Health Card: স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে মিলছে না পরিষেবা! নতুন কার্ড করতেও অনীহা, কোথায় জানেন?

স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের জন্য দার্জিলিং জেলায় গতবারের তুলনায় এবার অনেক কম আবেদন জমা পড়েছে
Health_Card
Health_Card

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: স্বাস্থ্যসাথী কার্ড (Health Card) ফিরিয়ে দিচ্ছে নার্সিংহোম। এই প্রকল্প চালু হওয়ার পর থেকেই এমনই অভিযোগ। স্বাস্থ্যসাথী (Health Card) কার্ড নার্সিংহোমগুলি না নেওয়ার কারণেই কী সাধারণ মানুষ আর এই কার্ড করতে চাইছেন না? সদ্য সমাপ্ত ১০ দিনের দুয়ারে সরকার শিবিরে দার্জিলিং জেলায় স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের জন্য আবেদন কম পড়ায় এই প্রশ্ন জোরালো হয়ে উঠেছে। স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিয়ে মানুষ আর প্রতারিত হতে চাইছেন না বলেই কী আর নতুন করে কেউ আবেদন করছেন না?

কী বলছেন স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের (Health Card) উপভোক্তারা?

সরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেও স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের (Health Card)  সুবিধা পাচ্ছেন না গরিব মানুষ। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে চিকিৎসার সুবিধা না পাওয়ারও অনেক অভিযোগ রয়েছে। মেডিক্যাল মোড়ের বাসিন্দা বিজয় ছেত্রীর পা ভেঙেছিল। সম্প্রতি উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তাঁর পায়ে অস্ত্রোপচার হয়। তার মা মীনা ছেত্রী বলেন, আমরা গরিব। স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নেয়নি। ধারদেনা করে ৩৩ হাজার টাকা দিয়ে বাইরে থেকে প্লেট, স্ক্রু কিনে দেওয়ার পর আমার ছেলের অস্ত্রোপচার হয়। বাগডোগরার আমির ওরাওঁয়েরও একই অভিযোগ। তিনি বলেন, আমার বাবার স্পাইনালকর্ডে অস্ত্রোপচার হয়েছে। স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে না নেওয়ায় বাইরে থেকে ৫৮ হাজার টাকার প্লেট, স্ক্রু সহ বিভিন্ন চিকিৎসা সরঞ্জাম কিনে দিতে হয়েছে আমাকে। কার্ডে কোনও পরিষেবা মেলেনি।

খোদ সরকারি হাসপাতালেও কেন মিলছে না এই কার্ডের (Health Card) সুবিধা ?

উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার ডাঃ সঞ্জয় মল্লিক বলেন, যে ওষুধের দোকান এবং এজেন্সির মাধ্যমে আমরা স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের সুবিধা গরিব মানুষকে দিতাম তাদের প্রচুর টাকা বকেয়া পড়ে রয়েছে। তাই, সেই এজেন্সি এবং ফার্মাসি আমাদের আর ওষুধ দিচ্ছে না। এ কারণেই স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের সুবিধা আমরা দিতে পারছি না। নার্সিংহোমগুলিরও একই বক্তব্য।

টক টু মেয়র ফোন ইন অনুষ্ঠানেও স্বাস্থ্যসাথী কার্ড (Health Card)  নিয়ে কী অভিযোগ করা হল মেয়রকে?

প্রতি শনিবার টক টু মেয়র ফোন ইন অনুষ্ঠান হয়। আর সেই অনুষ্ঠানে শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেবকেও স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিয়ে এমন অভিযোগ প্রায়শই শুনতে হচ্ছে। ১৫ এপ্রিল শিলিগুড়ি পুরসভার ৪৭ নম্বর ওয়ার্ডের গৃহবধূ পায়েল দে মেয়র গৌতম দেবকে ফোনে জানান, মাটিগাড়ার একটি নার্সিংহোমে তাঁর স্বামীর হৃদরোগের ব্যয়বহুল চিকিৎসা চলছে। স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিচ্ছে না নার্সিংহোম।

কী বললেন জেলাশাসক?

দার্জিলিংয়ের জেলাশাসক এস পন্নমবালম বলেন, পয়লা এপ্রিল থেকে দার্জিলিং জেলায় ১০ দিনের দুয়ারে সরকার শিবিরে প্রথম ন'দিনে মোট প্রায় ৬৫ হাজারের কিছু বেশি আবেদন জমা পড়েছে। তারমধ্যে মাত্র ১০ হাজারের কিছু বেশি স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের আবেদন জমা পড়েছে। গতবারের তুলনায় এই সংখ্যাটা অনেকটাই কম।

কী বললেন বিজেপি নেতৃত্ব?

বিজেপির শিলিগুড়ি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তথা মাটিগাড়া-নকশালবাড়ির বিধায়ক আনন্দময় বর্মন বলেন, রাজনৈতিক কারণে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রের আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প এরাজ্য গ্রহণ করেনি। স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প চালু করলেও রাজ্য সরকারের চরম আর্থিক সঙ্কটের কারণে সেই টাকা দিতে পারছেন না। স্বাস্থ্যসাথী কার্ড (Health Card) নিয়ে মানুষ চিকিৎসা করাতে গিয়ে প্রতারিত হচ্ছেন। মুখ্যমন্ত্রী টাকার জন্য কেন্দ্রের কাছে দরবার করেন, ধর্নায় বসেন। তাহলে গরিব মানুষকে আয়ুষ্মান ভারত কার্ডে বিনামূল্যে চিকিৎসার সুযোগ থেকে কেন বঞ্চিত করছেন? মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন সাধারণ ও গরিব মানুষকে কেন্দ্রর প্রাপ্য সুবিধা থেকে আর বঞ্চিত করবেন না। আয়ুষ্মান ভারত কার্ডে গরিব মানুষকে বিনামূল্যে চিকিৎসার সুযোগ নিতে দিন।

কী বললেন তৃণমূল নেতৃত্ব

তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা (সমতল) সভানেত্রী পাপিয়া ঘোষ বলেন, স্বাস্থ্যসাথী কার্ড (Health Card) নার্সিংহোম ফিরিয়ে দিচ্ছে এমন অভিযোগ আমরা পেয়েছি। শিলিগুড়ি শহর সহ জেলার বেশকিছু নার্সিংহোম স্বাস্থ্য সাথীর কার্ড গ্রহণ করছে না। আমাদের সঙ্গে যেসব মানুষ যোগাযোগ করেন তাদের সমস্যার সমাধানের উদ্যোগ নিই। কিন্তু, তারজন্য এবারের স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে আবেদনপত্র কম জমা পড়েছে এটা ঠিক নয়। আসলে সকলেরই প্রায় স্বাস্থ্যসাথী কার্ড (Health Card) হয়ে গিয়েছে।

 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles