Climate Change: জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব পড়বে অর্থনীতিতে, ক্ষতির পরিমাণ শুনলে চোখ কপালে উঠবে

Global Economy: জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব পড়বে অর্থনীতিতে, ক্ষতির পরিমাণ জানেন?...
dry_field_f
dry_field_f

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দ্রুত বদলে যাচ্ছে জলবায়ু (Climate Change)। যার ভয়ঙ্কর প্রভাব পড়তে চলেছে প্রকৃতির ওপর। যে এলাকা এক সময় হা-বৃষ্টি, হা-বৃষ্টি করে কাটাত, সেখানে এখন বৃষ্টি হচ্ছে ঝমঝমিয়ে। আর অঝোর ধারার বৃষ্টিতে বানভাসি হত যে অঞ্চল, সেখানে এখন প্রায়ই হচ্ছে খরা। জলবায়ুর পরিবর্তন যে হচ্ছে, তার আরও প্রমাণ বরফ গলছে সুমেরু-কুমেরুর। জলবায়ুর এই পরিবর্তনের জেরে ভয়াবহ ক্ষতির সম্মুখীন হতে চলেছে বিশ্ব অর্থনীতি। ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্ব অর্থনীতিতে বার্ষিক ক্ষতির পরিমাণ গিয়ে দাঁড়াবে ৩৮ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারে। সম্প্রতি ‘নেচার’ পত্রিকায় প্রকাশিত একটি সমীক্ষা থেকেই জানা গিয়েছে জলবায়ু পরিবর্তনের এই ভয়ঙ্কর প্রভাবের কথা। পত্রিকার রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে, এখন থেকেই যদি কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমনে ব্যাপকভাবে রাশ টানা না হয়, তাহলে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বিশ্ব অর্থনীতি।

কী বলছেন বিজ্ঞানীরা? (Climate Change)

গত চার দশক ধরে বিশ্বব্যাপী ১ হাজার ৬০০টিরও বেশি অঞ্চল থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে রিপোর্টটি (Climate Change)। এটিতে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ওপর পরিবর্তনশীল জলবায়ু পরিস্থিতির ভবিষ্যতের প্রভাবগুলি বিশ্লেষণ করা হয়েছে। পটসডাম ইনস্টিটিউট ফর ক্লাইমেট ইমপ্যাক্ট রিসার্চের প্রধান লেখক তথা বিজ্ঞানী ম্যাক্সিমিলিয়ান কোটজ বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেছেন, “অধিকাংশ অঞ্চলের জন্য গতিশীল আয় হ্রাস অনুমান করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপ। এরাই সব চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দক্ষিণ এশিয়া ও আফ্রিকার কৃষিতে জলবায়ু পরিবর্তনের সব চেয়ে গুরুতর প্রভাব পড়েছে। তার ধাক্কা লেগেছে ফলন, উৎপাদনশীলতা, শ্রম এবং পরিকাঠামোর ওপর।” তিনি বলেন, “আমাদের সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে ২০৪৯ সালের মধ্যে অতীত নির্গমনের কারণে গড় আয় কমে যাবে ১৯ শতাংশ। গ্লোবাল জিডিপি হ্রাস পাবে ১৭ শতাংশ।”

কী বলছেন গবেষক দলের প্রধান?

গবেষক দলের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন লিওনি ওয়েঞ্জ। তাঁর সতর্কবার্তা, “আগামী পঁচিশ বছরের মধ্যে জার্মানি, ফ্রান্স এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো উন্নততম দেশগুলি-সহ প্রায় সমস্ত দেশেই ব্যাপক অর্থনৈতিক ক্ষতি আসন্ন। অতীতের নির্গমন ও তাদের প্রভাব প্রশমিত করার জন্য জরুরি অভিযোজন প্রচেষ্টার প্রয়োজন।” জানা গিয়েছে, যে বিপুল ক্ষতির ভবিষ্যদ্বাণী করা হচ্ছে, তা বর্তমানে যে পরিমাণ কার্বন নির্গমন হচ্ছে, তার চেয়ে প্রায় ছ’গুণ বেশি হবে। এই কার্বন নির্গমন কমাতে না পারলে সমূহ বিপদ। তবে কার্বন নির্গমন কমাতে পারলে গড় তাপমাত্রা রাখা যাবে দু’ডিগ্রি নীচে (Climate Change)।

কে দায়ী জানেন?

বিশ্ব অর্থনীতির যে ক্ষতির কথা বলা হচ্ছে, তার জন্য সিংহভাগ দায়ী গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি। এর পাশাপাশি রয়েছে ঝড় এবং বৃষ্টি। অদূর ভবিষ্যতে এই ক্ষতির পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে পারে ৫০ শতাংশ। কেবল তাই নয়, এক অঞ্চল থেকে অন্যত্র এই ক্ষতির পরিমাণ কমবেশি হতে পারে। গবেষকরা দেখেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের জেরে গোটা বিশ্ব কমবেশি ভুগলেও, সুফল কুড়োতে পারে মেরু অঞ্চলের কাছাকাছি থাকা এলাকাগুলির মানুষজন। তাপমাত্রার বিশেষ কিছু হেরফের না হওয়ারই ফসল ঘরে তুলবেন এই অঞ্চলের লোকজন।

সব চেয়ে বেশি ক্ষতি ট্রপিক্যাল এরিয়ায়

মেরু অঞ্চলের লোকজন যখন জলবায়ু পরিবর্তনের সুফল ঘরে তুলবেন, তখন ভয়ঙ্কর ক্ষতির সম্মুখীন হবেন নিরক্ষরেখার কাছাকাছি অঞ্চলের দেশগুলির বাসিন্দারা। কারণ এই অঞ্চলগুলিতে বৈশ্বিক নির্গমন কম। বর্তমানে রোজগারও কম। পটসডাম ইনস্টিটিউটের রিসার্চ ডিপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সিটি সায়েন্সের প্রধান তথা সহকারি লেখক অ্যান্ডারস লেভারমান বলেন, “জলবায়ু বৈষম্যের যে প্রভাব পড়ছে তামাম বিশ্বে, তার ওপর আলোকপাত করা হয়েছে আমাদের গবেষণায়। আমরা প্রায় সব জায়গায়ই ক্ষতি দেখতে পেয়েছি। তবে ট্রপিক্যাল এরিয়ার দেশগুলি সব চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কারণ তারা এমনিতেই উষ্ণমণ্ডলের অধীন। তাই তাপমাত্রার বৃদ্ধি তাদের পক্ষে হবে ভয়ঙ্কর ক্ষতিকর।”

আরও পড়ুুন: "বাংলায় অনুপ্রবেশকারীরা তৃণমূলের ভোট ব্যাঙ্ক", বিস্ফোরক অমিত শাহ

জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য সব চেয়ে কম দায়ী যেসব দেশ, তাদের যে ইনকাম লসের কথা বলা হয়েছে, তা উচ্চ আয়ের দেশগুলির চেয়ে ৬০ শতাংশ বেশি, ৪০ শতাংশ বেশি উচ্চতর নির্গমন করে এমন দেশগুলির চেয়ে। তারা হচ্ছে সেই দেশ, যাদের সম্পদের ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবও পড়ে কম। ওয়েঞ্জ বলেন, “এই অদূর-মেয়াদি ক্ষতির কারণ হল আমাদের অতীতের নির্গমন। আমাদের প্রয়োজন আরও অনেক বেশি অ্যাডাপটেশন প্রচেষ্টা, যদি আমরা এর ন্যূনতমও এড়িয়ে চলতে চাই। আমাদের নির্গমন উল্লেখযোগ্যভাবে কমাতে হবে এবং তা কমাতে হবে এখনই। যদি তা না হয়, তাহলে এই শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধে অর্থনৈতিক ক্ষতি হবে আরও অনেক বেশি। ২১০০ সালের মধ্যে বিশ্বে এর গড় পরিমাণ হবে ৬০ শতাংশ।” লিভারম্যান বলেন, “এই বিশাল ক্ষতির হাত থেকে বাঁচতে হলে আমাদের নির্ভর করতে হবে রিনিউয়েবল এনার্জির ওপর। এতে একদিকে যেমন আমাদের নিরাপত্তা বাড়বে, তেমনি সাশ্রয় হবে অর্থ। তা না হলে ভয়ঙ্কর বিপর্যয়ের সম্মুখীন হতে হবে আমাদের। এই গ্রহের তাপমাত্রার পারদ এক জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকবে তখনই, যখন আমরা তেল, গ্যাস এবং কয়লা পোড়ানো বন্ধ করব (Climate Change)।”

 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

 

 

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles