Kash Patel: এই প্রথম, এফবিআই প্রধান ভারতীয় বংশোদ্ভূত! কাশের নিয়োগে মার্কিন সেনেটের অনুমোদন

kash patel first indian origin fbi director

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: এই প্রথম এফবিআইয়ের ডিরেক্টর হিসেবে নিয়োগ করা হল কোনও ভারতীয় বংশোদ্ভূতকে। আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই (ফেডেরাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন)-এর মাথায় বসতে চলেছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত কাশ প্যাটেল (Kash Patel)। কাশের নিয়োগে বৃহস্পতিবার অনুমোদন দিয়েছে মার্কিন সেনেট। প্রেসিডেন্ট ঘনিষ্ঠ কাশের নিয়োগ নিয়ে বিরোধী ডেমোক্র্যাটদের আপত্তি থাকলেও, ৫১-৪৯ ভোটে জয়ী হয় রিপাবলিকানদের পছন্দের প্রার্থী কাশ। এফবিআই-এর ডিরেক্টর হিসেবে নিজের নাম ঘোষণা হতেই ভারতীয় সংস্কৃতি মেনে বাবা-মায়ের পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করেছিলেন কাশ। তিনি “জয় শ্রী কৃষ্ণ” বলে ঈশ্বরের প্রতি কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করেন।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ কাশ

এর আগে গত ১০ বছর ধরে এফবিআইয়ের ডিরেক্টর ছিলেন ক্রিস্টোফার রে। এবার তাঁর জায়গায় দায়িত্ব পাচ্ছেন কাশ (Kash Patel)। ৪৪ বছরের কাশ এর আগে আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থায় দীর্ঘ দিন কাজ করেছেন। তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত। গত বছর ট্রাম্পের মনোনয়ন প্রক্রিয়াতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন কাশ। ট্রাম্পের মতে, কাশ নিজের কর্মজীবনে আইনজীবী হিসেবে বারবার দুর্নীতিকে প্রকাশ্যে আনার কাজ করেছেন, সওয়াল করেছেন ন্যায়ের পক্ষে এবং আমেরিকার জনতাকে রক্ষা করেছেন। সেই কারণেই এবার গুরুদায়িত্ব তাঁর কাঁধে। উল্লেখ্য, দ্বিতীয় দফায় কাশের আগেও, একাধিক ভারতীয় বংশোদ্ভূতকে বড় পদে বসিয়েছেন ট্রাম্প, যাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য বিবেক রামস্বামী এবং তুলসি গাবার্ড।

কাশের পরিচয়

মা-বাবা ভারত থেকে আমেরিকায় গিয়ে সংসার পেতেছিলেন। নিউ ইয়র্কেই গুজরাটি পরিবারে জন্ম কাশের। পুরো নাম কাশ্যপ প্রমোদ প্যাটেল (Kash Patel)। তাঁর পরিবার পূর্ব আফ্রিকা থেকে কানাডার পথে গিয়েছিল আমেরিকায়। সেই থেকেই প্যাটেল পরিবারের বসবাস আমেরিকায়। একটি অসামরিক বিমান সংস্থায় আর্থিক অফিসার পদে কর্মরত ছিলেন কাশের বাবা। রিচমন্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘ক্রিমিনাল জাস্টিস অ্যান্ড হিস্ট্রি’ বিষয়ে তিনি ডিগ্রি লাভ করেন। ২০০৪ সালে আন্তর্জাতিক আই বিষয়ে ‘ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন’ থেকে ডিগ্রি পান। পরবর্তী শিক্ষা ‘পেস ইউনিভার্সিটি স্কুল অফ ল’ থেকে। কাশের পড়াশোনা নিউইয়র্কে হলেও ফ্লোরিডায় শুরু কর্মজীবন। প্রথমে স্টেট পাবলিক ডিফেন্ডার এবং পরে ফেডেরাল পাবলিক ডিফেন্ডার হিসেবে কাজ করেছেন কাশ।

মনে প্রাণে হিন্দু কাশ

মার্কিন প্রশাসনের কর্মকাণ্ডে খাঁটি ভারতীয় ‘টাচ’! সৌজন্যে এফবিআই-এর ডিরেক্টর পদে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মনোনীত প্রার্থী, ভারতীয় বংশোদ্ভূত কাশ্যপ প্যাটেল ওরফে কাশ প্যাটেল। সেনেটের অনুমোদন পাওয়ার আগে প্রথা মাফিক, সেনেট জুডিশিয়ারি কমিটির সামনে নিজের ‘কনফারমেশন হিয়ারিং’-এ উপস্থিত ছিলেন কাশ। সেই ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী থাকতে সেখানে উপস্থিত ছিলেন কাশের (Kash Patel) পরিবারের সদস্যরাও। তাঁদের মধ্যে ছিলেন কাশের মা, বাবা ও বোন। তাঁদের সঙ্গে বাকি সকলের পরিচয় করিয়ে দেন তিনি। আর নিজের বাবা-মাকে এই প্রশাসনিক অনুষ্ঠানে স্বাগত জানাতে আর পাঁচজন গুজরাটির মতোই বলেন, ‘জয় শ্রী কৃষ্ণ’!

কাশের কথা

কাশের এই ‘জয় শ্রী কৃষ্ণ’ অভিবাদন ইতিমধ্য়েই সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল। তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘আমি এই অনুষ্ঠানে আমার বাবাকে স্বাগত জানাতে চাই। এবং আমার মা, অঞ্জনাকে। ওঁরা আজ এখানেই বসে রয়েছেন। ওঁরা শুধুমাত্র এই অনুষ্ঠানের সাক্ষী থাকতেই এখানে এসেছেন। আমার বোনও এখানে রয়েছেন। তিনিও সাগর পেরিয়ে এসেছেন, শুধুমাত্র এখানে উপস্থিত থাকবেন বলে। আমার সঙ্গে থাকবেন বলে। আপনারা যে এখানে এসেছেন, এটাই আমার কাছে সবকিছু। জয় শ্রী কৃষ্ণ।’’

কোন কোন দায়িত্বে ছিলেন কাশ

ট্রাম্প প্রথমবার প্রেসিডেন্ট থাকাকালীনও একাধিক গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক পদে ছিলেন কাশ (Kash Patel)। ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের কাউন্টার টেররিজম বিভাগের সিনিয়র ডিরেক্টর থেকে ভারপ্রাপ্ত প্রতিরক্ষা সচিব হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। এফবিআই-এর ডিরেক্টরপদে কাশের নাম ঘোষণা করে নিজের সোশাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে ট্রাম্পকে লিখতে দেখা গিয়েছে, ‘‘আমি এই ঘোষণা করতে পেরে গর্বিত যে এফবিআইয়ের পরবর্তী ডিরেক্টর হিসেবে কাজ করবেন।’’ কাশের ভূয়সী প্রশংসা করে ট্রাম্প আরও লেখেন, ‘‘কাশ একজন দুর্দান্ত আইনজীবী, তদন্তকারী এবং ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ লড়াকু যিনি নিজের গোটা কেরিয়ার জুড়ে অনেক দুর্নীতি ফাঁস করেছেন এবং ন্যায়ের জন্য লড়ে মার্কিন নাগরিকদের রক্ষা করেছেন।’’

কাশের অঙ্গীকার

দায়িত্ব পেয়ে এফবিআই-এর প্রতি আম মার্কিনিদের আস্থা ফেরানোর কথা বলেন কাশ (Kash Patel)। তিনি জানান, কড়া হাতে হিংসা ও অপরাধের মোকাবিলা করবেন। কাশ্যপ মনে করেন, এফবিআই-এর উপর মানুষের আস্থা ফেরাতে হলে স্বচ্ছতা আনা দরকার এবং নিয়মিত তদারকি থাকা দরকার। কারণ, তাঁর মনে হচ্ছে, আমেরিকার আম নাগরিকরা আর আগের মতো এফবিআই-এর উপর আস্থা রাখতে পারছেন না। যা নিয়ে কাশ উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। কাশ প্য়াটেলের মতে, আমজনতার ভরসা ফিরে পেতে অনেক কাজ করতে হবে। তিনি জানান, তাঁর কাছে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ হল, হিংসাত্মক অপরাধের মোকাবিলা করা এবং তিনি সেটা করবেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমার প্রধান লক্ষ্য হবে, আমাদের সম্পূর্ণ সমাজকে সুরক্ষিত রাখা। যাতে আমাদের সন্তানরা নির্ভয়ে পার্কে খেলা করতে পারে।’’ মার্কিন কংগ্রেসের সঙ্গে আরও বেশি করে সামঞ্জস্য রেখে কাজ করার বার্তা দিয়েছেন কাশ্যপ। তাঁর প্রতিশ্রুতি হল, প্রয়োজনের সময় সব পক্ষকেই জরুরি তথ্য সরবরাহ করে সাহায্য করবেন তিনি।

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share