মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দোরগোড়ায় পঞ্চায়েত নির্বাচন। এ রাজ্যে তৃণমূলের (TMC) প্রধান প্রতিপক্ষ বিজেপিই (BJP)। অথচ জি-২০ (G-20) সম্মেলন উপলক্ষে দিল্লিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (PM Modi) সঙ্গে দেখা করবেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। এনিয়ে ‘দিদি-মোদি সেটিং’য়ের তত্ত্ব খাড়া করতে পারে বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেস সহ অন্যান্য দল। পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রক্কালে যা তৃণমূল নেত্রীর পক্ষে খুব একটা সুখকর হবে না। সেই কারণে এবার দিল্লি যাওয়ার আগেই তৃণমূল নেত্রী খোলসা করে দিলেন, কী কারণে এবার তিনি দিল্লি যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখাইবা করবেন কেন?
দিল্লি যাত্রার উদ্দেশ্য…
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক করতে ডিসেম্বরের ৫ তারিখে দিল্লি যাচ্ছেন তৃণমূল নেত্রী। এর আগে একাধিকবার নানা অছিলায় প্রধানমন্ত্রীকে এড়িয়ে গিয়েছেন মমতা (Mamata Banerjee)। তবে এই যে ৫ তারিখে দিল্লি যাচ্ছেন তিনি, তার আগে যেবার তিনি দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একান্তে বৈঠক করেছিলেন, সেবার সেটিং তত্ত্ব তুলে তাঁকে বিঁধেছিল বিজেপি সহ একাধিক দল। এবার যাতে বিরোধীরা সেই তত্ত্ব খাড়া করতে না পারে, তাই কী উদ্দেশ্যে তিনি দিল্লি যাচ্ছেন, বৃহস্পতিবার তা খোলসা করলেন বিধানসভায় দাঁড়িয়ে। এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, দিল্লিতে যাব প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে। এবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে নয়, দলের চেয়ারপার্সন হিসেবে যাব। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর কী নিয়ে আলোচনা হবে, তাও জানিয়ে দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। তিনি বলেন, জি-২০ সম্মেলন নিয়েই আলোচনা হবে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের চেয়ারপার্সনদের এই বৈঠকে ডাকা হয়েছে। আমিও দলের চেয়ারপার্সন হিসেবে যাব।
আরও পড়ুন: অভিষেকই ‘কয়লা ভাইপো’? মেনে নিচ্ছে তৃণমূল?
এর আগের বার বিরোধীদের সেটিং তত্ত্বের জবাব দিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী ((Mamata Banerjee))। বলেছিলেন, আমি রাজ্যের প্রাপ্য চাইতে গিয়েছিলাম। সেটাকে নাকি সেটিং বলে। ভিক্ষা চাইতে যাইনি, নিজেদের প্রাপ্য চাইতে গিয়েছিলাম। তিনি বলেছিলেন, আমি কারও সঙ্গে সেটিং করতে যাই না। সবাই আমার সঙ্গে সেটিং করতে আসে। রাজনৈতিক মহলের মতে, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর বৈঠক যাতে বিরোধীদের হাতিয়ার হয়ে উঠতে না পারে, তাই আগেভাগেই গেয়ে রাখলেন তৃণমূল নেত্রী। বৃহস্পতিবারই কেন্দ্রের তরফে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় রাজ্যকে দেওয়া হয়েছে ৮ হাজার ২০০ কোটি টাকা। তবে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় আটকে রয়েছে একশো দিনের কাজ প্রকল্পের টাকা। অথচ পঞ্চায়েত ভোটে ১০০ দিনের কাজ বড় ইস্যু। কারণ, অধিকাংশ গ্রামাঞ্চলে ১০০ দিনের কাজের মাধ্যমে অনেকে আয় করে থাকেন। ফলে, সেই টাকা আটকে যাওযায় বিপাকে পড়েছে রাজ্য। সম্প্রতি, ওই টাকা পেতে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন ও পঞ্চায়েতি রাজ মন্ত্রী গিরিরাজ সিংয়ের সঙ্গে দেখা করেছিল তৃণমূল প্রতিনিধি দল। কিন্তু, কোনও সুরাহা হয়নি। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে সেই টাকা পেতেই দিল্লির দরবারে ছুটছেন মমতা।
প্রসঙ্গত, আগামী বছর ভারতেই হবে জি-২০ সম্মেলন। এই সম্মেলন সফল করতে কোমর কষে নেমেছে মোদি সরকার। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতার সঙ্গে কথা বলে ওই সম্মেলন কীভাবে সফল করা যায়, তার রূপরেখা চূড়ান্ত করতেই বৈঠক ডাকা হয়েছে বলে ধারণা ওয়াকিবহাল মহলের।
Leave a Reply