Kali Puja 2024: ঘন জঙ্গলে মা কালীর আরাধনা শুরু করেছিলেন এক কাপালিক! সেই পুজো ৫০০ বছরে

Kali_Puja_2024

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পুরনো ঐতিহ্য ও রীতি-রেওয়াজ মেনে ৫০০ বছর ধরে পুজো হয়ে আসছে হাওড়ার (Howrah) উদয়নারায়ণপুরের কালীকাপুরের কালী বিগ্রহের। ফি বছর গ্রামের বাসিন্দারা পুজোকে (Kali Puja 2024) কেন্দ্র করে আনন্দে মেতে ওঠেন। আর এই পুজো শুরু হওয়ার সুন্দর ইতিহাস রয়েছে।

কাপালিক শুরু করেছিলেন কালীপুজো (Kali Puja 2024)

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এই কালীপুজোকে (Kali Puja 2024) কেন্দ্র করেই এই গ্রামের নাম কালীকাপুর। সে প্রায় পাঁচ শতাব্দী আগের কথা। বর্তমানের জনবহুল গ্রাম সে সময় ছিল জনশূন্য। ঘন জঙ্গলে ঢাকা নির্জন স্থান। কানা দামোদর নদীর পাড়। জঙ্গলে বন্য পশুর দাপট ছিল। কেউ সাহস পেত না এখানে আসার। জনশ্রুতি থেকে জানা যায়, এই ঘন জঙ্গলেই বাস করতেন এক কাপালিক। তিনি জঙ্গলে একাকী থেকে মা কালীর আরাধনা করতেন। তখন বর্ধমান রাজার রাজত্বকাল। কথিত রয়েছে, রাজার আদেশ মতোই কাপালিকের অবর্তমানে মা কালীকে সেবা করার দ্বায়িত্ব পেয়েছিলেন বর্ধমানের ঘোষ পরিবার। জানা যায়, সে সময় বর্ধমান রাজসভার নবরত্নের একজন ছিলেন তিলকরাম ঘোষ। বর্ধমান থেকে রাজার আদেশ মতোই মা কালীর সেবার উদ্দেশ্যে সপরিবারে হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরে চলে এসেছিল ঘোষ পরিবার। তৎকালীন ঘোষ পরিবার ভাট উপাধি পেয়েছিল রাজার কাছে। ধীরে ধীরে বসতি বৃদ্ধি পেতে থাকে। মন্দির থেকে কিছুটা দূরে ভাট পরিবারের বসবাস শুরু করেছিল সেখানেই। সেই স্থান দেবীপুর গ্রাম নামে পরিচিত।

‘একাহারি কালী মা’

বর্তমানে যে স্থানে কালী মন্দির রয়েছে, তখন সেখানে ঘন জঙ্গল, পুজো (Kali Puja 2024) করার জন্য পুরোহিতের সঙ্গে লেঠেল নিয়ে আসা হত বন্য পশুদের আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে। মন্দির সংলগ্ন ঘন জঙ্গল পরিষ্কার করে বর্তমানে ঘনবসতি গড়ে উঠেছে। মন্দিরের পুরনো রীতি অনুযায়ী প্রতিদিন একবার মাতৃ পুজো অনুষ্ঠিত হয় এখানে। জানা যায়, সে সময় ঘন জঙ্গল কোনওরকমে লেঠেল সঙ্গে নিয়ে দিনে একবার মা কালীর পুজো করা সম্ভব হত। একবার পুজো হওয়ার কারণেই “একাহারি ‘কালী মা”ও বলা হয়। কথিত রয়েছে, শুরুতে মূর্তি ছাড়াই ঘট প্রতিষ্ঠা করে মা কালী রূপে পুজো হত। সেই ঘট নাকি আজও মন্দিরে রয়েছে বলেই জানান পুরোহিত এবং স্থানীয় মানুষ।

পরিবারের সদস্যরা কী বললেন?

পরিবারের সদস্য অনির্বাণ ভাট বলেন, “এখানে ভাট পরিবারের প্রথম পুরুষ তিলকরাম ঘোষ (ভাট) রাজার আদেশমতো বর্ধমান থেকে এখানে মায়ের সেবা করতে এসেছিলেন। সে সময় থেকে কয়েক শতাব্দী পেরিয়ে গিয়েছে। তবে প্রায় সমস্ত নিয়ম রীতি রয়েছে অক্ষত। জানা যায়, মন্দিরে কষ্ঠি পাথরের মায়ের যে মূর্তি তা প্রায় দু’শো বছর প্রাচীন। গ্রামে অন্য কোনও মূর্তি পূজা নিষিদ্ধ ছিল। বৈশাখের ফলহারিণী, মকর সংক্রান্তি, নবমী এবং শ্যামাকালী পুজো-সহ মোট চারটি বিশেষ পুজো হয় প্রতি বছর।”

 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share