Waqf Act: ওয়াকফ আইনই বেআব্রু করে দিয়েছিল নেহরুর মুসলমান প্রীতি

Congress: তোষণের রাজনীতি কংগ্রেসের রক্তে, নেহরুর মুসলমান প্রেমেই তা স্পষ্ট...
nehru
nehru

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: স্বাধীন ভারতকে সংবিধান দিয়েছিল ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকার। তবে তা ঠিকঠাক মেনে চলা হয় না বলে অভিযোগ। বিশেষত প্রপার্টি ম্যানেজমেন্ট এবং ধর্মীয় অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে। ১৯৫৪ সালে স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু (Congress) ওয়াকফ আইন (Waqf Act) প্রণয়ন করেছিলেন। সেই থেকে বিতর্কের কেন্দ্রে এই আইন। আইনটির উদ্দেশ্য হল, ইসলামিক চ্যারিটেবল ট্রাস্ট বা এনডাওমেন্টগুলিকে (ওয়াকফ) সরাসরি কেন্দ্রীয় সরকার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত একটি সংস্থায় একত্রিত করে রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণে রাখা।

ওয়াকফ আইন সংশোধনী

১৯৬৪ সালে পাশ হয় সংশোধনী। এর বলে প্রতিষ্ঠা হয়েছিল কেন্দ্রীয় ওয়াকফ কাউন্সিল। ১৯৯৫ সালে আরও একটি সংশোধনী পাশ হয়। এতে প্রতিটি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলকে ওয়াকফ বোর্ড তৈরির অনুমতি দেওয়া হয়। সমালোচকদের মতে, সরকার যদি ইসলাম ধর্মাবলমন্বীদের মতো অন্য ধর্মের সম্পত্তি রক্ষায় সক্রিয় হত, তাহলে ভালো হত। হিন্দু মন্দির পরিচালনার জন্য পৃথিবীতে কোথাও কোনও হিন্দু বোর্ড নেই। রাষ্ট্রীয় তত্ত্ববধানেও কোনও মন্দির পরিচালিত হয় না। এরই উল্টো দিকে যদি ১৯৯৫ সালের ওয়াকফ অ্যাক্ট দেখি, তাহলে দেখব, আইনটি মুসলিমবাদী। সংশোধনীতে যেসব পরিবর্তন আনা হয়েছে, সেগুলির সাহায্যে ধর্মীয় সংগঠনটির অতিথি সদস্যরা হবেন পাবলিক অফিসার। এটিও অন্যান্য ধর্মের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। ওয়াকফ বোর্ড নামে যে ইসলামিক বোর্ড রয়েছে তাদের নামে সম্পত্তি কীভাবে হয়, সে প্রশ্নও উঠেছে। সমালোচকদের মতে, যে পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়, তাতে স্বচ্ছতা ও ন্যায্যতার অভাব রয়েছে। এই জাতীয় সন্দেহজনক কার্যকলাপের মধ্যে তাজমহলকেও অনেকে ওয়াকফ কিংবা এনডাওমেন্টের সম্পত্তি বলে দাবি করে।

তুষ্টিকরণের রাজনীতির পর্দা ফাঁস

নেহরুর ১৯৫৪ সালের আইনের অন্তঃস্থলে যে মুসলমান তোষণের বীজ রোপিত হয়েছিল, কংগ্রেসের পরবর্তী জমানায় বস্তুত তা মহীরুহে পরিণত হয়। যার প্রমাণ মেলে ২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের সময়। এই সময় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী কংগ্রেসের মনমোহন সিং বলেছিলেন, “আমি এখনও বিশ্বাস করি, আমাদের সম্পদের ওপর প্রথম দাবি মুসলমানদের।” মনমোহনের এহেন মন্তব্যে মুখোশ খুলে যায় কংগ্রেসের। সমালোচকদের মতে, মনমোহনের এহেন মন্তব্যের অর্থ হল, মুসলমান তোষণ কংগ্রেসের একটি সুষ্পষ্ট নীতি। সংরক্ষণ থেকে শুরু করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কীভাবে মুসলমানদের আরও বেশি সুবিধা দেওয়া যায়, দশকের পর দশক ধরে সেই চেষ্টাই করে গিয়েছে সোনিয়া গান্ধীর দল। রাজনৈতিক মহলের মতে, কংগ্রেসের (Congress) লক্ষ্য মুসলিম ভোটব্যাঙ্ক অটুট রাখা। তা করতে গিয়েই নির্লজ্জভাবে একাধিক পদক্ষেপ করেছে গ্র্যান্ড ওল্ড পার্টি। মুসলমানদের জন্য একাধিক পদক্ষেপ কংগ্রেস সরকার নিলেও, মুসলমানদের আর্থ-সামজিক অবস্থার (Waqf Act) পরিবর্তন হয়েছে খুব সামান্যই। মুসলমানদের কেন এই হাল, সে প্রশ্নও ওঠে বই কি! দিল্লি ওয়াকফ বোর্ডের দখলে থাকা ১২৩টি সম্পত্তির দখল যখন কেন্দ্রীয় হাউজিং অ্যান্ড আরবান অ্যাফেয়ার্স মন্ত্রক নেয়, তখন বোর্ডের অন্দরেই দেখা গিয়েছিল বিতর্ক।

ওয়াকফ কী

ওয়াকফ (Waqf Act) বলতে বোঝায় সেই সব সম্পত্তি বোঝায়, যেগুলি ধর্মীয় কিংবা দাতব্যের উদ্দেশ্যে ইসলামকে দেওয়া হয়েছে। এই সম্পত্তি স্থাবর কিংবা অস্থাবর হতে পারে। মানুষ যখন ওয়াকফকে কোনও সম্পদ দেয়, সেটা চিরকালের জন্য দেয়। জানা গিয়েছে, ভারতে বর্তমানে ওয়াকফ ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম প্রায় ৮.৫ লাখ সম্পত্তি রেকর্ড করেছে। সম্পত্তির বহরের হিসেবে ধরলে ওয়াকফের সম্পত্তির পরিমাণ সেনাবাহিনী এবং রেলের সম্পত্তির পরেই। ১৯৯৫ সালের ওয়াকফ অ্যাক্ট অনুযায়ী এই সব সম্পত্তির ওপর গভর্ননেন্স করা হয়েছে সার্ভে কমিশনের দ্বারা। সম্পত্তিগুলি নথিভুক্ত করতেই এই পন্থা অবলম্বন করা হয়েছিল। মুত্তাওয়ালিশ নামে একটি ট্রাস্টি এই সব সম্পত্তি ম্যানেজ করত। রাজ্যস্তরে তাদের ওপর নজরদারি চালাত ওয়াকফ বোর্ড। এগুলি স্থাপন করেছিল সেন্ট্রাল ওয়াকফ কাউন্সিল। এই কাউন্সিল সরকারকে ওয়াকফ সম্পত্তির বিষয়ে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকে পরামর্শ দেয়।

ধনী-দরিদ্রের মধ্যে বিস্তর ফারাক

সম্প্রতিক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ভারতের বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে ধনী-দরিদ্রের মধ্যে বিস্তর ফারাক। ২০২০ সালের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ দলিত স্টাডিজের করা সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, দেশের মোট সম্পদের ৪১ শতাংশ রয়েছে হিন্দুদের হাতে। এর মধ্যে আবার হিন্দু ওবিসিদের হাতে রয়েছে ৩১ শতাংশ। বাকিদের হাতে বাকি ১০ শতাংশ। মুসলমানদের হাতে রয়েছে ৮ শতাংশ। তফশিলি জাতি এবং উপজাতিদের হাতে রয়েছে যথাক্রমে ৭.৩ এবং ৩.৭ শতাংশ। যা আদতে জনসংখ্যার মধ্যে বৈষম্যকেই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়।

আরও পড়ুন: বোনকে নিয়ে দেশ ছেড়ে ভারতে হাসিনা, আপাতত ক্ষমতায় সেনা, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ কী?

ওয়াকফ বোর্ডের ভূমিকা কেন্দ্রীভূত কেবল সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণেই। তার জেরে মুসলমানদের যে আর্থ-রাজনৈতিক অবস্থার বিশেষ উন্নতি কংগ্রেস জমানায় হয়নি, সেদিকে নজর নেই তাদের। যার জন্য বৈষম্য বেড়েই চলেছে কংগ্রেস আমলে। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, ওয়াকফ সম্পত্তির কিছু অংশও যদি শিক্ষাখাতে ব্যয় করা হত, তাহলে পরিবর্তন হত মুসলমানদের আর্থ-সামাজিক অবস্থানের। উন্নতি হত (Congress) দেশের জিডিপি। যার সুফল ভোগ (Waqf Act) করতেন আদতে তামাম ভারতবাসীই।

 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

 

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles