Dakshin Dinajpur: পেনশনের টাকায় দরিদ্র শিশুদের নিখরচায় পড়াশোনা করাচ্ছেন শিক্ষক

২৫ বছর ধরে নিজের পয়সায় শিক্ষার কাজ করে চলেছেন স্কুলশিক্ষক…
Dakshin_Dinajpur
Dakshin_Dinajpur

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: শিক্ষকতার পাশাপাশি দরিদ্র, অসহায় বাচ্চাদের পড়াশোনা করাতেন শিক্ষক। নিজের বেতনের টাকা থেকে পয়সা বাঁচিয়ে শিক্ষাদান করতেন শিশুদেরকে। দেখতে দেখতে হয়ে গিয়েছে ২৫টা বছর। ১৯৯৮ সালে ৩০ জন হতদরিদ্র পরিবারের শিশুদের নিয়ে পথচলা শুরু করে দক্ষিণ দিনাজপুর (Dakshin Dinajpur) কুশমণ্ডি ব্লকের জয় রাধা সুদর্শন লাল নীলকণ্ঠ স্বর্গ সংস্থা। থাকা-খাওয়া, পড়াশোনা সবই একেবারের নিখরচায়। কিন্তু বারবার আবেদন করেও এখনও মেলেনি সরকারি স্বীকৃতি। যা নিয়ে হতাশ কর্তৃপক্ষ, আবাসিকরা।

কে এই শিক্ষক (Dakshin Dinajpur)?

শিক্ষকতা থেকে অবসর নেওয়ার পরে পেনশনের টাকা টাকা দিয়ে অসহায় শিশুদের লেখাপড়া করিয়ে যাচ্ছেন বালুরঘাটের বাসিন্দা রঞ্জিতকুমার দত্ত। তিনি এই প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠা করেন শুধুমাত্র গ্রামীণ এলাকার অসহায় শিশুদের জন্য। বালুরঘাটে বাড়ি হলেও শিক্ষকতার সূত্রে রঞ্জিতবাবুর যোগাযোগ শুরু হয় কুশমণ্ডি ব্লকের মালিগাঁও পঞ্চায়েত এলাকার সঙ্গে। তিনি বাগডুমা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। মাস গেলে বেতন পাওয়া নিয়ে কোনও অসুবিধে ছিল না। কিন্তু স্কুলের ছাত্র সংখ্যার অভাব দেখে তাঁর মনে প্রশ্ন জাগে, কেন পড়ুয়ার সংখ্যা কম? সেই প্রশ্নের উত্তর পেতে স্কুলে এসে বেরিয়ে পড়তেন আশেপাশের গ্রামগুলোতে।

কেন শিক্ষা দেওয়ার পরিকল্পনা?

এলাকায় (Dakshin Dinajpur) পড়াশোনার ভাবনা একেবারই ছিল না। দারিদ্রতা ছিল এর প্রধান কারণ। তাই নিজের বেতনের পয়সা থেকে একটা করে ব্ল্যাকবোর্ড কিনে ষোলোখানা টোল খুলেছিলেন সেই সময়। সন্ধ্যায় পাড়ার শিক্ষিত ছেলেদের তুলে এনেছিলেন পড়ানোর কাজে। যাঁরা পড়াতেন তাঁদেরকেও বেতন দিতেন ৫০, ১০০ করে টাকা। বালুরঘাট ছেড়ে নিজেও রাত্রিবাস করা শুরু করেন বাগডুমা গ্রামে। সুফল পেয়েছিলেন হাতেনাতে। ১৯৯৮ সালে অসহায় শিশুদের জন্য একটি প্রতিষ্ঠান খুলবেন বলে ঠিক করেন। এগিয়ে আসেন বাগডুমা স্কুলের পাশে মস্তৈল গ্রামের কাইচালু সরকার। তাঁর দান করা পতিত ৮৪ শতক জমিতে পাটকাঠির বেড়ায় ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে জয় রাধা সুদর্শন লাল নীলকণ্ঠ স্বর্গ প্রতিষ্ঠান। আশেপাশের জেলা থেকে ছাত্ররা আসতো। এলাকার দরিদ্র ছেলেদের ওই প্রতিষ্ঠানে রাখার ভাবনা থাকলেও পাশের জেলার গাজোল, দৌলতপুর বুনিয়াদপুর কিংবা ইটাহার ব্লক থেকেও অনাথ শিশুরা চলে আসতে শুরু করে।

শিক্ষকের বক্তব্য

শিক্ষক রঞ্জিতবাবু বলেন, 'কারও বাবা, কারও মা নেই। তাই যতদিন চাকরি করেছি ওদের তিনবেলা খাওয়া-থাকা সমস্ত খরচ নিজের বেতন থেকে চালিয়েছি। এখন অবসর নিলেও হাল ছাড়িনি। পেনশনের টাকা দিয়ে আশ্রমের কাজ করে যাচ্ছি।” তিনি আরও বলেন, “এলাকার (Dakshin Dinajpur) পরিচিত মানুষদের কাছ থেকে সাহায্য নিই। আর বাকিটা নিজের পেনশনের টাকা দিয়ে চলে সব খরচ। এই পরিস্থিতিতে অনাথ শিশুদের তিনবেলা খাবার জোগাড় করতে হয় বলে ছাত্রবৃদ্ধির কোনও ভাবনায় নেই। ৩০ জনের তিনবেলা খাওয়া, মাস গেলে ইলেক্ট্রিক বিল, তিনজন শিক্ষকের সাম্মানিক ছাড়াও আরও অজস্র খরচ”।

মেলেনি সরকারি স্বীকৃতি

আজ ২৫ বছর হলেও নীলকণ্ঠ প্রতিষ্ঠানকে ব্লক বা জেলা প্রশাসন (Dakshin Dinajpur) কেন আশ্রমের স্বীকৃতি দেয়নি? রাজ্য সরকার সুপারিশ করেনি কেন? উত্তরে রঞ্জিতবাবু বলেন, ‘১৫ বছর ধরে কাগজপত্র জমা দিয়েছি অফিসে সরকারি স্বীকৃতি পাবো বলে। মনমতো হয়নি, তাই স্বীকৃতি দেয়নি।' এমন আক্ষেপের সুর তাঁর গলায় বাজতে থাকে। তিনি চান প্রতিষ্ঠানটি সরকারি স্বীকৃতি পাক।

 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles