S Alam: ইউনূস সরকারের বিরুদ্ধে লিগ্যাল অ্যাকশন নেওয়ার হুমকি টাইকুন এস আলমের?

Bangladesh crisis new party

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: তিনি টাইকুন। হাসিনা-উত্তর জমানায় বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে তাঁর সম্পদ। নষ্টও করা হয়েছে বর্তমানে সিঙ্গাপুরবাসী এই ব্যবসায়ীর (Bangladesh) সম্পত্তি। এসব ফেরত না দিলে আন্তর্জাতিকভাবে লিগ্যাল অ্যাকশন নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন এস আলম (S Alam) নামের ওই ব্যবসায়ী। সম্পদ ও বিনিয়োগ নিয়ে বিরোধের নিষ্পত্তিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ছ’মাসের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন এস আলম গ্রুপের কর্ণধার মো. সাইফুল আলম।

আন্তর্জাতিক সালিসি

এই সময়ের মধ্যে বিষয়টির নিষ্পত্তি না হলে আন্তর্জাতিক সালিসিতে যাবেন তিনি। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারে তাঁর সম্পদ বাজেয়াপ্ত ও বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে বলে দাবি আলমের। এ বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূস ও একাধিক উপদেষ্টার কাছে বিরোধ নিষ্পত্তির নোটিশ পাঠিয়েছেন এস আলম। সেই নোটিশেই বেঁধে দেওয়া হয়েছে ছ’মাস। আওয়ামি লিগ সরকারের সময় বাংলাদেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হয়ে গিয়েছে বলে দাবি ইউনূস সরকারের।

কী বলা হয়েছে নোটিশে

নোটিশে বলা হয়েছে, এই ক্ষতি আদায়ে সাইফুল আলম আন্তর্জাতিক আইনি প্রচেষ্টা শুরু করেছেন। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুরের মধ্যে ২০০৪ সালের দ্বিপাক্ষিক বিনিয়োগ চুক্তির কথাও উল্লেখ করা হয়েছে নোটিশে। ১৮ ডিসেম্বর জারি করা নোটিশে বলা হয়েছে, এস আলমের পরিবার ২০১১ সাল থেকে সিঙ্গাপুরে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। ২০২০ সালে তাঁরা বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ছেড়ে দিয়েছেন। জানা গিয়েছে, মার্কিন আইনি প্রতিষ্ঠান কুইন ইমানুয়েল অ্যান্ড সুলিভানের আইনজীবীরা এই নোটিশ পাঠিয়েছেন। নোটিশে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সরকার ও সরকারের বিভিন্ন সংস্থার কর্মকাণ্ড ও অবহেলার কারণে বিনিয়োগকারীদের অর্থাৎ এস আলম গ্রুপের বিনিয়োগ ও সম্পদমূল্য সম্পূর্ণভাবে বা আংশিকভাবে ধ্বংস করা হয়েছে।

বিনিয়োগ চুক্তি

বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, “শেখ হাসিনার শাসনকালে সরকার প্রধানের ঘনিষ্ঠ প্রভাবশালী ব্যবসায়ীরা গোয়েন্দা সংস্থার সহযোগিতায় ব্যাঙ্ক থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার করেছেন। এর মধ্যে বিতর্কিত ব্যবসায়ী গ্রুপ এস আলম একাই দেশের বাইরে পাচার করেছেন হাজার কোটি মার্কিন ডলার। আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে ব্যাঙ্ক ডাকাতির এটাই সব চেয়ে বড় ঘটনা।” তিনি বলেন, “শেখ হাসিনা সরকারের আমলে এস আলম গোষ্ঠী বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে।” অন্যদিকে সাইফুল (Bangladesh) বলেন, “বাংলাদেশ ব্যাঙ্ক এস আলম গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে যে ভীতি প্রদর্শনমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে, তার প্রেক্ষিতে সিঙ্গাপুরের নাগরিক হিসেবে ও আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ চুক্তির প্রেক্ষিতে তাঁর সুরক্ষা প্রাপ্য।”

কোটি কোটি টাকা পাচার!

বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের বক্তব্য, বিষয়গুলি তদন্তাধীন। তাই এ ব্যাপারে তারা কোনও মন্তব্য করবে না। হাসিনা সরকারের আমলে কোটি কোটি টাকা পাচার হয়েছে বলে অভিযোগ ইউনূস প্রশাসনের। প্রশ্ন হল, শেখ হাসিনা যখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, তখন যদি তিনি বিদেশে টাকা পাচার করেন, তাহলে তখন কেন কোনও কেন্দ্রীয় সংস্থা কিংবা বিরোধীরা এই অভিযোগ তোলেননি? প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর হাসিনার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তোলা হচ্ছে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশে সাধারণ নির্বাচনের আগে এভাবে জনমানসে হাসিনার বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলতে চাইছেন হাসিনা বিরোধীরা।

শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ

বাংলাদেশে শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ করা হয়েছিল ইউনূসের বিরুদ্ধে। তিনি গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান। ইউনূস-সহ চারজনের বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ আনা হয়েছিল। সেই সময় বাংলাদেশের কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতরের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান বলেছিলেন, “সাক্ষ্যপ্রমাণে ইউনূসের বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ প্রমাণ করতে পেরেছি। ফলে সর্বোচ্চ শাস্তি হবে বলেই আশা করছি।”

আরও পড়ুন: বসের সঙ্গে সহবাস করতে রাজি না হওয়ায় স্ত্রীকে তালাক ইঞ্জিনিয়ার স্বামীর

প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে মামলাটি করেন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন বিভাগের শ্রম পরিদর্শক (সাধারণ) এসএম আরিফুজ্জামান। মামলার নথি অনুসারে, আইএফডি কর্তারা ২০২১ সালের ১৬ অগাস্ট ঢাকার মিরপুরে গ্রামীণ টেলিকমের অফিস পরিদর্শন করে শ্রম আইনের বেশ কিছু ত্রুটি খুঁজে পান। সেই বছরেরই ১৯ অগাস্ট গ্রামীণ কর্তৃপক্ষকে চিঠি পাঠিয়ে বলা হয়, প্রতিষ্ঠানটির ৬৭ কর্মচারীকে স্থায়ী করার কথা ছিল, কিন্তু তা করা হয়নি। কর্মচারীদের পার্টিসিপেশন ও কল্যাণ তহবিল এখনও গঠন করা হয়নি। কোম্পানির যে লভ্যাংশ শ্রমিকদের দেওয়ার কথা ছিল, তার পাঁচ শতাংশও পরিশোধ (Bangladesh) করা হয়নি।

সেই ইউনূসই বাজেয়াপ্ত করছেন অন্য ব্যবসায়ীদের সম্পত্তি (S Alam)?

 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  WhatsappFacebookTwitterTelegram এবং Google News পেজ।

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share