মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: স্যালাইনকাণ্ডে (Saline Case) তোলপাড় রাজ্য। প্রসূতি মামনি রুইদাসের মৃত্যুর খবরে রাজ্যজুড়ে শোরগোল পড়ে যায়। সাধারণ রোগীর পরিবার-পরিজনদের মধ্যে জমেছে ব্যাপক ক্ষোভ। বেহাল স্বাস্থ্য ব্যবস্থার বিরুদ্ধে নিজেদের ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন অনেক রোগীর পরিবারই। এনিয়ে রাস্তায় নেমেছে বিজেপিও। বুধবার জন্ম নিয়ে শুক্রবারই মাতৃহারা হয়ে পড়ে সদ্যোজাত। জানা গিয়েছে, আরও চারজন প্রসূতি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন মেদিনীপুরে। তাঁদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। রবিবার রাতে, তাঁদের কলকাতায় নিয়ে আসা হয়েছে বলে খবর।
এই আবহে মমতা সরকারকে কাঠগড়ায় তুললেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। একের পর এক বিস্ফোরক অভিযোগ তিনি এনেছেন রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে। মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির তো কেউ সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করান না, এমন কটাক্ষও করেন শুভেন্দু। এপ্রসঙ্গে তাঁর নিশানায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। একইসঙ্গে জাল ওষুধ কারবারীদের টাকার মোটা অংশ কালীঘাটে পৌঁছে যায় বলেও মন্তব্য করেন বিরোধী দলনেতা। এই কাণ্ডে রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগমের বিরুদ্ধে ক্রিমিনাল অফেন্সের এফআইআর হওয়া উচিত বলে দাবি করেন বিরোধী দলনেতা।
স্যালাইনকাণ্ডে (Saline Case) ইডি তদন্ত চেয়েছেন বিরোধী দলনেতা
স্যালাইনকাণ্ডে বিস্ফোরক অভিযোগ আনলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির কেউ সরকারি হাসপাতালে যায় না, বেসরকারি হাসপাতালে যায়। (চিকিৎসা করাতে) সিঙ্গাপুরে যায়, আমেরিকায় যায়। এক কোটি টাকা ডিপোজিট রাখতে হয় এমন জায়গায় যায় চিকিৎসা করতে। আমেরিকার রাষ্ট্রপতির ওখানে চিকিৎসা হয়। আমাদের সাধারণ মানুষকে মারছে।’’ একইসঙ্গে তিনি স্যালাইনকাণ্ড নিয়ে ইডির তদন্তের দাবিও তুলেছেন। অতীতে একাধিকবার নিজের চিকিৎসা করাতে বিদেশে যেতে দেখা গিয়েছে তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এদিন শুভেন্দু তাঁকেই তোপ দাগলেন বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গেও কথা হয়েছে, দাবি শুভেন্দু অধিকারীর
রাজ্যের স্যালাইনকাণ্ড নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে বলেও দাবি করেন শুভেন্দু। একইসঙ্গে রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগমকে কাস্টডিতে নিয়ে তদন্তের দাবি তুলেছেন বিরোধী দলনেতা। শুভেন্দু বলেন, ‘‘আমি ট্যুইট (বর্তমানে এক্স মাধ্যম) করার পরে নির্দেশিকা (Saline Case) দিয়েছে। ১৩ জনের কমিটি যেটা গিয়েছিল তারা রিপোর্ট দিয়েছে সন্ধ্যার পরে। অনেক কিছু হবে। ইডি যাতে এই তদন্তটা নেয়, সেটা আমরা দাবি করেছি। আমি নাড্ডাজিকে বলেছি, ডাইরেক্টরেট অফ ড্রাগ কন্ট্রোল (DCGI) আছে। তারা এসে ব্যবস্থা নিক। নারায়ণস্বরূপ নিগমকে কাস্টডিতে নিতে হবে। ব্ল্যাকলিস্টেড কোম্পানিকে দিয়ে টেন্ডার করিয়েছে।’’ প্রসঙ্গত, গত শনিবারই নিজের এক্স হ্যান্ডলে প্রসূতি মৃত্যু নিয়ে সরব হন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা।
One pregnant lady died after child birth and four other pregnant women are admitted in Critical Care Unit (CCU) & Intensive Care Unit (ICU) at the Medinipur Medical College after becoming “critically ill” when administered with “expired” saline.
This tragic incident rekindles… pic.twitter.com/myPN1w83I6
— Suvendu Adhikari (@SuvenduWB) January 11, 2025
কালীঘাটের সঙ্গে টাকার লেনদেনের অভিযোগ বিরোধী দলনেতার
কালীঘাটের সঙ্গে টাকার লেনদেন (Saline Case) হয়েছে বলেও তিনি দাবি করেন। বিরোধী দলনেতার অভিযোগ, ‘‘পশ্চিমবঙ্গ ফার্মাসিউটিক্যালের ডিরেক্টর হলেন বহরমপুরের মুকুল ঘোষ। এই মুকুল ঘোষের সঙ্গে সরাসরি কালীঘাটের যোগ রয়েছে। টাকার বিনিময়ে জাল ওষুধ সাপ্লাই করে।’’
কয়েকশো ভুয়ো ওষুধ কোম্পানি আছে বলে অভিযোগ শুভেন্দুর
নিজের এক্স হ্যান্ডলের পোস্টে শুভেন্দু লেখেন, ‘‘আমার কাছে নির্দিষ্ট সূত্রে খবর আছে যে, পশ্চিমবঙ্গ ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেড নামক কোম্পানিটির ডিরেক্টরদের নামে কয়েকশো ভুয়ো কোম্পানি রয়েছে। তাদের ফার্মের ওপর এত গুরুতর নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও কীভাবে তারা পশ্চিমবঙ্গে রাজ্য সরকার পরিচালিত স্বাস্থ্য পরিষেবা কেন্দ্রগুলিতে (Saline Case) নিম্নমানের ওষুধ সরবরাহ করার অনুমতি পায়?’’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের উচিত বলে মনে করেন বিরোধী দলনেতা
শুভেন্দু অধিকারীর মতে, এই ঘটনায় যাঁরা যুক্ত, তাঁদের সঙ্গে বড় মাথার যোগ রয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘আমার তো মনে হয় স্বাস্থ্যসচিব ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ক্রিমিনাল অফেন্সের এফআইআর হওয়া উচিত। কারণ, ২০২২ সালে যে কোম্পানির মেয়াদ শেষ, নারায়ণ স্বরূপ নিগম কী করে ৬ মাসের এক্সটেনশন দিয়েছেন এই কোম্পানিকে? এক্সচেঞ্জ অফ মানি। সিঙ্গল অ্যাজেন্ডা টু আর্ন মানি, টু কালেক্ট মানি। অনলি থিং ইজ মানি। টিএমসি মিনস মানি মানি মানি। আমি কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জেপি নাড্ডাজিকে অনুরোধ করেছি যাতে ড্রাগ কন্ট্রোলার কমিশনার এই বিষয়ে অ্যাকশন নেন। আমি মনে করি, ইডির এই কেসটা নিয়ে নেওয়া উচিত।’’
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।
Leave a Reply