Kargil Vijay Diwas: ২৬ জুলাই কার্গিল বিজয় দিবস, দেশের ইতিহাসে কেন গুরুত্বপূর্ণ এই দিন

Kargil Day: কার্গিল যুদ্ধে শহিদ হন ৫২৭ জন ভারতীয় সেনা জওয়ান...
kargil-vijay-diwas
kargil-vijay-diwas

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: প্রতিবছর ২৬ জুলাই পালিত হয় কার্গিল বিজয় দিবস (Kargil Vijay Diwas)। এই দিনটির যথেষ্ট তাৎপর্য রয়েছে ভারতীয় ইতিহাসে। এই দিনটি আমাদের মনে করায়, ১৯৯৯ সালে কার্গিলে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতীয় সেনার যুদ্ধ জয়। ২৬ জুলাই এই দিনটি উৎসর্গ করা হয়েছে সেই সমস্ত সাহসী সৈন্যদের প্রতি, যাঁরা দেশের সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতাকে রক্ষা করার জন্য যুদ্ধ ময়দানে নেমেছিলেন। চলতি বছরে আজ শুক্রবার হল কার্গিল বিজয় দিবস। এই দিনটির অন্যতম গুরুত্ব হল, কার্গিলে যে সমস্ত অঞ্চল পাকিস্তানি সৈন্যরা দখল করেছিল, ভারতীয় সেনা বীরত্বের সঙ্গে যুদ্ধ করে সেই স্থানগুলিকে দখলমুক্ত করে। ভারতীয় সেনার এমন দাপটে পিছু হঠতে বাধ্য হয় পাকিস্তানি সেনা। এ প্রসঙ্গে বলা দরকার, পাকিস্তানি সৈন্যদের সঙ্গে সেসময় জঙ্গিরাও ছিল কার্গিল যুদ্ধে (Kargil Day)।

১৯৯৯ সালের মে মাসে শুরু হয় কার্গিল যুদ্ধ (Kargil Vijay Diwas)

১৯৯৯ সালের মে মাসে শুরু হয় কার্গিল যুদ্ধ, যখন পাকিস্তানি সৈন্য এবং জঙ্গিরা যৌথভাবে সীমান্ত পেরিয়ে কার্গিলের (Kargil Day) বেশ কিছু অঞ্চলকে দখল করে। ১৯৯৯ সালের জুন মাসে ভারতীয় সেনা শুরু করে ‘অপারেশন বিজয়’। এর মাধ্যমে কার্গিলকে পাকিস্তানি জঙ্গি ও সৈন্যদের কাছ থেকে দখলমুক্ত করতে অভিযান শুরু করে সেনা। ১৯৯৯ সালে ২৬ জুলাই সম্পূর্ণভাবে পাকিস্তানি সৈন্যকে পরাস্ত করে কার্গিলকে দখলমুক্ত করে ভারতীয় সেনা। চলতি বছরে কার্গিল বিজয় দিবসের ২৫তম বর্ষপূর্তি হচ্ছে।

১৯৯৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের লাহোর ঘোষণাপত্র, শান্তি স্থায়ী হয়নি

কাশ্মীর সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানের লক্ষ্যে ১৯৯৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে লাহোর ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করা সত্ত্বেও, শান্তি বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। পাকিস্তানি সৈন্য এবং জঙ্গিরা ১৯৯৮-১৯৯৯ সালে শীতকালে জম্মু ও কাশ্মীরের কার্গিল জেলায় অনুপ্রবেশ শুরু করে, কাশ্মীর এবং লাদাখের মধ্যে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত ভূমিও দখল করে তারা। এরপর মে মাসে ভারতীয় সেনাবাহিনী অনুপ্রবেশের বিষয়টি চিহ্নিত করে, এরপরই শুরু হয় কার্গিলে ভারতীয় সেনার অভিযান (Kargil Vijay Diwas)। তীব্র যুদ্ধের সঙ্গে শুরু হয় ‘অপারেশন বিজয়’।

অনুপ্রবেশকারীদের মধ্যে ছিল পাক সেনাও

১৯৯৯ সালের মে থেকে জুলাই পর্যন্ত জম্মু এবং কাশ্মীরের দ্রাস-কার্গিল সেক্টরে চলে যুদ্ধ। পাকিস্তানের দিক থেকে অনুপ্রবেশ চলতে থাকে কার্গিলে। পাকিস্তান প্রথমে দাবি করে, জঙ্গিরাই এ সব করছে। এখানে পাক সেনার কোনও ভূমিকা নেই। পরে যদিও পাকিস্তানের তৎকালীন সেনাপ্রধান পারভেজ মুশারফ তাঁর আত্মজীবনী ‘ইন দ্য লাইফ অব ফায়ার’-এ স্বীকার করেছিলেন, অনুপ্রবেশকারীদের মধ্যে ছিল পাক সেনাও।

আমেরিকার দ্বারস্থ হয় পাকিস্তান 

কার্গিলের যুদ্ধের (Kargil Vijay Diwas) সময় পাকিস্তানের অবস্থা যখন একেবারে বেসামাল, তখন আমেরিকার কাছে সাহায্য চেয়েছিল পাকিস্তান। তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ক্লিনটনের সহযোগী ব্রুস রিডেল দাবি করেছিলেন, বৃহত্তর সংঘাত এড়াতে পাকিস্তানকে সাহায্য করতে রাজি হয়নি আমেরিকা। আমেরিকার দাবি ছিল, ভারত থেকে পাকিস্তান সৈন্য প্রত্যাহার না করলে তারা কোনও ভাবেই সাহায্য করবে না।

৫২৭ জন ভারতীয় সেনা জওয়ান শহিদ হন এই যুদ্ধে

প্রসঙ্গত, কার্গিল হল জম্মু-কাশ্মীরের একটি জেলা। এই জেলাকে নিয়ে তখনই পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে বিবাদ শুরু হয়, যখন পাকিস্তানি সেনা এবং জঙ্গিরা এখানে অনুপ্রবেশ করতে থাকে সীমান্ত পেরিয়ে। এই অঞ্চলের একাধিক স্থান তারা নিজেদের দখলে আনতে থাকে। এরপরে ‘অপারেশন বিজয়ে’র মাধ্যমে অসম্ভব সাহস ও বীরত্বের পরিচয় দিয়ে সরাসরি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবতীর্ণ হয় ভারতীয় সেনা। দখলমুক্ত হয় কার্গিল। কার্গিল বিজয় দিবসে শ্রদ্ধা জানানো হয় সেই সমস্ত ভারতীয় সেনাদের প্রতি যাঁরা যুদ্ধক্ষেত্রে বীরগতিপ্রাপ্ত হয়েছেন। জানা যায়, ৫২৭ জন ভারতীয় সেনা মাতৃভূমির মাটি দখলমুক্ত করতে শহিদ হন এই যুদ্ধে। প্রতিবছরের ২৬ জুলাই শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করা হয়।

কীভাবে পালন করা হয় কার্গিল বিজয় দিবস (Kargil Vijay Diwas)

কার্গিল বিজয় দিবসে সারাদেশে যুদ্ধের যে স্মৃতিসৌধগুলি রয়েছে সেখানে পুষ্পাঞ্জলি অর্পণ অনুষ্ঠান করা হয়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানটি সম্পন্ন হয় দ্রাসে, এই স্থানটি কার্গিলে অবস্থিত। সেখানে উচ্চপদস্থ সেনা আধিকারিক থেকে শুরু করে সরকারি আধিকারিকরা ও নেতা-মন্ত্রীরা শহিদ জওয়ানদের প্রতি শ্রদ্ধা অর্পণ করেন। কার্গিল বিজয় দিবসের স্মরণে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয় দেশ জুড়ে। দেশাত্মবোধক গান, নৃত্যের মাধ্যমে ভারতীয় জওয়ানদের বীরত্বগাথাকে স্মরণ করা হয়। কার্গিল বিজয় দিবসের তাৎপর্য সম্পর্কে অবহিত করানো হয় দেশের যুবসমাজকে। দেশের স্কুল-কলেজ তথা বিভিন্ন এনজিও বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে এই দিনে। 

 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News 

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles