মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মাঝে আর মাত্র একটা দিন। ভারতের ইতিহাস গড়ার জন্য আর একটু সময় ধৈর্য্য ধরতেই হবে। চাঁদের মাটি ছোঁয়ার সময় যতই এগিয়ে আসছে, ততই চড়ছে প্রত্যাশার পারদ। ততই বাড়ছে আশা। ইসরো (ISRO) জানিয়েছে, বুধবার সন্ধেয় ৬টায় সামান্য কিছু পরেই, চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণ করবে ‘চন্দ্রযান ৩’ (Chandrayaan 3)। তবে, তার আগেই সম্ভাব্য ল্যান্ডিং সাইটের ছবি সোমবার পাঠালো ল্যান্ডার ‘বিক্রম’।
চাঁদের দক্ষিণ মেরু দেখতে কেমন? ছবি প্রকাশ ইসরোর
চাঁদের মাটি থেকে মাত্র ২৫ কিলোমিটার দূরেই রয়েছে ‘চন্দ্রযান ৩’। চাঁদের বুকে নামার আগে শেষ প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারতের মহাকাশযান। বুধবার বিকেল ৫টা বেজে ৪৫ মিনিটে চন্দ্রপৃষ্ঠে নামার প্রক্রিয়া শুরু করবে ‘চন্দ্রযান ৩’ (Chandrayaan 3)। সন্ধেয় ৬টা ৪ মিনিট নাগাদ চাঁদের অনাবিষ্কৃত ও অদেখা দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করার কথা ‘ল্যান্ডার বিক্রম’-এর (Lander Vikram)। কেমন সেখানকার ভৌগলিক বৈচিত্র্য? কী আছে সেখানে? ল্যান্ডিংয়ের আগে, সেই ছবি ধরা পড়েছে ল্যান্ডারে লাগানো ক্যামেরায়। সোমবার সকালে তেমনই বেশ কয়েকটি ছবি ট্যুইটারে শেয়ার করা হয়েছে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থার হ্যান্ডেলে।
Chandrayaan-3 Mission:
— ISRO (@isro) August 21, 2023
Here are the images of
Lunar far side area
captured by the
Lander Hazard Detection and Avoidance Camera (LHDAC).
This camera that assists in locating a safe landing area -- without boulders or deep trenches -- during the descent is developed by ISRO… pic.twitter.com/rwWhrNFhHB
দক্ষিণ মেরুতে সফট-ল্যান্ডিং একটা বড়ো চ্যালেঞ্জ
পৃথিবী থেকে চাঁদের কেবলমাত্র একটি দিকই দেখা যায়। উল্টোদিকে কী আছে, তা পৃথিবী থেকে অধরা। চাঁদের এই দিককে বলা হয়ে থাকে ‘দ্য ডার্ক অফ দ্য মুন’। বিজ্ঞানীদের আরও দাবি, চির-আঁধারে ঘেরা চাঁদের দক্ষিণ মেরু অঞ্চলের পরতে পরতে রহস্য। এই দক্ষিণ মেরুই সবচেয়ে এবড়ো-খেবড়ো। রয়েছে শয়ে শয়ে গহ্বর। ফলে, এই অঞ্চলে সফট-ল্যান্ডিং করা একটা বড়ো চ্যালেঞ্জ। চাঁদের যে ছবিগুলো প্রকাশ পেয়েছে এদিন, সেগুলো তোলা হয়েছে ল্যান্ডার হ্যাজার্ড ডিটেকশন অ্যান্ড অ্যাভয়ডেন্স ক্যামেরায়। ইসরো জানিয়েছে, চাঁদে অবতরণের জন্য একটি সুরক্ষিত জায়গা খুঁজতে ‘ল্যান্ডার বিক্রম’-কে (Lander Vikram) সাহায্য করছে এই ক্যামেরা। অর্থাৎ, চাঁদের দক্ষিণ মেরুর যেখানে ‘চন্দ্রযান ৩’-এর (Chandrayaan 3) ল্যান্ডার অবতরণ করবে, সেখানে কোনওরকম বোল্ডার বা গভীর কোনও গর্ত না থাকে, বা জায়গাটা যাতে অবতরণের যোগ্য হয়, তা নিশ্চিত করার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে এই ক্যামেরা। অবতরণের সময় ভুল জায়গায় পা না পড়ে তাই আগেভাগেই এলাকায় চিহ্নিত করে রাখছে সে।
আরও পড়ুন: বুধবার সন্ধেয় চাঁদে পা ‘চন্দ্রযান ৩’-এর! কখন-কোথায় সরাসরি সম্প্রচার, জেনে নিন
অবতরণের সময় ল্যান্ডার গতি হবে ঘণ্টায় ৫ কিমি
চাঁদে অবতরণের বিষয়ে যথেষ্ট আশাবাদী এবং একইসঙ্গে সাবধানীও বটে ইসরো। গত ৫৭ বছরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, সাবেক সোভিয়েত এবং চিন ছাড়া অন্য কোনও দেশের মহাকাশযানই চাঁদে সফট ল্যান্ডিং করতে পারেনি। রবিবারই চাঁদে আছাড় খেয়ে ধ্বংস (পরিভাষায় হার্ড ল্যান্ডিং) হয় রাশিয়ার লুনা ২৫ ল্যান্ডার। যদিও, ইসরো বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত, এবার সব ঠিকঠাক হবে। যেখানে উৎক্ষেপণের সময় ‘চন্দ্রযান ৩’-এর (Chandrayaan 3) গতি ছিল ঘণ্টায় ৩৬ হাজার কিলোমিটার, সেখানে চাঁদের কক্ষপথে ঢোকার পরে তা হয় ঘণ্টায় ৬ হাজার কিলোমিটার এবং অবতরণের সময়ে হবে ঘণ্টায় মাত্র ৫ কিলোমিটার। অর্থাৎ, একেবারে পালকের মতো চাঁদের মাটি ছোঁবে ‘ল্যান্ডার বিক্রম’ (Lander Vikram)।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours