BSF: থার্মাল ক্যামেরা থেকে বায়োমেট্রিক যাচাই, বাংলাদেশ সীমান্তে কড়া নজর বিএসএফের

BSF_(10)

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ইউনূস সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে অশান্ত হয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। এই আবহের মধ্যে গত কয়েকদিন ধরে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি-র সঙ্গে বিএসএফ-এর সংঘাতের খবর সামনে আসছে বারবার। এমনকী কাঁটাতার দিতে গিয়ে একাধিক অরক্ষিত সীমান্তে বাধার মুখে পড়তে হয়েছে বিএসএফকে (BSF)। এই আবহে সীমান্ত দিয়ে বার বার অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছে বাংলাদেশিরা। বিষয়টি যে যথেষ্ট অস্বস্তির, তা কিছুটা হলেও বুঝতে পারছেন বিএসএফের শীর্ষ কর্তারা। যদিও তা প্রতিহত করতে সদা তৎপর বিএসএফ। নিত্যনতুন কৌশলে সীমান্তে কড়া নজরদারি চালাচ্ছে তারা। জানা গিয়েছে, অনুপ্রবেশকারীদের ধরার জন্য সর্বাধুনিক প্রযুক্তি এখন বিএসএফের ১০২ ব্যাটালিয়নের হাতে। বসিরহাটে মোট ৩৩ কিমি দীর্ঘ ভারত-বাংলাদেশ (India Bangladesh Border) সীমান্তের মাত্র ১২ কিলোমিটার কাঁটাতার করা হয়েছে। বাকি অংশ এখন ফাঁকা পড়ে রয়েছে। এই এলাকা দিয়ে যাতে অনায়াসে বাংলাদেশিরা অনুপ্রবেশ করতে না পারে, তারজন্য উদ্যোগী হয়েছে বিএসএফ (BSF)। জানা গিয়েছে, শুধুমাত্র ২৪ ঘণ্টা টহল নয়, অনুপ্রবেশকারীদের ওপর নজরদারি চালাতে বাহিনীর হাতে হাতে থার্মাল ইমেজিং ক্যামেরা রয়েছে।

আরও পড়ুন: রাজ্যে রোহিঙ্গাদের বসতি স্থাপনে মদত দিচ্ছে তৃণমূল, বিস্ফোরক অভিযোগ সুকান্তর

নজরদারির জন্য কী কী পদক্ষেপ? (BSF)

এমনিতেই কয়েকদিন আগে কোচবিহারের মেখলিগঞ্জে কাঁটাতারে লাগানো হল কাচের বোতল। ফুলকাডা বুড়ি ভারত বাংলাদেশ সীমান্তে কিছুদিন আগেই লাগানো হয় কাঁটাতার। বিএসএফের সাহায্যে সেখানে কাচের বোতল লাগিয়েছে স্থানীয় বাসিন্দারা। দুষ্কৃতীরা ওই তার কেটে নিলে সশব্দে ভাঙবে কাচের বোতল। তাতে সতর্ক হবে বিএসএফ (BSF), দাবি স্থানীয়দের। কোচবিহার ছাড়াও মালদা, নদিয়া সহ সীমান্ত এলাকায় এখনও অনেক ফাঁকা জমি রয়েছে। সেই জমিতে কাঁটাতার দিতে বাধা দিচ্ছে বাংলাদেশিরা। তাতে মদত দিচ্ছে বিজিবি। মূলত, অনুপ্রবেশে মদত রয়েছে ইউনূস প্রশাসনের। ফলে, অনুপ্রবেশ রুখতে অন্য কৌশল নিয়েছে বিএসএফ। জানা গিয়েছে, হ্যান্ড-হেল্ড থার্মাল ইমেজিং সিস্টেম হল সেনাদের কাছে নজরদারির অন্যতম হাতিয়ার। এতে জড় বস্তু এবং শত্রু বাহিনীর মধ্যে তাপমাত্রার পার্থক্য ধরা পড়ে। সীমান্ত দিয়ে কেউ পারাপার করার চেষ্টা করলে তা এই ক্যামেরায় ধরা পড়়বে। বিএসএফের (BSF) সূত্র জানায়, ক্যামেরাগুলো বিশেষ করে ঘন কুয়াশার সময় এবং রাতের টহল দেওয়ার জন্য কাজে লাগে। সীমান্তে নজরদারি রাখতে ক্যামেরা ছাড়াও নাইট ভিশন ডিভাইসও ব্যবহার করছে বাহিনী। আংশিক কাঁটাতার দেওয়া সীমানার পাশ দিয়ে হেঁটে গেলেই দেখতে পাওয়া যায় একটি বিশেষ জাল যা লাগানো হয়েছে। একজন সিনিয়র বিএসএফ আধিকারিক বলেন, এমনিতেই সীমান্ত এলাকায় অনুপ্রবেশ রুখতে জওয়ানরা সবমসয় টহল দেন। তারপরও রাতের অন্ধকারে কাঁটাতার দিয়ে কোনও কিছু ফেলতে না পারে, তার জন্য জাল লাগানো হয়েছে। তাতে অনেকটাই কাজ হচ্ছে।

চাষিদের বায়োমেট্রিক!

বিএসএফ (BSF) দ্বারা নেওয়া আরেকটি পদক্ষেপ হল কাঁটাতারের এলাকার বাইরে জমি রয়েছে, সেই জমিতে যাওয়ার জন্য চাষিদের বায়োমেট্রিক প্রমাণীকরণ শুরু করা। গ্রামবাসীরা যারা কৃষিকাজের জন্য তাদের জমিতে যেতে চান তাদের এখন তাদের বায়োমেট্রিক বিবরণ প্রদান করতে হবে, যা তাদের পাস করার অনুমতি দেওয়ার আগে রেকর্ডের সঙ্গে মিলে যায়। কৈজুরির স্থানীয় গ্রামবাসী নিমাই দাস বলেন,  “প্রতিদিন বিএসএফ আমার বুড়ো আঙুলের ছাপ মিলিয়ে দেখার পর আমার জন্য গেট খুলে দেয়। উত্তেজনা সত্ত্বেও, অফিসার এবং জওয়ানরা সবসময় আমাদের সাহায্য করে।’’ আরা যাদের জমি নেই, অন্যের জমিতে দিনমজুরের কাজ করতে যান, তাঁদের আধার কার্ড জমা নেওয়া হয়। পরে, কাজ শেষ হলে তা ফেরত দিয়ে দেওয়া হয়।

সীমান্তে টহলরত কুকুর

বিএসএফ (BSF) সূত্রে জানা গিয়েছে, শুধু জওয়ানরাই নয়, টহলরত কুকুররাও নজরদারিতে তাদের ভূমিকা পালন করছে। জার্মান ম্যালিনোইস জাতের ম্যাক্স নামে প্রশিক্ষিত কুকুর রয়েছে। যার বয়স আড়াই বছর। তার একজন মাস্টার হ্যান্ডলার রয়েছে, সীমান্তের ওপার থেকে সন্দেহজনক কার্যকলাপ সম্পর্কে জওয়ানদের সতর্ক করে। জানা গিয়েছে, এই কুকুরটি বেশ কয়েকটি আন্তঃসীমান্ত চোরাচালান এবং অনুপ্রবেশের চেষ্টা ব্যর্থ করেছে। ফলে, বাংলাদেশের এই পরিস্থিতিতে সীমান্তে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে এই কুকুরকেও কাজে লাগানো হচ্ছে।

 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share