West Bengal Electoral Fraud: ২৫ হাজার কার্ডের নম্বর এক! রাজ্যে বিপুল ডুপ্লিকেট ভোটার কার্ড আবিষ্কার কমিশনের

parliament_(6)

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বিরোধীদের অভিযোগ সত্যি প্রমাণিত হল। রাজ্যে ২৫ হাজার ভুয়ো ভোটার কার্ডের সন্ধান পেল নির্বাচন কমিশন (West Bengal Electoral Fraud)। সম্প্রতি রাজ্যের ২৯৪টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে মাত্র ১১টি কেন্দ্র থেকে ২৫ হাজারেরও বেশি ভোটার কার্ডে একই আইডেন্টিফিকেশন নম্বর (Duplicate voter IDs in Bengal) থাকার ঘটনা আবিষ্কার করেছে কমিশন (Election Commission)। গত ১১ নভেম্বর প্রকাশিত হয়েছে প্রাথমিক ভোটার তালিকা। এরপরই এই ঘটনা চোখে পড়ে। দেখা যায়, বহু কার্ডে রয়েছে অভিন্ন পরিচয় নম্বর। বিরোধীরা বরাবরই রাজ্যে ভুয়ো ভোটারের উপস্থিতি নিয়ে কথা বলেছেন। ভুয়ো ভোটার কার্ড মেলায় এবার সত্যিই রাজ্যবাসীর মনে প্রশ্ন, তাহলে কি এভাবেই জেতেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)? মাত্র ১১টি কেন্দ্র থেকেই যদি ২৫ হাজার ডুপ্লিকেট ভোটার কার্ড বের হয়, তাহলে ২৯৪ আসনের নিরিখে সংখ্যাটা কোথায় গিয়ে পৌঁছবে, সেটাই ভাবাচ্ছে কমিশনকে।

কোথায় কোথায় মিলল ভুয়ো কার্ড

রাজ্যে যেসব আসনে এই অনিয়ম ধরা পড়েছে, তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক অভিন্ন ভোটার আইডি কার্ড (West Bengal Electoral Fraud) পাওয়া গিয়েছে বাগদা দক্ষিণ (উত্তর ২৪ পরগনা), যা বাংলাদেশের সীমান্তে এবং মাটিগাড়া-নকশালবাড়ি (দার্জিলিং), যা নেপাল সীমান্তের কাছাকাছি। এছাড়া, বাগদা উত্তর, মধ্যমগ্রাম, রাজারহাট-গোপালপুর, ক্যানিং পূর্ব, বারুইপুর পূর্ব ও পশ্চিম, কুরসঙ, শিলিগুড়ি, এবং ফালকাটা এসব এলাকায় ভুয়ো ভোটার আইডি কার্ডের সন্ধান মিলেছে। দেখা যাচ্ছে যে যে অঞ্চলে ভুয়ো ভোটারের রমরমা তা প্রায় সবই সীমান্ত ঘেঁষা। বাংলাদেশ থেকে বহু মানুষ ভোটের আগে-পড়ে এদেশে অনুপ্রবেশ ঘটায় বলেও মনে করছেন অনেকে। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) আগেই কমিশনের কাছে বলেছিলেন রাজ্য প্রশাসন ১৬ লাখ ভুয়ো বা দ্বৈত ভোটারকে সঙ্গী করেছে। এই ঘটনা প্রমাণ করে দিল পশ্চিমবঙ্গের ভোটার তালিকায় ভুয়ো ভোটার রয়েছে।

কীভাবে ঘটেছে এই অনিয়ম

ইসি কর্মকর্তাদের মতে, মূল চিন্তার বিষয় হল, যেসব ভোটার কার্ডে (West Bengal’s Electoral Fraud) অভিন্ন আইডি নম্বর রয়েছে, তা ভুয়ো। কারণ ভোটার কার্ড নম্বর ইউনিক এবং স্বয়ংক্রিয়ভাবে তৈরি হওয়ার কথা। নির্বাচন কমিশনের (Election Commission) এক আধিকারিক বলেন, “একই নম্বরের দুটি বা তার বেশি কার্ড হওয়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত কম। এটি একটি গুরুতর অস্বাভাবিকতা, যার জন্য বিস্তারিত তদন্ত প্রয়োজন।” কমিশন সূত্রে খবর, নির্বাচন কমিশন ভুয়ো কার্ড শনাক্ত করতে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার করছে। নামের সামান্য বানান পরিবর্তন বা প্রায় মিল থাকা ছবিগুলি শনাক্ত করার মাধ্যমে ডুপ্লিকেট কার্ড শনাক্ত করা হচ্ছে। তবে সবচেয়ে বড় উদ্বেগ হল একাধিক কার্ডে ক্লোন আইডেন্টিফিকেশন নম্বর পাওয়া।

ঘটনার তদন্ত

কমিশন ১১ নভেম্বর প্রকাশিত খসড়া ভোটার তালিকায় ৭.৪ কোটি ভোটারের (West Bengal’s Electoral Fraud) নাম অন্তর্ভুক্ত করেছে। এর মধ্যে ১৬ লক্ষ নাম সংশোধন বা বাতিল করা হয়েছে। একই সঙ্গে, প্রাক-সংশোধনী পর্যায়ে ৬.২ লক্ষ নতুন নাম যোগ করা হয়েছে এবং ৪.৫ লক্ষ নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। এখানেই বহু গরমিল চোখে পড়েছে। একই নম্বর থাকা কার্ডগুলি ফের যাচাই করে দেখা হচ্ছে। এই ঘটনা যান্ত্রিক ত্রুটি না এর পিছনে রয়েছে বড় চক্রান্ত তা জানারও চেষ্টা চলছে। ভোটার তালিকায় দুর্নীতি বা বিদেশি নাগরিকদের ভারতীয় নাগরিক হিসেবে চিহ্নিত করার উদ্দেশ্যে এই ঘটনা ঘটেছে কি না তা জনতে তদন্ত শুরু করেছে কমিশন। 

আরও পড়ুন: অরুণাচলে ‘অপারেশন পূর্বী প্রহার’! চিন সীমান্তে ভারতের তিন বাহিনীর মহড়া

কড়া পদক্ষেপের আর্জি বিরোধীদের

এই ঘটনার পর, বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী অভিযোগ করেছেন যে রাজ্যে প্রায় ১৬ লক্ষ ভুয়ো ভোটার রয়েছে। তিনি রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক আরিজ আফতাবের সঙ্গে দেখা করে এই বিষয়ে তদন্তের দাবি জানান। নির্বাচন কমিশন (Election Commission) প্রতিটি কেন্দ্রের প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছে এই ভুয়ো কার্ডগুলিকে শারীরিকভাবে যাচাই করে তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার জন্য। চূড়ান্ত ভোটার তালিকা ৫ জানুয়ারি, ২০২৫ তারিখে প্রকাশিত হবে। তবে কমিশনের মতে, এই ধরনের ভুয়ো কার্ড অন্যান্য কেন্দ্রেও পাওয়া যেতে পারে। ভুয়ো ভোটারদের চিহ্নিত করতে আরও কঠোর পদক্ষেপের আর্জি জানিয়েছে রাজ্যের বিরোধী দলগুলি। 

 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

Please follow and like us:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

LinkedIn
Share