মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ওয়াকফ বোর্ডের জোরজুলুম কমাতে উদ্যোগী সরকার। সূত্রের খবর, ওয়াকফ আইনে বড়সড় পরিবর্তন (Waqf Act Amendment) আনার চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছে। জানা গিয়েছে, ওয়াকফ আইনে ৪০টি সংশোধনী আনার অনুমতি দিয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। সূত্রের খবর, সোমবার সংসদে সংশোধনী বিল পেশ হতে পারে। যদিও বিল নিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। আসাদউদ্দিন ওয়াইসি সহ মুসলিম সাংসদরা অভিযোগ করছেন, ওয়াকফ বোর্ডের ক্ষমতা কমাতেই কেন্দ্রীয় সরকার এই উদ্যোগ নিয়েছে। মনে করা হচ্ছে, ৫ অগাস্ট এই বিল সংসদে আনা হতে পারে। ৫ অগাস্ট মোদি সরকারের জন্য একটি বিশেষ দিন। ৫ অগাস্ট, ২০২০ রাম মন্দিরের ভুমি পূজন হয়েছিল। ৫ অগাস্ট, ২০১৯, ৩৭০ ধারা তুলে দেওয়ার বিল সংসদে পেশ হয়েছিল। প্রসঙ্গত ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু দেশভাগের পর ১৯৫৪ সালে ভারতের মুসলিমদের ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে ওয়াকফ বোর্ড তৈরি করেছিলেন। ওয়াকফ বোর্ড গঠনের পর থেকেই এর কর্মপদ্ধতি নিয়ে বিভিন্ন মহলের প্রশ্ন এবং আপত্তি (Waqf Disputes) ছিল।
ওয়াকফের জুলুম কমাতে উদ্যোগী সরকার (Waqf Act Amendment)
জানা গিয়েছে, ওয়াকফ বোর্ডের এক্তিয়ার এবং ক্ষমতা নতুন করে নির্ধারণ করাই লক্ষ্য সরকারের। তাই ওয়াকফ আইনে ৪০ টি সংশোধনী (Waqf Act Amendment) আনার ভাবনাচিন্তা করছে সরকার। এর আগে যে কোনও সম্পত্তি বা জমি কোনও রকম সরকারি পর্যালোচনা ছাড়াই ওয়াকফ সম্পত্তি বলে গণ্য করা হত। অভিযোগ উঠছে আদিবাসী এবং দলিতদের জমিও ওয়াকফ সম্পত্তি (Waqf Disputes) ঘোষণা করে কব্জা করা হয়।
Waqf Act should not be amended, but abolished. Waqf Board has misused its power to occupy lands across India.
— श्रवण बिश्नोई (किसान) (@SharwanKumarBi7) August 4, 2024
Example - Wakf Board claimed ownership of entire Thiruchendurai village in Tamil Nadu
This village has 1500-year-old Manendiyavalli Sametha Chandrasekhara Swamy Temple. pic.twitter.com/bA63QtvqVI
তাজমহল থেকে মন্দির সবই নাকি ওয়াকফের! (Waqf Disputes)
২০০৫ সালে তাজমহলকে নিজেদের সম্পত্তি বলে ঘোষণা করেছিল ওয়াকফ। এর পর সরকারি সম্পত্তি ফেরত পেরে কোর্টে কালঘাম ছুটেছিল পুরাতত্ব বিভাগের। অনেক মন্দিরের সম্পত্তি ওয়াকফ দখল করেছে বলে অভিযোগ। ২০২৩ সালে তামিলনাডুর থিরুচি জেলায় চোল রাজা পরন্তক চোলের আমলে তৈরি ১,১০০ বছর পুরোনো মানেন্দিয়াবল্লী চন্দ্রশেখর স্বামী মন্দির ও সংলগ্ন ৬টি গ্রামের ৩৬৯ একড় জমি নিজেদের বলে দাবি করেছে। এরকম হাজারো ছোট-বড় উদাহরণ রয়েছে ওয়াকফ বোর্ডের (Waqf Disputes) জমি জালিয়াতির। অভিযোগ, জমি দখলের জন্য ওয়াকফ বোর্ড যা খুশি করে চলেছে। যেহেতু কোনও রকম সম্পত্তি সরকারি পর্যালোচনা ছাড়াই ওয়াকফ আইন বলে নিজের ক্ষমতা প্রয়োগ করে ওয়াকফ সম্পত্তি বলে গণ্য করতে পারে, সে ক্ষেত্রে অনেক বিবদমান সম্পত্তি ওয়াকফ নিজেদের বলে ঘোষণা করেছে। ওয়াকফের কাছে এত সম্পত্তি রয়েছে, যা দেশের কোনও সরকারি কিংবা বেসরকারি সংস্থার কাছেও নেই। ১৯৯৫ এবং ২০১৩ (Waqf Act Amendment) সংশোধনীতে ওয়াকফ বোর্ডকে নিরঙ্কুশ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল। যে কোনও ব্যক্তি বা সংস্থার জমি বা সম্পত্তি নিজেদের ঘোষণা মতো অধিকার করে নিতে পারে ওয়াকফ বোর্ড।
ওয়াকফের ক্ষমতা হ্রাসের ইঙ্গিত
নয়া সংশোধনীতে (Waqf Act Amendment) কোনও সম্পত্তি বা জমি ওয়াকফ বোর্ড দাবি জানালে, বাধ্যতামূলক সরকারি পর্যালোচনার নিয়ম চালু করার পক্ষে সরকার। যে সম্পত্তি নিয়ে ব্যক্তিগত মালিকানা বা ওয়াকফ বোর্ডের বিবাদ (Waqf Disputes) চলছে, সেই সম্পত্তির মালিকানা আদতে কার তাও খতিয়ে দেখার এক্তিয়ার সরকার নিজেদের নিয়ন্ত্রণে আনতে চাইছে। এমনকি ওয়াকফ বোর্ড গঠন এবং পরিচালনার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আসতে পারে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। জানা গিয়েছে, শুক্রবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। চলতি সপ্তাহে সংসদে এই বিষয়টি তুলে ধরা হবে। বর্তমানে ৯.৪ লক্ষ একর জমি ওয়াকফ বোর্ডের কাছে রয়েছে। ১৯৯৫ সালে নতুন ওয়াকফ আইন এবং ২০১৩ সালে ইউপিএ সরকারের আমলে ওয়াকফ আইনে সংশোধনী এনে ওয়াকফ বোর্ডকে নিরঙ্কুশ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল।
#WATCH | On media reports that the central government is likely to bring a bill to curb the powers of the Waqf Board over assets, AIMIM Chief Asaduddin Owaisi says, "Firstly, when Parliament is in session, the central government is acting against parliamentary supremacy and… pic.twitter.com/XJ7hixY7UZ
— ANI (@ANI) August 4, 2024
নানা মুনির নানা মত
ওয়াকফ বোর্ডের সংশোধনী মামলায় স্বামী চক্রপাণী মহারাজ বলেন, ওয়াকফ বোর্ড নিজেই দেশের ভিতরে আরেকটা দেশ। ওয়াকফ বোর্ডের মান্যতা রদ করা উচিত। দেশের ভিতরে মানব কল্যাণের জন্য সরকার থাকা সত্বেও আইনের ফাঁক গলে ওয়াকফ বোর্ড যেভাবে সমান্তরাল (Waqf Disputes) প্রশাসন চালাচ্ছে তা সংবিধানের পরিপন্থী। ধর্মনিরপেক্ষ দেশে এভাবে ধর্মের নামে নির্দিষ্ট কিছু লোককে অতিরিক্ত এবং নিরঙ্কুশ ক্ষমতা প্রদান সুবিধা সংবিধানের মূল ভাবনার পরিপন্থী। সকলের জন্য আইন সমান হলে ওয়াকফ বোর্ডের প্রয়োজনীয়তা থাকে না। অন্যদিকে ওয়াকফ বোর্ডের সংশোধনী আনার বিরুদ্ধে হায়দরাবাদের সংসদ আসাদউদ্দিন ওয়াইসি। দুদিন আগেই সংসদে হজ্ব কমিটির বিরুদ্ধে সরব হলেও ওয়াকফ বোর্ডের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন :‘‘লম্বা বিচার প্রক্রিয়ায় বিরক্ত সাধারণ মানুষ’’, মত দেশের প্রধান বিচারপতিরই
হায়দ্রাবাদের সাংসদদের মতে, “সরকার চাইছে সংশধনী এনে (Waqf Act Amendment) ওয়াকফ বোর্ডের ক্ষমতা কমিয়ে দিতে। সে কারণেই তড়িঘড়ি করে বিল আনা হচ্ছে।”
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours