মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: "আমার কুঁড়ে ঘরে থাকতে ভালো লাগছে না, অতি তাড়াতাড়ি মন্দির তৈরি করে দে।" রাজাকে স্বপ্নাদেশ দেওয়ার পরে এতটুকুও বিলম্ব না করে মন্দির তৈরি করেন রাজা। এর পর থেকেই ১৫ ফুট উচ্চতার হাড়িকাঠে ১০৮টি মহিষ বলি দিয়ে শুরু হয় জাগ্রত দেবী মহিষখাগীর বিশেষ পুজো-অর্চনা (Kali Puja 2024)।
তান্ত্রিকের হাতে পুজোর সূচনা
নদিয়ার শান্তিপুর শহরের প্রায় ৩৫০ বছরের প্রাচীন মহিষখাগী কালীমাতার পুজোর ইতিহাস অনন্য। শোনা যায়, এই স্থানে এক তান্ত্রিকের হাতে পুজোর সূচনা হয়। পরবর্তীতে চ্যাটার্জি বংশের কাঁধে পুজোর দায়িত্বভার পড়ে। কিন্তু দেবীর মন্দির না থাকায় স্বপ্নাদেশে মন্দির নির্মাণ করেন স্বয়ং নদিয়ার মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্র। বর্তমানে স্থানীয় বারোয়ারির তত্ত্বাবধানেই হয়ে আসছে এই জাগ্রত কালীমায়ের পুজো। প্রথমদিকে মন্দির ছিল একটি কুঁড়েঘরের আদলে। পুজোটি (Kali Puja 2024) আগে ছিল চ্যাটার্জি বংশের দায়িত্বে, পরে তাঁরা গত হলে বারোয়ারির হাতে দিয়ে যান পুজোর দায়িত্বভার। আগের মন্দির বহু প্রাচীন হয়ে যাওয়ায় এখন মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ হয় এলাকাবাসীর সহযোগিতায়। শোনা যায়, বাঙালি বিয়ের রীতি অনুযায়ী পুজো করা হয় মহিষীখাগী কালীমা'কে। মাকে প্রথম পাটে তোলার সময় থাকে একাধিক নিয়মরীতি। পাটে তোলার পরে মন্দির প্রাঙ্গণ পরিষ্কার করে সেদিন ভোররাতে হয় দধিমঙ্গল। তারপরে অমাবস্যা শুরু হলে বিয়ের রীতি মেনেই পুজো করা হয় দেবীকে। পরের দিন পালন করা হয় বাসি বিয়ের রীতি। বাসি বিয়ের রীতি অনুযায়ী পূজিত হন মা। পুজো সম্পন্ন হওয়ার পর কাঁধে করে নিয়ে যাওয়া হয় মা'কে নিরঞ্জনের জন্য।
আগে এই পুজোয় উৎসর্গ করা হত মহিষকে (Kali Puja 2024)
পুজো উদ্যোক্তাদের কাছে জানা যায়, বহু বছর আগে এই পুজোয় উৎসর্গ করা হত মহিষকে, পরবর্তীতে হয় পাঁঠা বলি। তবে অনেক বছর আগে একবার পুজার্চনা করতে দেরি হয়ে যাওয়াতে বলি উৎসর্গের সময় পেরিয়ে যায়। সেই দিন থেকেই মহিষখাগী কালীমায়ের পুজোতে কোনও রকম বলি উৎসর্গ করা হয় না। সেই থেকেই বন্ধ হয়ে যায় মহিশখাগী মাতার পুজোতে বলি প্রথা। তবে নিরঞ্জনের আগে মাতা মহিষখাগীকে (Goddess Mahishkhagi) দেওয়া হয় পান্তা ভাত, খয়রা মাছ এবং রুইমাছের ভোগ। এই পুজোকে (Kali Puja 2024) কেন্দ্র করে সারা শান্তিপুরবাসী মেতে ওঠেন দীপাবলির আনন্দে। দেবীর নিরঞ্জনের ক্ষেত্র রয়েছে দেবী ও ভক্তদের মেলবন্ধন, ভক্তদের কাঁধে করেই নিরঞ্জনযাত্রায় নিয়ে যাওয়া হয় দেবী মহিষখাগীকে। মনের ভক্তি ও মায়ের আবার আগমনীর আহ্বান জানিয়ে চিৎকার করতে থাকেন হাজার হাজার ভক্তবৃন্দ।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours