মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দক্ষিণ দিনাজপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্রুত উপাচার্য নিয়োগের দাবিতে রাজ্যপালের দ্বারস্থ হবে বিজেপি। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার পুরো পরিস্থিতির জন্য রাজ্য সরকার ও মুখ্যমন্ত্রীকে সরাসরি দায়ী করেছেন। তাঁর কটাক্ষ, 'বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রীর কোনও ধারণা আছে বলে মনে হচ্ছে না। তিনি আদৌ কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছেন কি না, তা অবশ্য আমার জানা নেই। কিন্তু তাঁর যে কোনও ধারণা নেই, রাজ্যে একের পর এক ভোট বিশ্ববিদ্যালয় (Education) গড়ে তিনি তা বুঝিয়ে দিয়েছেন। দক্ষিণ দিনাজপুরেরটাও একটা ভোট বিশ্ববিদ্যালয়। হয়তো পরের ভোটে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বালি, সিমেন্ট বরাদ্দ হবে।' সুকান্ত মজুমদার বলেন, 'গত বিধানসভা ভোটের আগে তড়িঘড়ি বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘোষণা করে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তার কোনও নিজস্ব ভবন নেই, কর্মী নেই, অধ্যাপক নেই। অস্থায়ী কর্মীরা বেতন পাচ্ছেন না। সীমানা প্রাচীরও নেই। ভাড়া বাড়িতে ক্লাস চলে। এ কেমন বিশ্ববিদ্যালয়! আমরা প্রশাসনে নেই। তাই এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বঞ্চিত পড়ুয়াদের পাশে সরাসরি দাঁড়ানোর মতো অবস্থা আমাদের নেই। কিন্তু এই বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্রুত উপাচার্য নিয়োগের জন্য আমরা রাজ্যপালের দ্বারস্থ হব।
ক্ষোভে ফুঁসছেন জেলাবাসী
রাজ্যের একমাত্র উপাচার্যহীন বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে এবার ক্ষোভে ফুঁসতে শুরু করেছে দক্ষিণ দিনাজপুর। এই জেলার বঞ্চনার ফিরিস্তিতে এবার বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম জুড়ে যাওয়াকে ভালোভাবে নিচ্ছে না জেলাবাসী। রাজ্যপাল তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য এখনও এখানে কেন উপাচার্য নিয়োগ করছেন না, রাজ্য উচ্চশিক্ষা (Education) দফতরই বা কেন এই বিশ্ববিদ্যালয় সচল রাখার চেষ্টা চালাচ্ছে না, এসব নিয়েই বাড়ছে ক্ষোভ। এনিয়ে এদিন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব থেকে শুরু করে শিক্ষাবিদ সহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের তরফে ধারাবাহিক আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
কী বললেন ছাত্র, শিক্ষক, গবেষকরা?
বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্র বলেন, উপাচার্য না থাকায় নানা ধরনের সমস্যা হচ্ছে। এখনও স্থায়ী বিল্ডিং নেই। আমাদের নতুন কোনও অধ্যাপকও দেওয়া হচ্ছে না। এনিয়ে আমরা খুব সমস্যায় পড়েছি। আমরা চাই, দ্রুত এই সমস্যাগুলি থেকে আমাদের রেহাই দেওয়া হোক।' বিশ্ববিদ্যালয়ের (Education) দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসা বিশিষ্ট শিক্ষক কৃষ্ণপদ মণ্ডল বলেন, দীর্ঘ আন্দোলনের পর আমরা জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় পেয়েছি। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের পথ চলা দু'বছর পেরিয়ে গেলেও কোনও উন্নতি হল না। এখনও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবনের কাজ হল না। এখন আবার উপাচার্যও নেই। আমরা ফের এনিয়ে বৃহত্তর আন্দোলনে নামবো। ইতিহাস গবেষক সমিত ঘোষ বলছেন, 'প্রান্তিক অঞ্চলের ছেলেমেয়েদের শিক্ষার অধিকারের জন্যই এই বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠেছিল। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকাঠামোর উন্নতি না করে উল্টে দুর্বল করা হচ্ছে। এটা যথেষ্ট চিন্তার। দ্রুত উপাচার্য নিয়োগ করা ছাড়াও নিজস্ব ভবন নির্মাণের কাজে হাত দেওয়া আশু প্রয়োজন।'
শিক্ষামন্ত্রীকে অভিযোগ ছাত্র পরিষদের
এনিয়ে ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি সৌরভ প্রসাদের বক্তব্য, 'রাজ্য সরকারের উদাসীন মনোভাবে দক্ষিণ দিনাজপুর বিশ্ববিদ্যালয় (Education) আজ বন্ধের মুখে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫০ জন ছাত্রছাত্রীর ভবিষ্যৎ কী? এই উদাসীন মনোভাবের জন্য জেলার শিক্ষাব্যবস্থা বিশ বাঁও জলে। বিভেদকামী শক্তিগুলি যখন উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের মধ্যে বিভাজন করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, তখন উত্তরবঙ্গের এক প্রান্তিক জেলার সঙ্গে এমন বঞ্চনা তাদেরই প্রশ্রয় দেওয়ার শামিল। এই সমস্ত বিষয় নিয়েই শিক্ষামন্ত্রীকে মেল করেছি। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ সহ অন্যান্য সমস্যাগুলি মেটানোর আর্জি জানিয়েছি।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours