Aditya-L1: গভীর রাতে পৃথিবীর টান কাটিয়ে ফেলল আদিত্য, পাড়ি দিল ‘এল-১’ পয়েন্টের দিকে

ISRO Solar Mission: যখন সকলে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন, তখন বড় পরীক্ষায় উতরে গেল ভারতের সৌরযান...!
aditya-l1
aditya-l1

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: গভীর রাতের গুরিত্বপূর্ণ পরীক্ষায় সফল আদিত্য (Aditya-L1)। পঞ্চমবার কক্ষপথ বদলের প্রক্রিয়া সফল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই পৃথিবীর টান চিরতরে কাটিয়ে বেরিয়ে গেল ভারতের প্রথম সৌরযান (ISRO Solar Mission)। পাড়ি দিল তার চূড়ান্ত গন্তব্য ‘এল১’ পয়েন্টের দিকে, যা পৃথিবী ও সূর্যের মাঝে অবস্থিত একটি ‘হ্যালো’ পয়েন্ট। এদিন নিজেদের ট্যুইটার (অধুনা এক্স) হ্যান্ডলে ইসরো জানিয়েছে, সোমবার রাত ২টো নাগাদ (ইংরেজি তারিখ অনুযায়ী, মঙ্গলবার ভোর রাত ২টো) আদিত্য-এল১ পঞ্চম কক্ষপথ পরিবর্তন করে পৃথিবীর টানের বাইরে বেরিয়ে গিয়েছে।

ট্রান্স-ল্যাগ্রাঞ্জিয়ান পয়েন্ট ১ কক্ষপথে প্রবেশ আদিত্যর

সৌরযানের গোটা মিশনের জন্য এদিনের প্রক্রিয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এই প্রক্রিয়ার ফলে ট্রান্স-ল্যাগ্রাঞ্জিয়ান পয়েন্ট ১ কক্ষপথে আদিত্যর ইনসার্শন (TL1) বা প্রবেশ ঘটল। অভিযানের সাফল্যের নিরিখে এই প্রক্রিয়া সফল হওয়াটা ভীষণই জরুরি ছিল। কারণ, এটি অত্যন্ত জটিল ও সুক্ষ্ম প্রক্রিয়া। এখম আদিত্য (Aditya-L1) এই রাস্তা ধরে সোজা এগিয়ে যাবে। চূড়ান্ত গন্তব্য, পৃথিবী থেকে ১৫ লক্ষ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এল১ পয়েন্ট।

গত ২ সেপ্টেম্বর বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটায় সতীশ ধওয়ান স্পেস সেন্টার থেকে পিএসএলভি-সি৫৭ রকেটে চেপে মহাকাশে পাড়ি দেয় ১ হাজার ৪৮০ কেজি ওজনের আদিত্য-এল১ (ISRO Solar Mission)। উৎক্ষেপণের ১২৫ দিন পর এল১ পয়েন্টে পৌঁছনোর কথা ভারতের সৌরযানের। এর মধ্যে প্রথম ১৬ দিন পৃথিবীর চারপাশে চক্কর কাটতে কাটতে চার বার কক্ষপথ বদল প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় গতি সঞ্চয় করেছে আদিত্য-এল১ (Aditya-L1)। এদিন পঞ্চমবার লাফ মেরে এল১-এর উদ্দেশে যাত্রা শুরু করল আদিত্য। সেখানেই গিয়ে স্থায়ীভাবে থাকবে এবং সূর্যের জরিপ করবে ভারতের প্রথম সৌরযান।

আদিত্য-এল১ মিশনের লক্ষ্য কী?

‘আদিত্য-এল১’ মিশনের মূল লক্ষ্য হল, এই মহাকাশযানটি সূর্যের নানা রহস্য উন্মোচন করবে। ‘আদিত্য-এল১’ (Aditya-L1) উপগ্রহ মোট সাতটি পেলোড নিয়ে মহাকাশে যাবে। এগুলির মধ্যে অন্যতম হল— ভিসিবল এমিশন লাইন করোনাগ্রাফি(ভিইএলসি) এবং সোলার আল্ট্রাভায়োলেট ইমেজিং টেলিস্কোপ (এসএউআইটি) নামে দু’টি মূল পে লোড রয়েছে। অন্যগুলি হল— সোলার লো এনার্জি এক্স-রে স্পেক্ট্রোমিটার (এসওএলইএক্সএস), হাই এনার্জি এল১ অরবিটিং এক্স-রে স্পেক্ট্রোমিটার (এইচইএল১ওএস), আদিত্য সোলার উইন্ড পার্টিকল এক্সপেরিমেন্ট (এসপিইএক্স) এবং প্লাজ়মা অ্যানালাইজ়ার প্যাকেজ ফর আদিত্য (পিএপিএ)। 

এগুলির মধ্যে চারটি সূর্যের আলো পর্যবেক্ষণ করবে (ISRO Solar Mission)। বাকি তিনটি প্লাজমা ও ম্যাগনেটিক ফিল্ড পর্যবেক্ষণ করবে। মহাকাশের পরিবেশ, আবহাওয়া, তার উপর সূর্যের কী প্রভাব পড়ে, সে সব জানার চেষ্টা করবে ‘আদিত্য-এল১’ (Aditya-L1)। সূর্যের করোনা ও ফোটোস্পিয়ার, ক্রোমোস্পিয়ারের পর্যবেক্ষণ করবে বিভিন্ন ওয়েভব্যান্ড থেকে। সূর্যের উত্তাপ, সৌর পদার্থের নিঃসরণ, সৌরঝড়ের মতো সূর্যকেন্দ্রিক বিষয়গুলি বুঝতেও বিজ্ঞানীদের সাহায্য করবে। 

প্রতি মিনিটে একটি করে ছবি তুলবে সোলার ক্যামেরা

সূর্য গ্রহণ, সৌরঝড়, সূর্যের নানা অবস্থান পর্যবেক্ষণ করে কাছ থেকে ছবি তুলে ইসরোকে পাঠাবে ‘আদিত্য-এল১’ (Aditya-L1)। এই ছবি পাঠানোর কাজ করবে ভিসিবল এমিশন লাইন করোনাগ্রাফি(ভিইএলসি) এবং সোলার আল্ট্রাভায়োলেট ইমেজিং টেলিস্কোপ (এসএউআইটি) নামে দু’টি মূল পেলোড। ইসরো জানিয়েছে, সমস্ত যন্ত্র সঠিকভাবে কাজ করলে, ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি থেকে ‘আদিত্য-এল১’ (ISRO Solar Mission) প্রতিদিন ১৪৪০টি করে সূর্যের ছবি পাঠাবে। অর্থাৎ, প্রতি মিনিটে একটি করে ছবি তুলবে ভিইএলসি। ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব অ্যাস্ট্রোফিজিক্সের তথ্য অনুযায়ী, ১৯০ কেজির ভিইএলসি পেলোড আগামী পাঁচ বছর ধরে ছবি পাঠাবে। এটি উপগ্রহের ন্যূনতম আয়ু।

 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles