মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: এগরায় (Egra) বেআইনি বাজি কারখানার বিস্ফোরণকাণ্ডের তদন্তভার গ্রহণ করল সিআইডি। সোমবার রাত ৯ টা নাগাদ সিআইডি-র একটি টিম ঘটনাস্থলে যায়। বোম্ব স্কোয়াডের টিমও রাতেই ঘটনাস্থলে যায়। তাঁরা ঘটনাস্থল থেকে একাধিক নমুনা সংগ্রহ করেন। গোটা এলাকা ঘিরে দেওয়া হয়।
বাজি বিস্ফোরণে মৃতদের বেশিরভাগই মহিলা
এগরায় (Egra) খাদিকুল গ্রামে বাজি বিস্ফোরণে ৯ জনের মৃতদেহ পুলিশ উদ্ধার করেছে। যার মধ্যে বেশিরভাগই মহিলা। প্রত্যেকেই বাজি কারখানার শ্রমিক ছিলেন। ইতিমধ্যে প্রত্যেকের পরিচয় জানা গিয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতেরা হলেন অম্বিকা মাইতি, মাধবী বাগ, শ্যামাশ্রী মাইতি, কবিতা বাগ, মিনতি মাইতি, শক্তিপদ বাগ, জয়ন্ত জানা, বাপন মাইতি। তবে একজনের নাম এখনও জানা যায়নি। মৃত ও আহত পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যাদের মৃত্যু হয়েছে তাদের পরিবার পিছু আড়াই লক্ষ টাকা, আর আহতদের চিকিৎসার জন্য পরিবার পিছু এক লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। ঘটনার পর থেকে বাজির মালিক কৃষ্ণপদ বাগ পলাতক।
কে এই কৃষ্ণপদ বাগ?
এগড়ায় (Egra) দাপটের সঙ্গে বেআইনি বাজি কারখানা চালাত বছর পঞ্চাশের কৃষ্ণপদ বাগ ওরফে ভানু। প্রায় ৩০ বছর ধরে তার এই কারবার। বিভিন্ন জায়গায় বাজি প্রতিযোগিতায় সেরার তালিকায় ভানুর বাজি বিচরণ করত। গোটা বছর এলাকার সব থেকে জনপ্রিয় অনুষ্ঠানগুলিতে বাজি প্রদর্শনী ছিল ভানুর নেশা। একসময় সে সিপিএম করলেও পরে শাসক দলে সে নাম লেখায়। একসময় তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য ছিল সে। স্বাভাবিকভাবে সে স্থানীয় তৃণমূল নেতা হিসেবে পরিচিত ছিল। আর শাসক দলের নেতাদের মাথায় হাত থাকায় তার এই বেআইনি কারবারে পুলিশও তাকে ছুঁতে পারত না। তবে, এভাবে বেআইনি বাজি কারখানা চালাতে গিয়ে আগেও দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে ভানু। সোমবারও অল্পের জন্য ভানু বেঁচে গিয়েছে বলেই প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি। ঘটনার সময় বাজি কারখানার পাশের রান্নাঘরে ভানু ছিল। বাজি বিস্ফোরণে তার হাত ঝলসে গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তবে দুর্ঘটনার পরেই জমি টপকে স্বপরিবারে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায় সে।
কী বললেন জেলা পুলিশ সুপার?
পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার অমরনাথ কে বলেন, এটি একটি বেআইনি বাজি কারখানা। আগেও ৩ থেকে ৪টি কেস হয়েছে এই কারখানার বিরুদ্ধে। একাধিকবার অভিযান চালানো হয়েছিল। তারপরেও অভিযুক্ত ব্যক্তি নতুন করে কারখানা তৈরি করেছে। অভিযুক্ত কৃষ্ণপদ বাগ ওরফে ভানু বাগকে গ্রেফতার করার জন্য যাবতীয় প্রক্রিয়া চলছে। এরপর তদন্ত যত এগোবে সেই অনুযায়ী আমরা অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব”।
কী বললেন বিজেপি নেতৃত্ব?
বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য অনুপ চক্রবর্তী বলেন, ওই বাজি কারখানায় বোমা তৈরি হচ্ছিল। বাজি কারখানার মালিক তৃণমূল নেতা। স্বাভাবিকভাবে পঞ্চায়েত ভোটে সন্ত্রাস করতেই বোমা তৈরি করা হচ্ছিল। এলাকার মানুষদের সচেতন থাকার কথা বলছি।
কী বললেন তৃণমূল বিধায়ক?
স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক তরুণ মাইতি বলেন, বাজি কারখানার মালিক আগে সিপিএম করত। তবে, এখন তৃণমূল করলেও আমার মিটিং, মিছিলে তাকে দেখিনি। তাকে আমি চিনি না।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours