ্যাক (Pakistan Train Hijack) করা হয়েছিল জাফর এক্সপ্রেস। পণবন্দি করা হয়েছিল বহু যাত্রীকে। পাকিস্তানের অভিযোগ, জাফর এক্সপ্রেস অপহরণের ছক কষা হয়েছে আফগানিস্তান থেকে (Baloch Movement)। ট্রেন অপহরণের পর থেকেই এমনই অভিযোগ ও দাবি তুলেছে পাকিস্তান। ইসলামাবাদের অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও মিথ্যে বলে পাল্টা দাবি তালিবানের।

    বালোচিস্তান (Pakistan Train Hijack)

    পাকিস্তানের চারটি প্রদেশের মধ্যে সবচেয়ে বড় ও কম জনবহুল এলাকা বালুচিস্তান। ১১ মার্চ এখান থেকেই জাফর এক্সপ্রেস ছিনতাই করেছিল বালোচ বিদ্রোহীরা। পণবন্দি করা হয়েছিল নিরাপত্তা কর্মী-সহ ১০০ জন যাত্রীকে। এই বিদ্রোহের মূল কারণ বালোচবাসীর সঙ্গে পাকিস্তানের জনক মহম্মদ আলি জিন্নার বিশ্বাঘাতকতা। ১৯৪৭ সালের ১৪ অগাস্ট জন্ম হয় পাকিস্তানের। তার ঠিক পরের বছর থেকেই সদ্যোজাত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে হাতে অস্ত্র তুলে নেন বালোচ জাতীয়তাবাদীরা। তারপর থেকে অশান্তি লেগেই রয়েছে পাকিস্তানের এই অংশে। ব্যাপক হিংসার ঘটনা ঘটেছে ১৯৫৮-৫৯, ১৯৬২-৬৩, ১৯৭৩-৭৭ সালে। ২০০৩ সাল থেকে প্রায়ই ঘটছে হিংসার ঘটনা।

    হাইজ্যাক আস্ত এক্সপ্রেস ট্রেন

    চমকে দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটল গত ১১ মার্চ। এদিন বালুচ বিদ্রোহীরা হাইজ্যাক করে আস্ত একটা এক্সপ্রেস ট্রেন। পণবন্দি করা হয় যাত্রীদের। বালুচিস্তান একটি শুষ্ক এলাকা (Pakistan Train Hijack)। খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ। ঐতিহাসিকভাবে পাকিস্তানের পাঞ্জাব-প্রভাবিত রাজনীতির দ্বারা উপেক্ষিত এলাকা। বালুচবাসী অর্থনৈতিকভাবে নিপীড়িত। তাদের খনিজ সম্পদ আহরণ করে কেন্দ্রীয় সরকারের অর্থায়নে ব্যবহার করা হয়েছে। অভিজ্ঞ মহলের মতে, বালুচবাসীর অসন্তোষের অন্যতম কারণ এটাই। বালুচবাসীর অসন্তোষের অন্যতম লক্ষ্য হল গওদর বন্দর। চিনের সহায়তায় এই বন্দরের উন্নয়ন করছে পাকিস্তান। বালুচ বিদ্রোহীরা চিনা কর্মীদর ওপর আক্রমণ চালিয়েছে। প্রসঙ্গত, গওদর বন্দরটি চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডরের একটা অংশ।

    রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের সাক্ষী

    ‘দ্য ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স রিভিউ’য়ে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “বালোচ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের নেতৃত্ব বিভক্ত। ফলস্বরূপ, বালোচ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন তার লক্ষ্য বা কৌশলের ক্ষেত্রে একক নয়।” সশস্ত্র বিদ্রোহের সর্বশেষ পর্বটি শুরু হয় ২০০৪ সালে। ২০০৬ সালে পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে প্রভাবশালী বালোচ নেতা আকবর খান বুগতি নিহত হওয়ার পর এটি আরও তীব্রতা পায় (Baloch Movement)। বুগতি বেশি স্বায়ত্তশাসন, সম্পদের নিয়ন্ত্রণ এবং বালুচিস্তানের প্রাকৃতিক গ্যাস আয় থেকে ন্যায্য ভাগ দাবি করছিলেন। প্রসঙ্গত, এর আগে সাতের দশকে বালোচবাসী বিদ্রোহের সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের সাক্ষী হয়েছিলেন (Pakistan Train Hijack)।

    রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের সাক্ষী

    ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার দাবিতে ব্যাপক আন্দোলন শুরু হয় তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে। ওই বছরই স্বাধীনতা লাভ করে বাংলাদেশ। তার পরেই অক্সিজেন পান বালোচবাসী। বালোচিস্তানে ন্যাশনাল আওয়ামি পার্টির নেতারা স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে উদ্দীপিত হয়েছিলেন। একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, মারি, মেঙ্গল এবং বুগতি গোত্রপ্রধানদের নেতৃত্বে প্রায় ৫৫ হাজার বালোচ যোদ্ধা ৮০ হাজার পাকিস্তানি সেনার বিরুদ্ধে লড়াই করেছিল। পাকিস্তান বিমান বাহিনী বালোচিস্তানের বিভিন্ন গ্রামে বোমা বর্ষণ করে। তার ফলে নিহত হন হাজার হাজার সাধারণ বালোচবাসী। একাত্তরের সংঘর্ষ এমন পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিল যে ইরান আশঙ্কা করেছিল বালোচ জাতীয়তাবাদের প্রভাব তাদের এলাকায় হয়ত ছড়িয়ে পড়বে। সেই আশঙ্কায়, পাকিস্তানকে সামরিক সহায়তা দিয়েছিল তারা।

    বালোচ বিদ্রোহীদের জন্য মজুত করা অস্ত্র উদ্ধার

    ১৯৭৭ সালে জেনারেল জিয়াউল হক সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ভুট্টোকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেন। পরে উপজাতিদের ক্ষমা ঘোষণা করা হয়। বালোচিস্তান থেকে প্রত্যাহার করা হয় সেনা। তার পরেই বালোচিস্তানে অবসান ঘটে সশস্ত্র সংগ্রামের। প্রথমে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলি ভুট্টো এই দাবিগুলো প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। তার জেরেই ঢেউ ওঠে প্রতিবাদের (Baloch Movement)। ১৯৭৩ সালে ভুট্টো বালুচিস্তানের প্রাদেশিক সরকার প্রধান আকবর খান বুগতিকে বরখাস্ত করেন। তিনি দাবি করেন, ইরাকি দূতাবাস থেকে বালোচ বিদ্রোহীদের জন্য মজুত করা অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এই অজুহাতে তিনি জানিয়ে দেন, বালুচিস্তানে হবে ব্যাপক সামরিক অভিযান। এরই ফলে একটি পূর্ণাঙ্গ সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু হয়। এই সংগ্রাম চলেছিল ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত, টানা চার বছর ধরে। এই ঘটনা চতুর্থ বালুচিস্তান সংঘাত নামে পরিচিত (Pakistan Train Hijack)।

    “ওয়ান ইউনিট” পরিকল্পনা

    ১৯৫৪ সালে পাকিস্তান চালু করে “ওয়ান ইউনিট” পরিকল্পনা। এর মাধ্যমে দেশটির প্রদেশগুলি পুনর্গঠিত করা হয়। এই পরিকল্পনায় বালোচিস্তানকে অন্যান্য প্রদেশের সঙ্গে একীভূত করা হয়। তার জেরে স্বায়ত্তশাসন খর্ব হয় বালোচিস্তানের। এতেই খেপে যান বালোচ নেতারা। ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয় নেতাদের মধ্যে। কালাতের খান, নওরোজ খান ১৯৫৮ সালে স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। শুরু করেন পাকিস্তান বাহিনীর বিরুদ্ধে গেরিলা যুদ্ধ। ১৯৫৯ সালে পাকিস্তান নওরোজ খানকে আত্মসমর্পণে রাজি করায়। সেজন্য পাক সরকার তাঁর সঙ্গে প্রতারণা করে বলে অভিযোগ। তাঁকে ক্ষমা করা হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। যদিও আত্মসমর্পণ করার পর রুদ্রমূর্তি ধারণ করে তৎকালীন পাক সরকার। প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে তাঁকে ও তাঁর ছেলেদের গ্রেফতার করা হয়। মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় তাঁর পাঁচ আত্মীয়কে।

    ক্ষোভের আগুন উসকে দেয়

    পাক সরকারের এই বিশ্বাসঘাতকতা বালোচবাসীদের মধ্যে ক্ষোভের আগুন আরও উসকে দেয়। যার জেরে আরও জোরালো হয় স্বাধীনতাকামী আন্দোলন। তবে বালোচিস্তান বিদ্রোহ শুরুর বীজ অঙ্কুরিত হয় ১৯৪৭ সালে, পাকিস্তান যখন বিচ্ছিন্ন হয় ভারতের থেকে। বালোচিস্তান অঞ্চলটি আগে চারটি দেশীয় রাজ্য হিসেবে ছিল—কালাত, খারান, লাস বেলা এবং মাকরান। সেই সময় তাদের সামনে তিনটি বিকল্প ছিল—ভারতের সঙ্গে যোগদান, পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত হওয়া, আর না হয় স্বাধীনতা বজায় রাখা। জিন্নার প্রভাবে তিনটি রাজ্য পাকিস্তানের সঙ্গে মিশে যায় (Pakistan Train Hijack)। কালাতের শাসক খান মীর আহমেদ ইয়ার খান, যিনি খান অব কালাত নামেও পরিচিত, তিনিই বেছে নেন স্বাধীনতা।

    জিন্নাকে তার আইনি উপদেষ্টা

    ১৯৪৬ সালে খান অব কালাত জিন্নাকে তার আইনি উপদেষ্টা হিসেবে নিযুক্ত করেন। তিনি যাতে ব্রিটিশ ক্রাউনের সামনে তাঁর মামলা উপস্থাপন করতে পারেন, তাই এই ব্যবস্থা। ১৯৪৭ সালের ৪ অগাস্ট দিল্লিতে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে বালোচবাসীর স্বাধীনতার সিদ্ধান্ত সমর্থিত হয়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন লর্ড মাউন্টব্যাটেন, খান অব কালাত এবং জওহরলাল নেহরু। ছিলেন জিন্না স্বয়ংও। জিন্নার জোরালো দাবির ফলে খারান ও লাস বেলাকে কালাতের সঙ্গে একীভূত করে একটি সম্পূর্ণ বালুচিস্তান গঠনের পরিকল্পনা করা হয় (Baloch Movement)। প্রসঙ্গত, বালোচরা কখনওই “ওয়ান ইউনিট” নীতিকে মেনে নেয়নি। পাঁচ বছরের মধ্যেই, ১৯৬৩ সালে বালুচিস্তানে তৃতীয় বালোচ বিদ্রোহ দেখা দেয়।

    বিদ্রোহের লক্ষ্য

    শের মুহাম্মদ বিজরানি মারির নেতৃত্বে, এই বিদ্রোহের লক্ষ্য ছিল বালোচিস্তানের গ্যাস সম্পদের রাজস্ব ভাগাভাগির জন্য পাকিস্তানের ওপর চাপ সৃষ্টি করা, “ওয়ান ইউনিট” পরিকল্পনার বিলুপ্তি এবং বালোচ বিদ্রোহীদের মুক্তি। এই বিদ্রোহ শেষ হয় ১৯৬৯ সালে সাধারণ ক্ষমার মাধ্যমে। বন্দি বালোচ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের মুক্তি দেওয়া হয়। ১৯৭০ সালে “ওয়ান ইউনিট” নীতি বাতিল করার পর বালোচিস্তানকে পাকিস্তানের চারটি প্রদেশের একটি হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। পরে অবশ্য স্বাধীনতা লাভ করে বালোচিস্তান। তবে সেটা মাত্র ২২৬ দিনের জন্য। পরে বালুচবাসীর ইচ্ছায় নয়, বরং জিন্নার বিশ্বাসঘাতকতা ও ইসলামাবাদের সামরিক শক্তির মাধ্যমে পাকিস্তানের সঙ্গে যুক্ত হয়। ৭৫ বছর আগের এই বিশ্বাসঘাতকতা ও অঞ্চল (Baloch Movement) এবং জনগণের শোষণ আজও বালুচ জনগণের সশস্ত্র প্রতিরোধের মূল কারণ হিসেবে রয়ে গেছে (Pakistan Train Hijack)।

  • ISIS: ইরাকের বাহিনীর অভিযানে সিরিয়াতে খতম আইসিস প্রধান আবু খাদিজা

    ISIS: ইরাকের বাহিনীর অভিযানে সিরিয়াতে খতম আইসিস প্রধান আবু খাদিজা

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: খতম বিশ্বের কুখ্যাত জঙ্গি আবদাল্লা মাকি মোসলেহ আল-রিয়াফি ওরফে আবু খাদিজা। ইসলামিক স্টেট (ISIS) জঙ্গি সংগঠনের প্রধান ছিলেন তিনি। ইসলামিক স্টেট-এর প্রধানের নিকেশের খবরটি ইতিমধ্যে নিশ্চিত করেছেন ইরাকের প্রধানমন্ত্রী মহম্মদ শিয়া আল-সুদানি। জানা গিয়েছে, পশ্চিম ইরাকে (Iraq) আনবার প্রদেশের ওপর আকাশ পথে অভিযান চালানো হয়েছিল। গত বৃহস্পতিবার রাতে এই অভিযান হয়। আবু খাদিজা’র মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হয় শুক্রবার।

    কী বললেন ইরাকের (Iraq) প্রধানমন্ত্রী?

    শুক্রবার নিজের এক্স হ্যান্ডেলে ইরাকের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘অন্ধকার ও সন্ত্রাবাদের শক্তিকে পরাজিত করে লাগাতার জয়ী হয়ে চলেছে ইরাক৷’’ একইসঙ্গে নিজের পোস্টে আইএস (ISIS) জঙ্গি সংগঠনের নেতা আবদাল্লা মাকি মোসলেহ আল-রিয়াফিকে ইরাক ও বিশ্বের অন্যতম ভয়ঙ্কর জঙ্গি হিসাবে উল্লেখ করেছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী মহম্মদ শিয়া আল-সুদানি তাঁর পোস্টে ইরাকের গোয়েন্দা সংস্থার কর্মীদের প্রশংসা করে লেখেন, ‘‘ইরাকি ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স সার্ভিসের হিরোদের সঙ্গে জয়েন্ট অপারেশনস কমান্ড এবং ইন্টারন্যাশনাল কোয়ালিশন ফোর্সেস একসঙ্গে কাজ করে। সকলের সক্রিয় সহযোগিতায় জঙ্গি (ISIS) আবদাল্লা মাকি মোসলেহ আল-রিয়াফি ওরফে আবু খাদিজাকে নিকেশ করা সম্ভব হয়েছে। তিনি তথাকথিত ডেপুটি কালিফ ছিল। ইরাক ও সিরিয়ার তথাকথিত গভর্নরের পদে ছিল।’’ আবু খাদিজাকে ইরাক ও বিশ্বের অন্যতম নৃশংস জঙ্গি বলে অভিহিত করেছেন তিনি।

    কী বললেন ইরাকের বিদেশমন্ত্রী?

    অন্যদিকে, ইরাকের বিদেশমন্ত্রী ফৌয়াদ হুসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘সিরিয়া ও ইরাক একই চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। বিশেষত আইএস জঙ্গিদের বিষয়ে।’’ ইরাকের বিদেশমন্ত্রী আরও বলেন, ‘‘জঙ্গি মোকাবিলায় জর্ডনের রাজধানী আম্মানে একটি বৈঠক করেছে সিরিয়া, ইরাক, তুরস্ক, জর্ডন এবং লেবানন। এই দেশগুলি একসঙ্গে একটি অভিযান চালানোর কথা ভাবনাচিন্তা করেছে। খুব শীঘ্রই তারা কাজ শুরু করবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী।’’ ঘটনাচক্রে শুক্রবারই সিরিয়ার শীর্ষস্তরীয় এক কূটনীতিক ইরাক সফরে আসেন। দু’দেশ জঙ্গি সংগঠন আইএস-এর বিরুদ্ধে একসঙ্গে কাজ করার সংকল্প গ্রহণ করে। তখনই ইরাক-সিরিয়ার আইএস প্রধান আবদাল্লা মাকি মোসলেহ আল-রিয়াফির মৃত্যুর খবরটিও প্রকাশ্যে আনা হয়।

  • Holi 2025: শুধু ভারতই নয়, বিশ্বের এই সব দেশেও মহা উৎসাহে পালিত হয় হোলি

    Holi 2025: শুধু ভারতই নয়, বিশ্বের এই সব দেশেও মহা উৎসাহে পালিত হয় হোলি

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আজ দেশজুড়ে পালিত হচ্ছে হোলি (Holi 2025)। রঙের এই উৎসবে দেশবাসী মেতে ওঠেন। সঙ্গে থাকে নানা রকমের সুস্বাদু মিষ্টি। হোলি উৎসবের উদযাপন শুধুমাত্র রঙের উৎসব নয় বরং  এটি প্রেম ও ঐক্যেরও প্রতীক বলেও মানা হয়। পশ্চিমবঙ্গে পালিত হয় দোল। বাকি দেশে এর নাম হোলি। তবে দেশের বাইরেও হোলি উৎসব পালন করেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। ভারত (India) ছাড়াও যে দেশগুলিতে হোলি উৎসব (Holi 2025) সাড়ম্বরে পালিত হয়, সে নিয়েই আজকের আলোচনা।

    ১. নেপাল

    ভারতের প্রতিবেশী দেশ হল নেপাল। হিন্দু ঐতিহ্যের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক রয়েছে এই দেশটির। পৌরাণিক কাহিনী অনুযায়ী এই দেশেই বিবাহ হয়েছিল রামচন্দ্রের। নেপালে হোলির পরিচয় ফাগু পূর্ণিমা নামে। নেপাল জুড়ে অত্যন্ত উৎসাহের সঙ্গে এই উৎসব উদযাপিত হয়। কাঠমাণ্ডু এবং পোখরার মতো শহরে, মানুষ রাস্তায় জড়ো হয়ে রঙ নিয়ে মেতে ওঠেন উৎসবে। গানের তালে তালে নাচ এবং উৎসবের পরিবেশে চলে হোলি উদযাপন। রঙ মেশানো জলের বেলুন এবং রঙিন আবির নিয়ে হোলি উৎসবে (Holi 2025) মেতে ওঠেন নেপালের বাসিন্দারা।

    ২. মরিশাস

    মরিশাসেও প্রচুর সংখ্যক প্রবাসী ভারতীয় রয়েছেন। মূলত উত্তর প্রদেশ এবং বিহারের বাসিন্দারাই এখানে বসতি গড়েছিলেন। এই দেশেও ধুমধাম করে চলে উৎসবের পালন। ভজন-কীর্তন, হোলিকা দহন এবং রঙ খেলায় মেতে ওঠেন মরিশাসের হিন্দুরা (Holi 2025)। হিন্দু প্রধান মরিশাসে হোলির গুরুত্ব এতটাই যে এই দিনটিকে সরকার জাতীয় ছুটি বলে ঘোষণা করেছে।

    ৩. ফিজি

    ফিজিতেও বিরাট সংখ্যায় প্রবাসী ভারতীয়রা থাকেন। মূলত উত্তরপ্রদেশ এবং বিহার থেকে আসা প্রবাসী ভারতীয়রাই থাকেন এখানে। ফিজিতে হোলি একটি জাতীয় উৎসব। এখানে ঐতিহ্যবাহী গান, নাচ এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে পালিত হয় হোলি। তবে কেবল ভারতীয় সম্প্রদায়ই নয়, স্থানীয় ফিজিয়ান জনগোষ্ঠীও হোলিতে অংশগ্রহণ করে।

    ৪. পাকিস্তান

    দেশভাগের পরে ইসলামিক দেশ হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে পাকিস্তান। তারপরে আজও এই দেশ থেকে হিন্দু নির্যাতনের খবর সামনে আসে। তবে এসব ভীতিকে উপেক্ষা করেই পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশ, করাচি, লাহোর এবং অন্যান্য অঞ্চলে অনেক হিন্দুরা হোলি উদযাপন করেন। হিন্দু মন্দির ও অন্যান্য ধর্মীয় কেন্দ্রগুলিতে জমকালো হোলি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে মানুষজন রঙিন আবির নিয়ে ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানে অংশ নেয়। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে, এই উদযাপন আরও বেশি জনপ্রিয়তা।

    ৫. বাংলাদেশ

    সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতনের একাধিক ঘটনা সামনে এসেছে। তবে এখানকার হিন্দুরা হোলিতে মেতে ওঠেন অত্যন্ত সাড়ম্বরে। তবে চলতি বছরে ইউনূস জমানায় হোলি কতটা শান্তিপূর্ণ হবে হোলি, সে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে! বাংলাদেশের ঢাকা, চট্টগ্রাম এবং সিলেটের মতো শহরে, হিন্দুরা সাড়ম্বরে পালন করে হোলি। বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যেও হোলি উদযাপিত হয়। এটি দোল পূর্ণিমা বা বসন্ত উৎসব নামেও পরিচিত, এখানে মানুষজন রঙ নিয়ে উৎসবে মেতে ওঠেন। বিশেষ পুজোয় আয়োজন করা হয় এখানে। মন্দিরগুলিতে হোম-যজ্ঞ করা হয়।

    ৬. ইন্দোনেশিয়া

    এই দেশে হোলি নয় বরং ‘প্রোহিয়ন’ নামে পালন হয় হোলি উৎসব। ইন্দোনেশিয়ার মানুষজন রঙ নিয়ে নাচে। নাচ-গানের মাধ্যে দিয়ে একে অপরকে রাঙিয়ে তোলেন ইন্দোনেশিয়ার মানুষ।

    ৭. আফ্রিকা মহাদেশ

    ইন্দোনেশিয়ার পর হোলি খেলার তালিকায় রয়েছে আফ্রিকা মহাদেশে। এই দেশে বসবাসকারী হিন্দু সম্প্রদায়ের মাধ্যমে হোলি উদযাপন করা হয়। বিশেষত মরিশাস, মোজাম্বিক এবং দক্ষিণ আফ্রিকার লোকেরা সব থেকে বেশি হোলি খেলায় যোগ দেন।

    ৮. আমেরিকা

    আমেরিকার বেশ কয়েকটি শহরেও হোলি উদযাপন করা হয়। বিশেষত আমেরিকায় বসবাসকারী ভারতীয় নাচের দলগুলি এদিন নাচ-গানের মধ্যে দিয়ে হোলি উদযাপন করা হয়।

    ৯. ইউরোপ মহাদেশ

    ইউরোপের বেশ কিছু দেশে পালন করা হয় হোলি। বিশেষ করে ব্রিটেনে হোলি খুবই জনপ্রিয়। ব্রিটেনে প্রবাসী ভারতীয়রা হোলিতে অংশ নেন।

    ১০. ফাগওয়া

    সাদা পোশাক পরে এই দেশের মানুষজন আনন্দে মেতে ওঠেন হোলি উৎসবে। এই উৎসব বসন্তের আগমনকে চিহ্নিত করে এবং এটি ওই দেশে একটি জাতীয় ছুটির দিন।

    ১১. ত্রিনিদাদ ও টোবাগো

    ঐতিহ্যবাহী গান এবং নাচের মাধ্যমে উদযাপিত এই হোলি। হোলিকা দহনের অংশ হিসেবে বৃক্ষরোপণও করা হয় এই দেশে।

    ১২. গায়ানা

    এই দেশের হিন্দু মন্দিরগুলিতে ধুমধাম করে পালিত হয় হোলি। এই উৎসবে সকল জাতি ও ধর্মের মানুষ সামিল হন।

  • India: মৌলবাদীদের রোষে বাংলাদেশের সেনাপ্রধান! ওয়াকার-উজ-জামানকে কীভাবে সাহায্য করছে ভারত?

    India: মৌলবাদীদের রোষে বাংলাদেশের সেনাপ্রধান! ওয়াকার-উজ-জামানকে কীভাবে সাহায্য করছে ভারত?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশের সেনাপ্রধান (Bangladesh Army Chief) জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের উপর বিরাগভাজন ইসলামপন্থীরা। তার কারণটা কী? ২০২৪ সালের ৫ অগাস্ট যখন গণভবনের দখল নেয় ইসলামপন্থীরা, সেসময় তাঁরা ভেবেছিলেন শেখ হাসিনাকে ধরে ফেলবেন। পরবর্তীকালে প্রকাশ্যে তাঁকে ফাঁসি দেবে। কিন্তু ইসলামপন্থীদের এই পরিকল্পনাকে বাস্তবায়িত হতে যিনি দেননি তাঁর নাম জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। যিনি বর্তমানে বাংলাদেশের সেনাপ্রধান। এই সেনাপ্রধানের উদ্যোগেই শেখ হাসিনা তাঁর বোনকে সঙ্গে নিয়ে দেশ ছাড়েন। আশ্রয় নেন ভারতে (India)। গত সপ্তাহতেই বাংলাদেশের পাকিস্তানপন্থীরা জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানকে সরিয়ে সেদেশের ১ লাখ ৬৩ হাজার সেনার উপরে নিয়ন্ত্রণের পরিকল্পনা করেছিল। কিন্তু সেই পরিকল্পনাকেই ভেস্তে দিয়েছে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা। এমনটাই জানা গিয়েছে সূত্র মারফত। বাংলাদেশ সেনাপ্রধানের বিরুদ্ধে এই অভ্যুত্থান নেওয়ার চেষ্টা ব্যর্থ করার পরেই বেশ চিন্তায় পড়েছে পাকিস্তানের আইএসআই।

    বাংলাদেশে এখনও ইউনূস সরকারের কাছে নতি স্বীকার সেনা (India)

    পাক গোয়েন্দাদের হতাশ হওয়ার কারণ হল জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর সঙ্গে বাংলাদেশের সেনার কোনও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলতে চাননি। কারণ তিনি মনে করতেন ১৯৭১ সালের যুদ্ধে এরাই বাংলাদেশের বিরোধিতা করেছিল। ৫ অগাস্টের পর থেকে সারা বাংলাদেশ জুড়ে যে অবিচার ও অনাচার চলছে তার কাছে আত্মসমর্পণ করেছে বাংলাদেশের সব প্রতিষ্ঠানই। শুধুমাত্র কোনওভাবে নতি স্বীকার করেনি বাংলাদেশের সেনা। এই কারণেই বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের ক্ষোভের মুখে পড়তে হয় জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানকে। একইসঙ্গে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকাতে একটি সেনার অনুষ্ঠানে যোগ দেন সেনাপ্রধান। সেখানেই তিনি ইউনূস সরকারের বিরুদ্ধে প্রচ্ছন্ন সমালোচনা করেন। নিজের বক্তব্যে সেনা প্রধান দেশে শান্তি ও ঐক্য স্থাপনের কথা বলেন।

    জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান হলে আদতে শেখ হাসিনার আত্মীয়

    জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান হলেন আদতে শেখ হাসিনার আত্মীয়। তাঁকে সর্বদাই অরাজনৈতিক এবং পেশাদার সেনা হিসেবেই দেখা হয়। মনে করা হয় যে তিনি ভারতের (India) প্রতি অনুকুল মনোভাব পোষণ করেন। এইসবের কারণেই পাকিস্তানপন্থীদের ও বাংলাদেশের ইসলামপন্থী রাজনীতিবিদদের ক্ষোভের কারণ হয়ে উঠেছেন তিনি। গত ২১ জানুয়ারি আইএসআই প্রধান জেনারেল আশিম মালিক ঢাকা সফর করেন। মনে করা হয় জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান এই সফরের বিরুদ্ধে ছিলেন। কিন্তু ইউনূস প্রশাসনের সামনে তাঁকে নতি করতে হয়। সেনাপ্রধানের আপত্তি সত্ত্বেও এই সফর হয়।

    ভারতের (India) পরামর্শেই আফ্রিকা সফর

    জানা গিয়েছে, ভারতের পরামর্শেই বাংলাদেশের জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান মধ্য আফ্রিকার প্রজাতন্ত্রের সফর করেন গত ৩ মার্চ। সেখানেই তিনি জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা বাহিনীর সঙ্গে বৈঠক করেন। একই সঙ্গে জাতিসংঘের মহাসচিবের বিশেষ প্রতিনিধির সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ হয়। মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গেও তাঁর একপ্রস্থ বৈঠক হয় বলে খবর। এখন দেখার বাংলাদেশের সেনার মধ্যে জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানকীভাবে পাকিস্তানপন্থীদের সরিয়ে রাখেন।

  • Balochistan Liberation Army: পাক সেনা বালোচ জঙ্গিদের ভিন্ন মত! সত্যি আড়াল করছে পাকিস্তান, কী অবস্থা জাফর এক্সপ্রেসের?

    Balochistan Liberation Army: পাক সেনা বালোচ জঙ্গিদের ভিন্ন মত! সত্যি আড়াল করছে পাকিস্তান, কী অবস্থা জাফর এক্সপ্রেসের?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পাক সেনা সকালে দাবি করেছে, অভিযান শেষ। জঙ্গি মুক্ত জাফর এক্সপ্রেস (Pakistan Train Hijack)। মুক্ত সমস্ত পণবন্দী। ঘটনায় ৩৩ জঙ্গি নিহত হয়েছে। তারপরই বালোচদের পাল্টা ঘোষণা, পাক সেনা মিথ্যে কথা বলছে। বালোচ লিবারেশন আর্মির (Balochistan Liberation Army) পাল্টা দাবি, ১৫৪ জন বন্দী এখনও তাদের কবজায় আছে। সব মিলিয়ে উত্তেজনা ক্রমশ বাড়ছে। দাবি, পাল্ট দাবিতে উত্তপ্ত পাকিস্তান।

    পাক সেনার দাবি

    পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ জানান, সশস্ত্র বাহিনী সব জঙ্গিকে হত্যা করেছে। সব যাত্রীকে নিরাপদে উদ্ধার করে বুধবার সন্ধ্যায় সফলভাবে অভিযান শেষ করেছে সেনা। ঘটনাস্থলে উপস্থিত ৩৩ জঙ্গির সবাই নিহত হয়েছে। তিনি বলেন, “খবর পাওয়ার পরই উদ্ধার অভিযান শুরু হয়। খুব সতর্কতার সঙ্গে এগোতে হয়েছে। কারণ বিএলএ জঙ্গিরা স্যাটেলাইট ফোনে আফগানিস্তানে তাদের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিল।’’ ট্রেনে মহিলা ও শিশুদের নিরাপদে বের করে আনাই ছিল সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। প্রথমেই আত্মঘাতী জঙ্গিদের খতম করে পাকিস্তানি সেনার স্নাইপাররা। যাতে আচমকা বিস্ফোরণে তারা গোটা ট্রেন উড়িয়ে দিতে না পারে। এরপর একে একে ট্রেনের সমস্ত কামরা খালি করা হয়। নির্মূল করা হয় বালোচ জঙ্গিদের। বিএলএ যাত্রীদের মানবঢাল বানিয়ে রেখেছিল। তাই যে কোনও মূল্যে সাধারণ মানুষকে বাঁচানোই পাকিস্তানি সেনার প্রথম কাজ। এমনটাই বলেছেন আহমেদ শরিফ।

    মুক্ত পণবন্দির দাবি

    হামলা থেকে কোনওরকমে প্রাণ বাঁচিয়ে ফিরেছেন মুশতাক মহম্মদ। তিনি বলেন, “আচমকাই বিশাল বিস্ফোরণ হল। তারপরই এলোপাথাড়ি গুলি চলতে শুরু করল। এই দৃশ্য আজীবন মনে থাকবে।” জাফর এক্সপ্রেসে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে পেশোয়ার যাচ্ছিলেন ইশাক নূর। তিনি বলেন, “গুলির আওয়াজ পেতেই সন্তানকে বুকে জড়িয়ে ধরি। স্ত্রীও তাই করেন। গুলি লাগলে আমাদের লাগুক। সন্তানদের যেন কিছু না হয়।’’ মুশতাক জানান, জঙ্গিরা সবার পরিচয়পত্র খুঁটিয়ে দেখে কয়েকজনকে আলাদা সরিয়ে নিয়ে যায়। তাঁর কথায়, “আমাদের কামরার সামনে ৩ জন জঙ্গি পাহারায় ছিল। তারা বলে দিয়েছিল, সাধারণ নাগরিক, বৃদ্ধ, মহিলা এবং বালোচদের কোনও ক্ষতি হবে না।’’ সন্ধ্যা নাগাদ বন্দীদের এক এক করে ছাড়তে শুরু করে বিএলএ। মুক্ত পণবন্দিদের কথায়, ট্রেনের ভিতর সারি সারি লাশ পড়ে রয়েছে। অভিযানের সময় যাঁরা নিহত হয়েছেন বলে অনুমান।

    বালোচ লিবারেশন আর্মির দাবি

    বিএলএ দাবি করেছে যে ট্রেনে মোট ৪২৬ জন যাত্রী ছিল, যার মধ্যে ২১৪ জন পাকিস্তানি সেনা ছিল। বিএলএ জানিয়েছে, তারা ৬০ জন সৈন্যকে হত্যা করেছে এবং ১৫০ জন এখনও তাদের হেফাজতে রয়েছে। এর সাথে সাথে, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আক্রমণে তিনজন বিএলএ কমান্ডারও নিহত হয়েছেন। বিপরীতে, পাকিস্তান সরকার জানিয়েছে যে তাদের সেনাবাহিনী এবং বিমানবাহিনী অভিযান সম্পন্ন করেছে, ২১ জন যাত্রী এবং ৪ জন সৈন্য নিহত হয়েছে। পাকিস্তান বলছে যে ৩৩ জন বিএলএ যোদ্ধা নিহত হয়েছে এবং ২১২ জন নাগরিককে কোনও ক্ষতি ছাড়াই মুক্তি দেওয়া হয়েছে।

    কূটনৈতিক মহলের অনুমান

    পাকিস্তানের সেনাবাহিনী এবং সরকারের আর বালোচিস্তানের উপর নিয়ন্ত্রণ নেই, বলে মনে করছে বিশ্ববাসী। বালোচিস্তানের ৬-৭টি জেলা সম্পূর্ণরূপে সন্ত্রাসবাদীদের নিয়ন্ত্রণে। পাকিস্তান সরকার বা পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই। অনেকের মতে, বালোচিস্তান এবং সিন্ধ প্রদেশের সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীগুলি এখন একে অপরের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। পাকিস্তানের সার্বভৌমত্বকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ করছে এই যৌথ বাহিনী। বালোচিস্তানে ট্রেন হাইজ্যাক অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।

  • PM Modi: কেন্দ্রের ‘নেইবারহুড ফার্স্ট’ নীতি, মোদির নেতৃত্বে বিভিন্ন দেশে উন্নয়নের সঙ্গী ভারত

    PM Modi: কেন্দ্রের ‘নেইবারহুড ফার্স্ট’ নীতি, মোদির নেতৃত্বে বিভিন্ন দেশে উন্নয়নের সঙ্গী ভারত

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মরিশাসে (Modi in Mauritius) ইতিহাস গড়ার অপেক্ষায় ভারত। সেখানে সিভিল সার্ভিস কলেজ ও এরিয়া হেল্থ সেন্টার উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। দুটি প্রতিষ্ঠান তৈরির ক্ষেত্রেই ভারতের বড় ভূমিকা আছে। বিভিন্ন দেশে ভারত উন্নয়নের পথে কীভাবে সঙ্গী হচ্ছে, তার প্রমাণ আরও একবার মিলেছে মরিশাসের এই প্রজেক্টে। বিশ্ববাসীর কল্যাণে বারবার প্রধানমন্ত্রী মোদির (PM Modi) নেতৃত্বে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের উন্নয়নের সঙ্গী হয়েছে ভারত। এবার সেই পথির পথিক হল মরিশাস।

    সিভিল সার্ভিস কলেজ উদ্বোধন

    প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Modi) বুধবার মরিশাসের পোর্ট লুইসে অটল বিহারি বাজপেয়ী সিভিল সার্ভিস ইনস্টিটিউট উদ্বোধন করেছেন। যা ভারতের অনুদান সহায়তায় নির্মিত হয়েছে। এই সিভিল সার্ভিস কলেজ এবং আঞ্চলিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি ভারত-মরিশাস (Modi in Mauritius) বন্ধুত্বের প্রমাণ। সে দেশের প্রশাসনিক এবং স্বাস্থ্য সেবার সক্ষমতা শক্তিশালী করতে ভারত যে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে, তা এই প্রকল্পটির মাধ্যমেই বোঝা যায়। এই প্রকল্প দীর্ঘমেয়াদী প্রবৃদ্ধি এবং সক্ষমতা বৃদ্ধির দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। সকলের জন্য সমৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি সবসময় দেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। তাঁর ইচ্ছাতেই বিভিন্ন দেশের সঙ্গে ভারতের সহায়তায় একাধিক প্রধান উন্নয়ন প্রকল্প গৃহীত হয়েছে।

    ভুটানে হাসপাতাল

    বিশ্বের বিভিন্ন দেশের উন্নয়নের সঙ্গী হিসেবে ভারতের ভূমিকার কথা বারবার উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Modi)। একাধিক দেশে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, নির্মাণ সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় ভারত। ভুটানে গিয়াল্টসুয়েন জেতসুন পেমা ওয়াংচুক মাদার অ্যান্ড চাইল্ড হসপিটাল তৈরির ক্ষেত্রে আর্থিক সাহায্য করেছিল ভারত। সেই প্রজেক্টের প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ হয় ২০১৯ সালে ও দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শেষ হয় ২০২৪ সালে। মূলত মা ও সদ্যোজাত সন্তানের জন্যই তৈরি এই হাসপাতাল। ২০২৪-এ সেই হাসপাতাল উদ্বোধন করেন মোদি।

    বাংলাদেশে সহায়তা

    ২০২৩ সালে বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে যৌথভাবে তিনটি প্রকল্পের উদ্বোধন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Modi)। আখাউরা-আগরতলা ক্রস বর্ডার রেল লিঙ্ক, খুলনা-মোংলা পোর্ট রেল লাইন, মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্ল্যান্টের উদ্বোধন হয়েছিল ওই বছর। তার আগে ২০২২ সালে জয়নগর-কুরথা রেলওয়ের উদ্বোধন করেছিলেন মোদি। সঙ্গে ছিলেন নেপালের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী। এটাই ছিল ভারত ও নেপালের মধ্যে প্রথম রেল যোগাযোগ।

    দ্বীপরাষ্ট্রগুলির উন্নতিতে পাশে ভারত

    ২০২১ সালে সেশেলস-এর প্রেসিডেন্ট রামকালওয়ানের সঙ্গে ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট বিল্ডিং উদ্বোধন করেন মোদি (PM Modi)। সেই প্রকল্পে ৩৫ লক্ষ ডলার সাহায্য করেছিল ভারত। এছাড়া ২০২০ সালে মরিশাসের প্রধানমন্ত্রী যুগনাথের সঙ্গে যৌথভাবে সে দেশের সুপ্রিম কোর্টের বিল্ডিং উদ্বোধন করেছিলেন তিনি। ২০১৯ সালে তাঁরা মেট্রো এক্সপ্রেস উদ্বোধন করেন। ২০১৫ সালে শ্রীলঙ্কায় জাফনা কালচারাল সেন্টারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন মোদি। শ্রীলঙ্কাকে চরম আর্থিক সঙ্কটের সময় ভারত অনেক সাহায্য করেছে। ওই বছরই আফগান পার্লামেন্টের উদ্বোধন করেন তিনি। ২০১৬ সালে, প্রধানমন্ত্রী মোদি এবং আফগানিস্তানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আফগান-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ ড্যাম (সলমা ড্যাম) উদ্বোধন করেছিলেন, যা আফগানিস্তানে ভারতীয় সহায়তায় নির্মিত হয়।

    প্রতিবেশী প্রথম নীতি

    ২০১৪ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হন নরেন্দ্র মোদি (PM Modi)। তাঁর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে প্রতিবেশী (Neighbor First) সব দেশের সরকার প্রধানরা ভারতে আসেন। মোদিও প্রধানমন্ত্রী পদে বসে প্রতিবেশী বেশ কয়েকটি দেশ সফর করেন। তার এ সফর থেকে বোঝা গিয়েছিল, ভারতের বিদেশনীতিতে প্রতিবেশী দেশগুলোর প্রতি গুরুত্ব থাকবে সবচেয়ে বেশি। আনুষ্ঠানিকভাবে ওই নীতিকে ‘নেইবারহুড ফার্স্ট’ বা ‘প্রতিবেশীই প্রথম’ নাম দেয় নয়াদিল্লি। ভারত সরকার চেয়েছিল আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, মলদ্বীপ, মায়ানমার, নেপাল, পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কার মতো প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে দৃঢ় সম্পর্ক গড়ে তুলতে। ভৌগোলিকভাবে যারা ভারতের চেয়ে দূরে (সে আমেরিকাই হোক বা নাইজেরিয়া) তাদের চেয়ে দক্ষিণ এশিয়ায় ঘরের কাছের পড়শিদের (শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ, মায়ানমার, নেপাল প্রভৃতি) সঙ্গে সম্পর্ককে ভারত বেশি গুরুত্ব দেবে এবং তাদের স্বার্থকে প্রাধান্য দেবে– এটাই হল ‘নেইবারহুড ফার্স্ট’-এর সার কথা। প্রধানমন্ত্রী মোদির বিদেশনীতির মূল স্তম্ভ এটাই। প্রতিবেশী প্রথম এই নীতিতেই চলে ভারত। প্রতিবেশী দেশের ক্ষেত্রে সবসময় ভারত সাহায্যের হাত এগিয়ে দিয়েছে।

  • Nepal News: ‘‘ফিরে এসো রাজা, রক্ষা করো দেশকে’’, নেপাল কি ফের হিন্দু রাষ্ট্র হওয়ার পথে?

    Nepal News: ‘‘ফিরে এসো রাজা, রক্ষা করো দেশকে’’, নেপাল কি ফের হিন্দু রাষ্ট্র হওয়ার পথে?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আজ থেকে ১৭ বছর আগে ২০০৮ সালের ২৮ মে নেপালে (Nepal News) হিন্দু রাজতন্ত্রের অবসান ঘটে, প্রসঙ্গত তার আগে ২৩৯ বছর ধরে হিন্দু রাজাদের শাসন ছিল নেপালে। ক্ষমতাচ্যুত হন রাজা জ্ঞানেন্দ্র শাহ (Hindu Monarchy)। এরপরেই ২০০৮ থেকে নেপালে ধর্মনিরপেক্ষ প্রজাতন্ত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা পায়। কিন্তু বর্তমানে ফের সেই রাজারই দ্বারস্থ নেপালের (Nepal News) জনগণ! গত রবিবার কাঠমাণ্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের প্রবেশপথে দেখা গেল হাজার হাজার মানুষের ভিড়! তাঁরা সবাই জ্ঞানেন্দ্র শাহের সমর্থক। তাঁদের একটাই দাবি, ফের নেপালে ফিরুক রাজতন্ত্র। ফের নেপাল হয়ে উঠুক হিন্দু রাষ্ট্র।

    প্রিয় রাজার জয় হোক, স্লোগান শোনা গেল

    বিমানবন্দরের সামনে জমা হওয়া এই বিপুল মানুষের ভিড় থেকে স্লোগান শোনা গেল, ‘‘রাজপ্রাসাদ ছেড়ে দেওয়া হোক রাজার জন্য। ফিরে আসুন রাজা। দেশকে রক্ষা করো। প্রিয় রাজার জয় হোক। আমরা রাজতন্ত্র চাই।’’ পরিস্থিতি এতে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এরপরেই দ্রুত এলাকা ঘিরে ফিরে পুলিশ। যদিও কোনও রকম হিংসার ঘটনা ঘটেনি। তবে নেপাল (Nepal News) আরও একবার আন্দোলিত হল হিন্দুরাষ্ট্রের দাবিতে।

    ১৭ বছরে ১৩টি সরকার, কোনওভাবেই আসেনি স্থিতিশীলতা

    ২০০৮ সালে রাজতন্ত্রের অবসান হওয়ার পরেই রাজা জ্ঞানেন্দ্র হয়ে যান আর পাঁচটা সাধারণ মানুষের মতোই আম নাগরিক। সেই সময় বহু মানুষেরই বিশ্বাস ছিল এবার রাজা ফের একবার ফিরবেন। তবে কেন এমনটা হল। কেনই বা হিন্দু রাষ্ট্রের দাবিতে উত্তাল হল নেপাল (Nepal News)? উল্লেখ্য ২০০৮ সাল থেকে এযাবৎ ১৩টি সরকার দেখেছে নেপাল। তবে কোনওটাতেই রাজনৈতিক স্থিরতা আসেনি বরং বেড়েছে দুর্নীতি। অর্থনীতি ধুঁকতে শুরু করেছে। ফলে এবার সেদেশের মানুষের বড় অংশই মনে করতে শুরু করেছেন এই অস্থিরতা থেকে বাঁচাতে পারে একমাত্র রাজতন্ত্রই।

    কী বলছেন বিক্ষোভকারী বাহাদুর ভান্ডারি

    ৭২ বছরের বাহাদুর ভান্ডারি রবিবার হাজির হয়েছিলেন কাঠমাণ্ডু বিমানবন্দরে। বিবৃতি দেন সংবাদমাধ্যমে। তাঁর নিজের ভাষায়, ‘‘আমরা এখানে (বিমানবন্দরের সামনে) এসেছি রাজার প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানাতে। এবং তাঁর সঙ্গে সঙ্গে মিছিল করে এগিয়ে যেতে। দাবি তাঁকে ফের রাজপ্রাসাদে ফিরিয়ে দিতে হবে।’’ পেশায় ছুতোর বাহাদুর ২০০৬ সালে এভাবেই রাজপথে নেমেছিলেন রাজাকে গদিচ্যুত করতে। কেন হঠাৎ মত বদল কেন? বাহাদুর উত্তর দিলেন, ‘‘সবচেয়ে খারাপ ব্যাপারটা হল, দেশে ব্যাপক দুর্নীতি চলছে। যে সমস্ত রাজনীতিবিদরা ক্ষমতায় এসেছেন, তাঁরা কেউই দেশের জন্য কিছু করেননি। আমি সেই প্রতিবাদেও ছিলাম, যার ফলে রাজতন্ত্রের অবসান হয়েছিল। তখন ভেবেছিলাম এতে দেশের ভালো হবে। কিন্তু আমি ভুল করেছিলাম। দেশ আরও ডুবেছে পরবর্তী সময়ে। আর তাই আমি এখন মত বদল করেছি।’’

    কী বলছেন বিক্ষোভকারী স্কুল শিক্ষক রাজেন্দ্র কুনওয়ার

    হিন্দু রাষ্ট্রের দাবিতে রবিবারই পথে নেমেছিলেন রাজেন্দ্র কুনোয়ার। তিনি পেশায় একজন শিক্ষক। আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘‘বর্তমানে নেপালে স্থিতিশীল অবস্থা (Nepal News) নেই। মূল্যবৃদ্ধি চরম আকার ধারণ করেছে। বেড়েছে বেকারত্ব। এর পাশাপাশি শিক্ষা ও স্বাস্থ্যপরিসেবা ভেঙে পড়েছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘নেপালে যে আইন রয়েছে তা জনসাধারণের উপর প্রযোজ্য হচ্ছে। কিন্তু রাজনীতিবিদদের ক্ষেত্রে তা দেখা হচ্ছে না। এই কারণেই আমাদের দেশের রাজতন্ত্রের প্রয়োজন।’’ প্রসঙ্গত উল্লেখ্য ২০০৮ সাল থেকে নেপালে ১৩ টি সরকার ক্ষমতায় এসেছে কিন্তু কখনও স্থিতিশীলতা বজায় থাকেনি।

    এমন আন্দোলন নতুন কিছু নয়

    নেপালের রাজাকে ফেরানোর এমন আন্দোলন কি নতুন? এর উত্তরে আমাদেরকে জানতে হবে এটা প্রথম বা নতুন কিছু নয়। রাজতন্ত্র অবসানের আগে নেপালের রাজাকে অধিকাংশ মানুষই শ্রদ্ধা করত। তবে ২০০৫ সাল থেকে রাজার ক্ষমতা ক্রমশ কমতে থাকে। এরপরে ২০০৬ সাল থেকেই রাজতন্ত্র বিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়। রাজেন্দ্র শাহকে অপসারণ করার জন্য আন্দোলন চলতে থাকে। রাজতন্ত্রের অবসানের পরও রাজাকে ফেরানোর দাবিতে বিক্ষোভ কিন্তু বন্ধ হয়নি। হিন্দু রাষ্ট্রের দাবিতে ফের একবার নেপাল উত্তপ্ত হয়েছিল সাম্প্রতিক ২০২০ সালে। সেই সময় ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছিল দেশজুড়ে। পথে নেমেছিল একাধিক হিন্দু সংগঠন। নেপালের পূর্বাঞ্চলেও এই বিক্ষোভ সবচেয়ে বড় আকার ধারণ করে। প্রসঙ্গত, পূর্বাঞ্চলেই বাড়ি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির। ২০২৩ সালে এরপরে আরও একবার বিক্ষোভ উত্তাল আকার ধারণ করে। রাজতন্ত্র ফিরিয়ে আনার দাবিতে এই বিক্ষোভে জনতাকে কাঁদানে গ্যাস ছুড়তে বাধ্য হয় পুলিশ। এর পরবর্তীকালে ফের একবার বিক্ষোভ দেখা গেল ২০২৫ সালে। এই বিক্ষোভ শুরু হয় রবিবারই। নেপালে যে বিক্ষোভ দেখা গেল তার পিছনে ছিল রাষ্ট্রীয় প্রজাতন্ত্র পার্টি। প্রসঙ্গত এই রাজনৈতিক দল নেপালে একটি হিন্দু জাতীয়তাবাদী দল বলে পরিচিত। সে দেশের সংসদে পঞ্চম বৃহত্তম দল।

    কেন নেপালে এমন আন্দোলন দেখা যাচ্ছে

    বিশ্লেষকরা জানাচ্ছেন, নেপালের (Nepal News) জনগণ প্রজাতন্ত্র নিয়ে যথেষ্ট অসন্তুষ্ট। তার একাধিক কারণ রয়েছে। তথ্য বলছে, বিগত কয়েক বছর ধরে অর্থনৈতিক বৃদ্ধি ব্যাপক হ্রাস পেয়েছে নেপালে। ২০১৫ সালে নেপালের প্রকৃত জিডিপি ৯ শতাংশ ছুঁয়েছিল। কিন্তু তা গত পাঁচ বছর ধরে ক্রমশই নিচে নেমে এসেছে। এর পাশাপাশি বেড়েছে মূল্যবৃদ্ধিও। নেপালের মানুষদের ধারণা, রাজতন্ত্র ফিরলে এগুলির সমাধান হবে।

    জ্ঞানেন্দ্র শাহ কী বলছেন?

    তবে যাঁকে কেন্দ্র করে বর্তমানে নেপালের রাজনীতি আবর্তিত হচ্ছেন সেই জ্ঞানেন্দ্র শাহ কী বলছেন? তাঁকে ফেরানোর দাবিতে কাঠমাণ্ডু বিমানবন্দরে যে বিক্ষোভ দেখা গিয়েছে সে নিয়ে জ্ঞানেন্দ্র শাহ কোনও বিবৃতি দেননি। কিন্তু এই আবহে তিনি নেপালের বিভিন্ন অংশে সফর করছেন। এতেই বিশ্লেষকরা মনে করছেন যে নেপালের জনগণের যে বিক্ষোভ দেখা গিয়েছে, তাকে ফেরানোর দাবিতে তা তিনি সমর্থন করছেন। তিনি নিজেও রাজা হিসেবে ফিরে আসতে চান। প্রকাশ্যে জ্ঞানেন্দ্র শাহ সারাদেশের কাছে ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, আপাতত জ্ঞানেন্দ্র অপেক্ষা করছেন এবং তিনি দেখছেন এই বিক্ষোভটি কতটা শক্তিশালী হয় এবং কত দূর তা চলতে পারে।

    নেপালে কীভাবে রাজতন্ত্র বিলুপ্ত হয়েছিল

    ২০০৮ সালে নেপালের প্রধানমন্ত্রী হন পুষ্প কমল দহাল ওরফে প্রচণ্ড। এর আগে তিনি ছিলেন বিদ্রোহীদের একজন কমান্ডার। তাঁর নেতৃত্বেই ৪৮ মাসের একটি নয়া সংবিধান প্রণয়ন করেছিল নেপাল। তৈরি করা হয়েছিল একটি গণপরিষদ। এরপরে দীর্ঘ রাজনৈতিক কোন্দল দেখা যায় নেপালে। ২০১৫ সালের এপ্রিল মাসে ভয়াবহ ভূমিকম্প বিধ্বস্ত করে দেয় নেপালকে। যার ফলে ৯০০০ মানুষ মারা যান। এরপরে ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরেই নয়া সংবিধান পেশ করা হয় নেপালে। ফের ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ফের একবার নয়া সংবিধান পেশ করা হয় নেপালে। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী প্রয়াত সুশীল কৈরালা তখন বলেন যে এটাই আসলে জনগণের সংবিধান যা পাস হল। এরপর ২০১৭ সালের মে মাসে নেপাল জুড়ে ভোট হয়।

  • Balochistan Liberation Army: ১৫০ পণবন্দি উদ্ধার, মহিলা-শিশু যাত্রীদের ছেড়ে দিল বালোচরা, কী চায় বিএলএ?

    Balochistan Liberation Army: ১৫০ পণবন্দি উদ্ধার, মহিলা-শিশু যাত্রীদের ছেড়ে দিল বালোচরা, কী চায় বিএলএ?

    মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: রাতভর সেনা অভিযানের পর ২৭ জঙ্গিকে নিকেশ করে মোট ১৫০ পণবন্দিকে উদ্ধার করেছে পাক সেনা। এখনও বালোচিস্তান লিবারেশন আর্মির (Balochistan Liberation Army) হাতে হাইজ্যাক (Pakistan Train Hijack) হওয়া জাফর এক্সপ্রেসে (Jaffar Express) আটকে বহু যাত্রী। সূত্রের খবর, অপহৃত ট্রেন থেকে যাত্রীদের মুক্ত করতে গিয়ে সেনাবাহিনীর সঙ্গে তীব্র সংঘর্ষ বাঁধে বিদ্রোহী গোষ্ঠীর। এর ফলে নিহত হয়েছেন ২০ জন সেনাও।

    রাতভর উদ্ধার অভিযান

    মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে কোয়েটা থেকে পেশোয়ারগামী জাফর এক্সপ্রেস ট্রেনটিকে কাচ্চি বোলান জেলার পেহরো কুনরি এবং গাদালার মধ্যবর্তী এলাকায় আটকে দেয় স্বাধীনতাপন্থী বিদ্রোহী গোষ্ঠী বিএলএ (Balochistan Liberation Army)। ট্রেনটিতে প্রায় ৫০০ জন যাত্রী ছিলেন। তাঁদের মধ্যে দুই শতাধিক যাত্রীকে পণবন্দি করা হয়। ঘটনার দায় স্বীকার করে বিদ্রোহীরা বিবৃতি দিয়ে জানায়, যাত্রীদের মুক্তির শর্ত হিসেবে তাদের রাজনৈতিক দাবি মানতে হবে। খবর পেয়েই পাকিস্তানের সেনা ও আধাসামরিক বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। অভিযানে অংশ নেয় স্পেশাল সার্ভিস গ্রুপ-এর কমান্ডো বাহিনীও। বিদ্রোহীদের সঙ্গে আলোচনা ব্যর্থ হওয়ার পরই অভিযানে নামে পাক সেনা। রাতভর চলে অভিযান। কিন্তু এখনও পুরোপুরি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি পাক সেনা।

    বিদ্রোহীদের রণকৌশল

    পাক সেনাবাহিনীকে রুখতে রেললাইনের একাংশ উড়িয়ে দেয় জঙ্গিরা। উড়ন্ত ড্রোনকেও গুলি করে নামানো হয়। শুরু হয় দু’পক্ষের গুলির লড়াই। দীর্ঘ সংঘর্ষের পর বুধবার সকালে সেনা বাহিনী অন্তত ১৫০ জন যাত্রীকে মুক্ত করেছে বলে খবর। উদ্ধার হওয়া যাত্রীদের মধ্যে ৫৮ জন পুরুষ, ৩১ জন নারী এবং ১৫ জন শিশু রয়েছে। আহত অন্তত ১৭ জনকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন সেনা ও আধাসামরিক বাহিনীর সদস্য বিদ্রোহীদের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন। তবে পাক সেনার দাবি, অভিযানে ২৭ জন বিদ্রোহী নিহত হয়েছে এবং বাকিদের খুঁজে বের করতে এখনও অভিযান চলছে। এখনও পণবন্দি যাত্রীদের কী হবে, তা নিয়ে আতঙ্ক নেমে এসেছে পাকিস্তানে। পণবন্দিদের মধ্যে মহিলা, শিশু ও অসুস্থদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে, বলে দাবি বালোচ জঙ্গিদের। তাদের দাবি, মূলত পাকিস্তান সেনা, পুলিশ, গুপ্তচর সংস্থার সক্রিয় কর্মীরাই পণবন্দি হিসেবে রয়েছেন।

    বালোচ লিবারেশন আর্মি

    পাকিস্তানের বৃহত্তম প্রদেশ বালুচিস্তান প্রাকৃতিক ভাবে সবচেয়ে সম্পদশালী। কিন্তু ধীরে ধীরে তা বেহাত হয়ে যাচ্ছে বালোচ নাগরিকদের। ‘চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর’ (সিপিইসি) তৈরির পরে গত কয়েক বছরে সেই লুট আরও বেড়েছে। ওই রাস্তা ব্যবহার করেই ইসলামাবাদ এবং বেজিংয়ের শাসকেরা বালুচিস্তানের প্রাকৃতিক সম্পদ লুট করছে বলে বিএলএ, ‘বালোচ ন্যাশনালিস্ট আর্মি’ (বিএনএ)-র মতো স্বাধীনতাপন্থী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলির অভিযোগ। প্রতিবাদ দমন করতে পাক সেনা এবং ফ্রন্টিয়ার কোর বাহিনী সেখানে ধারাবাহিক মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং গণহত্যা চালাচ্ছে বলেও অভিযোগ।

    বালোচ লিবারেশন আর্মির লক্ষ্য

    বালোচ লিবারেশন আর্মির (Balochistan Liberation Army) মূল দাবিগুলির মধ্যে রয়েছে, পাকিস্তান থেকে আলাদা হয়ে পৃথক বালোচিস্তান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা। পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত এই অঞ্চল। এই এলাকা আফগানিস্তানের দক্ষিণ ও পশ্চিম ইরানের সীমান্ত ঘেঁষা। গত কয়েক দশক ধরেই পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ চালিয়ে আসছেন এই অঞ্চলের বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, গ্যাস ও খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ বালোচিস্তান শোষণ করছে পাকিস্তান। অথচ, এই খনিজ সম্পদের কোনও সুবিধা এখানকার জনগণের কাছে পৌঁছয় না। আফগানিস্তান ও ইরান সীমান্তের খনিজ সমৃদ্ধ অঞ্চলেই এই বিএলএ গোষ্ঠীর সক্রিয়তা বেশি।

    বালোচিস্তানে পাক-নিপীড়ণ

    বালোচিস্তান (Balochistan Liberation Army) অঞ্চলটি পাকিস্তানের অর্থনীতি ও সমৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে গত কয়েক বছরে পাকিস্তানের রাজনৈতিক ডামাডোল ও অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা এই অঞ্চলকেও গ্রাস করেছে। জোর করে পাকিস্তানে অন্তর্ভুক্ত করা বালোচ প্রদেশে প্রতিনিয়ত অত্যাচার চালায় পাক-সেনা, এমনই দাবি সেখানকার বাসিন্দাদের। বালোচিস্তানে রয়েছে একটি গভীর জলবন্দর এবং এখানকার বেশ কিছু প্রজেক্টে বেজিংয়ের বিনিয়োগ রয়েছে। প্রাকৃতিক গ্যাস, খনিজে সমৃদ্ধ বালুচিস্তানে সেখানকার নাগরিকরা যাতে লাভবান হন, তাঁদের যাতে বঞ্চিত না হতে হয়, সেই দাবিতেই সশস্ত্র সংগ্রামে লিপ্ত বালোচ লিবারেশন আর্মি। ২০০২ সালে পাক সেনা ও নৌবাহিনীর ঘাঁটিতে হামলা চালায় এই সংগঠন। তখনই পাক সরকার প্রমাদ গোনে। প্রথমবার তাদের শক্তি টের পাওয়া যায় লাহোরে। এর পরে এক মহিলা জঙ্গি আত্মঘাতী বোমা হামলা চালায় করাচির বিশ্ববিদ্যালয়ে। বালোচিস্তানের দাবিতে বিদ্রোহ করা সমস্ত গোষ্ঠীকে এক ছাতার তলায় আনার চেষ্টা করছে বিএলএ। তবে সাম্প্রতিক সময়ে তাদের সব থেকে বড় অভিযান জাফর এক্সপ্রেস হাইজ্যাক। এই ঘটনায় নড়ে গিয়েছে ইসলামাবাদ। প্রতিদিন জঙ্গিদের আশ্রয় দেওয়া পাকিস্তানই এখন হিংসার কবলে।

LinkedIn
Share