মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বাবার মুখে নদীতে অনেকবার মাছ ধরার গল্প শুনেছিল বারো বছরের কিশোর। নিজের চোখে মাছ ধরা দেখবে বলে বাবার কাছে বায়না করেছিল সে। এরপর বাবার হাত ধরে নদীতে গিয়ে যে এরকম ঘটনার সাক্ষী হতে হবে তা স্বপ্নেও ভাবতে পারেনি ওই খুদে। আস্ত কুমির (Crocodile) মাঝ নদীতে টেনে নিয়ে চলে যায় মৎস্যজীবীকে। মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার (South 24 Parganas) পাথর প্রতিমা সত্যদাসপুর এলাকায়। পুলিশ জানিয়েছে, নিখোঁজ মৎস্যজীবীর নাম আব্বাসউদ্দিন শেখ (৪৫)। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন গোবর্ধনপুর কোস্টাল থানার পুলিশ ও বনদফতরের কর্মীরা। তাঁরা ওই মৎস্যজীবীর খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছেন।
ঠিক কী ঘটনা ঘটেছিল? (Crocodile)
ছোটো ছেলেকে সঙ্গে নিয়েই বিকালে মাছ ধরতে ডিঙি নৌকয় গিয়েছিলেন আব্বাসসাহেব। নদীতে সবেমাত্র জাল ফেলেছিলেন। তখনই খপাৎ করে নদীর বুক চিরে উঠে আসে কুমির। করাতের মতো দাঁত তখন কামড় বসিয়েছে আব্বাসের হাতে। বাবার হাতের মাংস খুবলে গিয়েছে। দশ-বারো বছরের ছেলেটা ভয়ে পিছ-পা হয়নি। সেই কুমিরের হা-মুখের ভিতরেই হাত ঢুকিয়ে দিয়েছিল সে, বাবাকে বাঁচাতে। চোয়াল শক্ত করে টেনে ধরে রাখার চেষ্টা রেখেছিল কুমিরের। আব্বাস চিৎকার করছিলেন, ছোট ছেলেকে বলেছিলেন, লোক ডেকে আনতে। নদীতে সাঁতরে লোকও ডেকে আনে, কিন্তু ততক্ষণে আব্বাসকে মাঝ নদীতে নিয়ে উধাও হয়ে যায় কুমির। একটি স্পিডবোটে করে জগদ্দল নদীতে (South 24 Parganas) তল্লাশি অভিযান চলছে। রাত পর্যন্ত ওই আব্বাসের কোনও সন্ধান পাওয়া যায়নি বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। সোমবার সকাল থেকে নদীতে শুরু হয়েছে তল্লাশি অভিযান।
আরও পড়ুন: পাহাড়ি লবণ বিক্রি করেই কোটিপতি! ব্যবসায় নতুন দিশা দেখাচ্ছেন তিন বন্ধু
কুমিরের দাঁতের পাটিতে হাত ঢুকিয়েও লাভ হল না
আব্বাসের ছোট ছেলে ঘটনার একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী। সে বলে, "কুমিরটাকে (Crocodile) আগে দেখতে পাইনি। নদীতে জাল ফেলতেই কুমিরটা বাবার হাত ধরে। হাত দিয়ে গল গল করে রক্ত বের হচ্ছিল। আমি কী করব তা বুঝতে পারছিলাম না। বাবাকে বাঁচাতে আমি এসে কুমিরের দাঁতের পাটিতে হাত ঢুকিয়ে টানছি। কিন্তু, তাতে কোনও লাভ হল না। কুমিরটা বাবাকে নদীর দিকে টেনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল। বাবা বলল, যা লোক ডেকে আন, একা পারবি না, আমি এই দিকটা দেখছি। আমি লোক ডাকতে গিয়েই এসে দেখি সব শেষ।" বাবা আর নেই, বলেই সে কাঁদতে শুরু করল।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours