মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মনোনয়ন পত্র জমাকে কেন্দ্র করে টানটান উত্তেজনা মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) ডোমকলে। বিরোধীদেরকে মনোনয়নপত্র জমা করতে বাধা দেওয়া হয় এবং তৃণমূলের পক্ষ থেকে পুরো বিডিও অফিস চত্ত্বর ঘিরে রাখা হয়েছে বলে জানা যায়। এরপর তৃণমূল এবং সিপিএম-কংগ্রেসের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। আগ্নেয়াস্ত্র রাখার কারণে তৃণমূলের সারাংপুরের অঞ্চল সভাপতি বশির মোল্লাকে আটক করে স্থানীয় পুলিশ।
কী হয়েছে মুর্শিদাবাদে (Murshidabad)?
পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘোষণার পর প্রথম দিনেই উত্তপ্ত ডোমকল ব্লকের ইসলামপুর (Murshidabad)। শনিবার দিন সকাল থেকেই সিপিএম ও কংগ্রেস কর্মীরা পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়নপত্র জমা দিতে গেলে, তৃণমূল আশ্রিত কিছু দুষ্কৃতী গোটা এলাকা ঘিরে রাখে এবং মনোনয়নপত্র জমা দিতে বাধা দেয়। আর তারপর সেখান থেকেই শুরু হয় উত্তেজনা। সিপিএম কর্মীরা নমিনেশন পত্র নিতে এলে মারধর শুরু হয়। শাসক দলের কর্মীরা রীতিমত কিল-ঘুষি মারতে থাকে তাঁদের। এরপর ব্লক অফিস থেকে বের করে দেয় তাঁদের। কোনও রকমে পুলিশ এসে পরিস্থিতির সামাল দিলেও কিছুক্ষণ বাদে ফের শুরু হয় অশান্তি। এবারে একপক্ষ সিপিএম-কংগ্রেস এবং অপর পক্ষ শাসক দল তৃণমূল। এরপর চলে দুই পক্ষের মধ্যে ইটবৃষ্টি। উভয় পক্ষ পরস্পরকে এক ইঞ্চি জায়গা ছাড়তে নারাজ। এরপর ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় ডোমকল থানার বিশাল পুলিশ। উত্তেজিত জনতাদের নিয়ন্ত্রণ করতে লাঠিচার্জ করা হয় বলে সূত্রের খবর। এই ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কিত সারাংপুরের তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি বশির মোল্লাকে কোমরে আগ্নেয়াস্ত্র রাখার জন্য আটক করে মুর্শিদাবাদ পুলিশ। আপাতত তাকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
সিপিএমের প্রতিক্রিয়া
সিপিএমের এক প্রার্থী বলেন, আমি মনোনয়ন জমা দিতে এসেছি, কিন্তু লাইন থেকে আমাকে মেরে বার করে দিয়েছে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা। আবার এক মহিলা প্রার্থী রিনা খাতুন বলেন, পুলিশ আমাদেরকে কোনও সহযোগিতা করছে না, তৃণমূলের গুন্ডারা কেন বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করছে? এই কথা বলে পুলিশ মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যের কাছে জবাব চান তিনি। সেই সঙ্গে বলেন, যতদিন বাঁচব এই দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক লড়াই করব।
পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘোষণার পর থেকেই শুরু অশান্তি
পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘোষণার প্রথম দিন থেকেই ডোমকলে (Murshidabad) অশান্তির বাতাবরণ। গতকাল, শুক্রবার ডোমকল বিডিও অফিসে ডিসিআর আনতে গিয়ে সিপিএমের কর্মীরা রীতিমত লাঠি হাতে আক্রমণ করে তৃণমূল কর্মীদের। ভাঙা হয় বাইক, ক্যাম্পে থাকা চেয়ার। এরপর শনিবার সকাল থেকে ফের উত্তপ্ত ডোমকল। দেখা গেল বিপরীত চিত্র, এইদিন সকাল থেকে রীতিমতো সিপিএম দলের পক্ষ থেকে আসা কর্মীদের বেধড়ক মারতে থাকে শাসক তৃণমূলের কর্মীরা। পরিস্থিতি এতটাই অগ্নিগর্ভ হয় যে পুলিশের সামনেই চলে মারামারি। দুই পক্ষের মধ্যে হয় ইট বৃষ্টি। প্রথমে পুলিশের তৎপরতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলেও, পুনরায় কিছুক্ষণ পর শুরু হয় অশান্তির ঘটনা। এবার সিপিএম এবং কংগ্রেস যৌথ ভাবে লাঠি হাতে আক্রমণ করে শাসক দলের কর্মীদের। চলে ইটবৃষ্টি। পরে র্যাফ নামে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে।
এলাকার সাধারণ মানুষের বক্তব্য, আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটের চিত্র যা উঠে আসছে, তাতে ভোট আসতে আসতে কী পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে, তা নিয়েই রয়েছে অনেক সংশয়।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
Leave a Reply