মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্বাচনী এজেন্ট তথা জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি শেখ সুফিয়ানকে নোটিশ পাঠাল ব্যাঙ্ক। কাঁথি কো- অপারেটিভ ব্যাঙ্কের নন্দীগ্রাম শাখার পক্ষ থেকে এই নোটিশ পাঠানো হয়েছে। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আদালতে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তৃণমূল (TMC) নেতা শেখ সুফিয়ান। এ নিয়ে সিপিএম ও বিজেপি তীব্র কটাক্ষ করেছে।
তৃণমূলের (TMC) ওই নেতার বিরুদ্ধে কেন নোটিশ পাঠাল ব্যাঙ্ক?
ব্যাঙ্ক সূত্রে খবর, সেখ সুফিয়ান নামে ওই তৃণমূল (TMC) নেতার ব্যাঙ্কে লোন বাকি রয়েছে ৪৯ লক্ষ টাকা। ২০১৪ সালে নিজের জাহাজ বাড়ি তৈরির জন্য ২৫ লক্ষ টাকা লোন নিয়ে ছিলেন তিনি। ২০২০ সালে ব্যবসার কাজে একটি ট্রলার কেনার জন্য তিনি ২৭ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার লোন নিয়েছিলেন। বাড়ির কিছুটা টাকা শোধ করলেও এখনও পর্যন্ত ৭ লক্ষ টাকা বাকি রয়েছে বলে ব্যাঙ্ক সূত্রে জানা গিয়েছে। যদিও ট্রলার কেনার পর সেই লোনও তিনি শোধ করেননি। ঋণ নেওয়ার পর তিন বছর কেটে গেলেও কিস্তির টাকা পরিশোধ করেননি। বিষয়টি কয়েকবার আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করেছিল ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। কিন্তু, লাভ হয়নি। এরপরই নোটিশ পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
কী বললেন কাঁথি কো- অপারেটিভ ব্যাঙ্কের কর্মকর্তা?
কাঁথি কো- অপারেটিভ ব্যাঙ্কের অন্যতম কর্ণধার শেখ অ্যাপোলো আলি বলেন “ওই ব্যক্তির দু’টি লোন রয়েছে। একটি হাউস বিল্ডিং লোন আর একটা ব্যবসা সংক্রান্ত লোন। দু’টি লোনের কিস্তি সময় মতো জমা না পড়ায় রিকভারি সেকশনে তাঁর ফাইল পাঠানো হয়েছে। তবে, এখনই নিলাম নোটিশ পাঠানোর কথা নয়। প্রথমে ডিফল্ট নেটিশ পাঠানো হবে। পরে, লোন পরিশোধ না করলে চূড়ান্ত নেটিশ ও পরবর্তী পর্যায়ে নিলামের নোটিশ পাঠানো হবে "।
কী বললেন তৃণমূল (TMC) নেতা শেখ সুফিয়ান?
জাহাজ বাড়ির মালিক শেখ সুফিয়ান গোটা বিষয়টি রাজনৈতিক চক্রান্ত হিসেবে দাবি করেছেন। তিনি বলেন " আমি ২০১৪ সালে বাড়ি তৈরি করার জন্য এবং ২০২০ ট্রলার কেনার জন্যই লোন নিয়ে ছিলাম। শুভেন্দু অধিকারী ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান ছিলেন। তখন আমার লোন অনুমোদন হয়েছিল। লোনের বেশ কিছু টাকা পরিশোধ করেছি। কিছুটা বাকি রয়েছে। টাকা শোধ করে দেব। তিনি আরও বলেন, ব্যাঙ্ক আমার সঙ্গে দ্বিচারিতা করেছে, ট্রলারটি ঠিক সময় দেয়নি। আমি দ্রুত লোক আদালতে যাচ্ছি।
কী বললেন সিপিএম নেতা?
সিপিএম নেতা পরিতোষ পট্টনায়ক বলেন,” সুফিয়ানবাবুর জাহাজ বাড়ি দেখতে স্বয়ং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এসেছিলেন। কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের কোলে বসা ব্যবসায়ীরা ব্যাঙ্ক ঋণ নিয়ে বিদেশে পালিয়ে গিয়েছেন। আর দিদির স্নেহধন্য সুফিয়ান বাবুও সমবায় ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়েছেন। এখন ওই টাকা শোধ করবেন কি না তা সময় বলবে। তবে, এসবের জন্যে আখেরে ক্ষতি হবে সাধারণ মানুষের "।
কী বললেন বিজেপি নেতৃত্ব?
বিজেপি-র তমলুক সাংগঠনিক জেলার সহ সভাপতি প্রলয় পাল কটাক্ষের সুরে বলেন “১০০দিনের কাজ,আবাস যোজনার বাড়ি সহ একাধিক চুরি থেকে বাঁচতে এই লোন দেখান হয়েছে। সবই লোক দেখানো ঘটনা। মানুষ বুঝবে যে হীরু ডাকাতের বংশধর সুফিয়ান লোন করে বাড়ি করেছে "।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours