মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: রাজ্যে স্বাস্থ্য দফতরের (Swasthya Bhawan) দুর্নীতি নিয়ে ইডি তদন্তের দাবি জানালেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। নিয়োগ থেকে টেন্ডার, স্বাস্থ্যক্ষেত্রে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ তুললেন নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক। বৃহস্পতিবার বেশ কয়েকটি নথি হাতে নিয়ে এই দাবি করেন শুভেন্দু। ২০১৬ সাল থেকে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল খোলার নামে টেন্ডারে বড়সড় দুর্নীতি হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। দাবি করেন স্বাস্থ্য দফতরের একাধিক কর্তার নামে প্রচুর বেনামি সম্পত্তি রয়েছে।
শুভেন্দুর অভিযোগ
বৃহস্পতিবার বিজেপি নেতা তথা আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারিকে পাশে নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করেন শুভেন্দু (Suvendu Adhikari)। সেখানেই তাঁর দাবি, “এমন কোনও জায়গা নেই যেখানে এই শাসকদলের নেতা মন্ত্রী দুর্নীতি করেননি।” শুভেন্দু অধিকারী এদিন বলেন, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের ঘটনার পর প্যান্ডোরার বাক্স খুলে গিয়েছে। এদিন শুভেন্দু দাবি করেন, এসপি দাশের হাত সন্দীপ ঘোষের মাথায় ছিল। সে কারণেই একসঙ্গে তিনটি চাকরি পেয়েছিলেন। বিরোধী দলনেতা জানান, আরজি করের প্রাক্তন ডেপুটি সুপারিনটেনডেন্ট (নন মেডিকেল) আখতার আলি দীর্ঘদিন এ নিয়ে লড়াই করছেন।
টেন্ডার দুর্নীতি
এদিন স্বাস্থ্যভবনে টেন্ডার দুর্নীতি প্রসঙ্গে শুভেন্দু (Suvendu Adhikari) বলেন, “২০১২ সালের পর থেকে অনেক ভুয়ো কোম্পানি তৈরি করে টেন্ডার দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে কয়েকটা পবন অরোরা, মেনকা গম্ভীরদের কোম্পানি রয়েছে। যাঁরা ভাইপোর আত্মীয়। মূলত পাঁচটা কোম্পানি সমস্ত টেন্ডারগুলো পেয়েছে। ভুয়ো কোম্পানি তৈরি করে টেন্ডার দুর্নীতি হয়েছে। টেন্ডার পেয়ে যাওয়ার পর বন্ধ হয়ে যায় কোম্পানিগুলো। ২০১৬ সালে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালতেও টেন্ডার দুর্নীতি হয়েছে। ভাইপোর আত্মীয়ের কোম্পানির নামে এই টেন্ডারগুলো ইস্যু করা হয়েছিল। স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের নামেও প্রচুর বেনামি সম্পত্তি রয়েছে।” তাঁর অভিযোগ, এই পুরো প্রক্রিয়া প্রথমে দেবাশিস বসু শুরু করেন। পরবর্তী কালে এই কাজ করেছেন মহুয়া বন্দ্যোপাধ্যায়। যিনি এখন পাবলিক সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান। মহুয়া বন্দ্যোপাধ্যায় ২০২৩ সালে আট কোটি টাকা দিয়ে পাঞ্জাব থেকে লাইফ সাপোর্ট অ্যাম্বুল্যান্স কিনেছেন। মহুয়া বন্দ্যোপাধ্যায় মেয়ের নামে নিউটাউনে ফ্ল্যাট কিনেছেন। এসবই কাটমানির টাকা।
করোনার সময় দুর্নীতি
শুভেন্দু (Suvendu Adhikari) বলেন, “নারায়ণস্বরূপ নিগম ও সঞ্জয় বনসালের নামে প্রচুর বেনামি সম্পতি রয়েছে। বায়োমেডিক্যাল ওয়েস্ট ট্রিটমেন্টের টেন্ডারও জোন ভাগ করে করে বেআইনিভাবে দেওয়া হয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে টেন্ডার ছাড়াই এগুলো দেওয়া হয়েছে। করোনার সময়ও পিপিই কিট, এন-৯৫ মাস্ক সহ বিভিন্ন জিনিস নারায়ণ স্বরূপ নিগম, মহুয়া বন্দ্যোপাধ্যায় ও সঞ্জয় বনসাল বেআইনিভাবে পবন অরোরার কোম্পানিকে দিয়েছে। এছাড়া তন্তুজের অবসরপ্রাপ্ত ম্যানেজিং ডায়রেক্টর রবীন রায়কে সামনে রেখে আগের মুখ্যসচিব তথা অধূনা রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহা তিনি এই সমগ্র দুর্নীতি অর্গানইজ করেছেন। আমাদের কাছে সব নথি রয়েছে।”
আরও পড়ুন: নিলামে প্রধানমন্ত্রীর উপহার, রোজগারের টাকা ব্যয় হবে নমামি গঙ্গে প্রকল্পে
জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের টাকা নয়ছয়
শুভেন্দুর (Suvendu Adhikari) দাবি, স্বাস্থ্যভবনে পাহাড়প্রমাণ দুর্নীতি হয়েছে। তা নিয়ে তিনটি এফআইআরও হয়েছে। ইডি যার তদন্ত শুরু করেছে। আখতার আলির পাশাপাশি কৌস্তভ বাগচীও একটি অভিযোগ করেছেন বলে জানান তিনি। অন্যদিকে, মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি নিয়েও লেদার কমপ্লেক্স থানায় দুর্নীতির অভিযোগ দায়ের হয়েছে। কোভিডকালেও বিস্তর দুর্নীতি হয়েছে বলে দাবি শুভেন্দুর। জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের টাকা নয়ছয়েরও অভিযোগ তোলেন তিনি। এছাড়া স্বাস্থ্য ভবনে নিয়োগেও এনআরআই কোটায় চরম দুর্নীতি হয়েছে বলে দাবি তাঁর। শাসকদলের একাধিক নেতা-মন্ত্রীর ছেলের ডাক্তারিতে সুযোগ পাওয়া নিয়েও প্রশ্ন তোলেন শুভেন্দু।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours