মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ১৯৭১ আর ২০২৪ সালের মধ্যে সময়ের ফারাক বিস্তর। কালের নিয়মে এই সময়-পর্বে পদ্মা দিয়ে বয়ে গিয়েছে অনেক জল। তবে নানা অছিলায় বাংলাদেশে হিন্দু নিধন যজ্ঞ (Bangladesh Crisis) বন্ধ হয়নি। ১৯৭১ আর ২০২৪ সাল দুটোর প্রেক্ষাপট আলাদা। তবে বাংলাদেশি মুসলমানদের (Islamist Mob) চাঁদমারি কিন্তু সেই হিন্দুরা। যেন-তেন-প্রকারে হিন্দু বিতাড়ন কিংবা নিধন করে জমিজমা দখল করাই পরোক্ষ লক্ষ্য বাংলাদেশি মুসলমানদের, এমনটাই বলছেন অভিজ্ঞরা। প্রেক্ষাপট ভিন্ন হলেও সেই কারণেই হিন্দুদের মন্দিরে হানা দিচ্ছে বাংলাদেশি মুসলমানরা। বাংলাদেশের মেহেরপুরে রয়েছে ইস্কনের মন্দির। এই মন্দিরের মুখপাত্র সুমোহন মুকুন্দ দাস সেই অবর্ণনীয় (Bangladesh Crisis) ছবির ভিডিও শেয়ার করেছেন। ৫ অগাস্ট রাতে এই মন্দিরে ভাঙচুর চালায় মুসলমানরা। ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় নিরপরাধ দেব বিগ্রহগুলিকে।
কী বলছেন ইস্কনের সেবায়েত
সংবাদ মাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে তিনি বলেছেন, “বর্তমান পরিস্থিতি ১৯৭০ সালের চেয়ে খুব একটা আলাদা কিছু নয়। বেছে বেছে আক্রমণ করা হচ্ছে হিন্দু রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী এবং মন্দিরগুলিকে।” ইস্কনের ওই মন্দিরের মুখপাত্র বলেন, “ওরা আমাদের ইস্কন মন্দিরকে টার্গেট করেছিল। ভাঙচুর করেছে। মন্দিরের ভেতরে বোমা বিস্ফোরণও করা হয়েছে।” প্রাণ বাঁচাতে বিগ্রহকে অন্তর্যামীর ভরসায় রেখে রাতের অন্ধকারে জঙ্গলে আশ্রয় নেন তাঁরা। তিনি বলেন, “আমি এখনও জঙ্গলেই লুকিয়ে রয়েছি। স্থানীয় কয়েকজনের বাড়িতে (Bangladesh Crisis) আশ্রয় নিতে গিয়েছিলাম। তারা মুখের ওপর দরজা বন্ধ করে দিয়েছিল। বলেছিল, আপনাদের আশ্রয় দিলে ওরা (মুসলমানরা) আমাদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেবে। অগত্যা জঙ্গলেই আশ্রয় নিতে হল। এখনও জঙ্গলেই লুকিয়ে রয়েছি। আপনাদের মাধ্যমে গোটা বিশ্বকে বলতে চাই, বাংলাদেশে হিন্দুরাই টার্গেট মুসলমানদের। ১৯৭১ থেকে ২০২৪ – হিন্দু-পীড়ন চলছেই।”
বাংলাদেশের আর একটি ইস্কনের মুখপাত্র যুধিষ্ঠির গোবিন্দ দাস বলেন, “খবর যা পেয়েছি, তাতে জেনেছি মেহেরপুরে আমাদের ইস্কনের মন্দিরে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। মন্দিরে জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার বিগ্রহ ছিল। মন্দিরে যে তিন ভক্ত ছিলেন, তাঁরা কোনওক্রমে পালিয়ে বেঁচেছেন। দুষ্কৃতীরা রেহাই (Bangladesh Crisis) দেয়নি বিগ্রহদের।” আধপোড়া বিগ্রহের ছবি ভাইরাল হয়েছে। তাতে দুঃখ পেয়েছেন ভারতীয় হিন্দুরা। তাতে অবশ্য কিছু যায় আসে না বাংলাদেশি মুসলমানদের।
সুপ্ত ইচ্ছে (Bangladesh Crisis)
ওয়াকিবহাল মহলের মতে, হিন্দুদের সম্পত্তি দখল যদি একটা উদ্দশ্যে হয়, তাহলে আরও একটা সুপ্ত ইচ্ছে আছে বাংলাদেশি মুসলমানদের। সেটা হল, বাংলাদেশকে হিন্দুশূন্য রাষ্ট্রে পরিণত করা। সেই কাজটাই সুচারুভাবে করে চলেছে বাংলাদেশি মুসলমানদের একটা বড় অংশ। তাই কোনও একটা ছুতো পেলেই বাংলাদেশি মুসলমানদের সফট টার্গেটে পরিণত হয় হিন্দুদের মন্দির ও আরাধ্য দেবতা। হিন্দু মতে বিগ্রহ নাবালক, তাই তাঁর সেবা করতে হয় শিশুপুত্র কিংবা শিশুকন্যার মতো। অভিভাবক যে গৃহস্থ, খুন করা হয় তাঁকেও।
স্পিকটি নট ‘সোনার বাংলা’র বুদ্ধিজীবীরা
যারা যুক্তি-বুদ্ধির ধার ধারে না, তারা যে দেবতাকেও রেহাই দেবে না, তা তো জলের মতোই পরিষ্কার। সংখ্যালঘুদের পালক চাপা দিয়ে রক্ষা করা যে সংখ্যাগুরুদের কর্তব্য, তা ধর্তব্যের মধ্যেই আনে না বাংলাদেশের সিংহভাগ মুসলমান। তাই দেশে হিন্দু নিধন যজ্ঞ হলেও, স্পিকটি নট ‘সোনার বাংলা’র বুদ্ধিজীবীরা। মুখে কুলুপ এঁটে বসে থাকেন বাংলাদেশের ভারতীয় জামাইরাও। তাই মুসলমানদের হাতে লাঞ্ছিত হতে হয় হিন্দুর দেবতাকে। ১৯৭১ সালে যখন স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম হয়, তখন সেই ডামাডোলের বাজারেও বাংলাদেশে লাঞ্ছিত হতে হয়েছে হিন্দুদের। যার জেরে প্রাণ বাঁচাতে কাতারে কাতারে বাংলাদেশি হিন্দু রাতের (Bangladesh Crisis) আঁধারের বুক চিরে চলে এসেছেন ভারতে। সেই সঙ্কটকালেও স্রেফ দেশমাতৃকাকে ভালোবেসে যাঁরা রয়ে গিয়েছিলেন ওপার বাংলায়, তাঁদের অবস্থা করুণ।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে হিন্দুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুক ভারত সরকার, আর্জি বিশ্ব হিন্দু পরিষদের
নিত্য কমছে হিন্দুর হার
পরিসংখ্যান (Islamist Mob) বলছে, স্বাধীন বাংলাদেশ গঠিত হওয়ার সময় সে দেশে হিন্দুর হার ছিল মোট জনসংখ্যার ১৩ শতাংশের আশপাশে। কমতে কমতে ৫৪-৫৫ বছরে সেটাই এসে দাঁড়িয়েছে মাত্র আট শতাংশে। এই সামান্য শতাংশকেও ভিটেমাটি ছাড়া করতে পারলে কেল্লাফতে। বাংলাদেশ হয়ে যাবে একশো শতাংশ মুসলমানের দেশ। এই মুসলমানের ‘দ্যাশ’ করতে গিয়েই খুন করা হচ্ছে সে দেশের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের (Bangladesh Crisis)। ২০২৪ সালের ছবিটাও সেই সময়কার চিত্রের চেয়ে খুব একটা আলাদা নয়।
অকৃতজ্ঞ!
সনাতন ধর্মের আঁতুড়ঘর যে ভারতের সাহায্য ছাড়া স্বাধীন হতে পারত না বাংলাদেশ, যে ভারতের আর্থিক সাহায্য ছাড়া বাংলা হতে পারত না সোনার বাংলা, সেই দেশেই স্লোগান ওঠে ‘ইন্ডিয়া আউট’। দিনের বেলায় যারা ‘ইন্ডিয়া আউট’ স্লোগান দেয়, সূর্য অস্ত গেলে তারাই লোটাকম্বল নিয়ে সীমান্ত পেরিয়ে দুমুঠো ভাতের আশায় চলে আসে ভারতে। তুষ্টিকরণের রাজনীতির কারবারিদের আশ্রয়ে এবং প্রশ্রয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জোগাড় করে তারা মিশে যায় ভারতীয় জনারণ্যে। ভারত হয়ে ওঠে ‘বিবিধের মাঝে মিলন মহানে’র দেশ। আর ‘আ-মরি বাংলা ভাষা’র দেশের (Islamist Mob) হিন্দুরা বলতে ভয় পান (Bangladesh Crisis), “আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি...”।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours